ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একাধিক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনীতিতে নিষিদ্ধকরণের দাবিতে ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে সমাবেশ করেন। এ সময় তারা আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীক দ্রুত নিষিদ্ধের দাবি জানান।

নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে কোন রাজনীতি হবে না উল্লেখ করে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি হবে না। নামে-বেনামে আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সেটা যেখান থেকেই হোক। এর বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। বাংলাদেশকে আমরা আরও একটি গণহত্যার দিকে ঠেলে দিতে পারি না।’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলে, ‘আমরা যখন গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি, তখন একটা ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাও মুখ খোলেননি। তাদের রিফাইন্ড করে আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। ৫ আগস্টের পর ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেটি হয়নি। আমরা আগস্টে যেভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হয়, ততদিন আমরা মাঠে থাকব।’

এদিকে একই সময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা ও সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের ওপর গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ইনকিলাব মঞ্চ। জুমার নামাজের পর তারাও কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিল শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মিছিলের সমাপ্তি টানে।

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, ‘এবার লীগকে সুযোগ দেওয়া হলে তারা অল্প কয়টা আসন নিয়ে বিরোধী দলে থেকে যাবে। আর তারা বিরোধী দলে থেকে কূটকচাল চালবে। তাদের কারণে বিএনপি তিন বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’

এ ছাড়া সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কাজ ছিল জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনে গণভোট আয়োজন করা যেতে পারে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষ রায় দেবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে কোন রাজনীতি করতে পারবে না।’

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চের পক্ষে থেকে শনিবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্ম

তিনি বলেন, ‘শনিবার (২২ মার্চ) বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ইফতার ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে এ মঞ্চ। আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা যদি সত্যিকার অর্থে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চান তাহলে এ প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হোন।’

শুক্রবার মধ্যরাত ২টায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাখান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে মিছিল বের করে একদল শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে স্মৃতি চিরন্তন হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়।

আরিফ জাওয়াদ/সুমন/

কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম
কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার কুয়েটে অনশন স্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাসুদের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অনড় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার কুয়েটে অনশন স্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। 

কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টার আগমনে নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। যার কারণে  ক্যাম্পাসের ফটকগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

এদিকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত আন্দোলনরত ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া আমরণ অনশন কর্মসূচি ইতিমধ্যে ৪৪ ঘণ্টা পার হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে ও দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকায় অনশনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সবাই শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছেন। অনেকের শরীরে রক্তচাপ কমে গেছে। কুয়েটের আবাসিক হল ও বাইরের ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে সামনে জড়ো হচ্ছেন। 

উপদেষ্টা আন্দোলন ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা উষ্ম আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছি। তারা সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ভিসিকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা একটা আইন রয়েছে সেই আইনকে মাথায় রেখেই এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ক্যাম্পাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি প্রতিনিধি দল আজ (বুধবার) সকালে কুয়েটে এসেছেন। তারা শিক্ষক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন।

এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন।

মাকসুদ/তাওফিক/ 

ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
জবিতে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ছবি: খবরের কাগজ

‘ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে’- বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ শাখার আয়োজনে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রত্যাশা অনেক, তাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ১০ মাস অতিবাহিত হবার পরও ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়া একটা প্রোপাগান্ডার টুল হবে সরকারকে নারভাস করে দেওয়ার জন্য এবং আওয়ামী লীগ ব্যবহার করবে এই সরকারকে বিব্রত করার জন্য। বিচারহীনতার সংস্কৃতির পাশাপাশি বিচারের কাঠামো তৈরির আলাপ তুলতে হবে।

ফুয়াদ আরও বলেন, ‘বিচারহীনতা নিয়ে কথা বললেই রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের বিষয়টিও সামনে আসে। এই পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলমান এবং এটি অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা কেবল ২০২৪ সালের ঘটনার বিচার চাই না, আগের বহু বছরের অবিচারও নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। দশকের পর দশকের চলা মামলার বিচারও চাইতে হবে, কৃষক মজুরের জমির মামালার বিচারও চাইতে হবে। আমার কৃষক শ্রমিক দিনমজুর যখন রাষ্ট্রের কাছে তার প্রাপ্য বিচার বাপে তখনই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হবে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকার বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে সাধারণ মানুষের আস্থা ধ্বংস করেছে। এমনকি গ্রামের একজন দরিদ্র মানুষকেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার প্রার্থনা করতে হয়েছে, যা আদালতের মাধ্যমেই হওয়ার কথা ছিল। যারা ফ্যাসিবাদের সময়ে ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, তাদের অনেককেই দেশত্যাগ করতে হয়েছে।’

জাস্টিস ফর জুলাই জবি শাখার সদস্য সচিব মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় কুরআন থেকে তেলওয়াতের মাধ্যমে সভাটি শুরু হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ‘মুক্তিরও মন্দিরও সোপানতলে’ অনুপ্রেরণামূলক গান পরিবেশনের পর বক্তারা আলোচনা করেন। আলোচনা সভায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন হাসান মাহাদী এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ জবি শাখার সাবেক আহ্বায়ক সজিবুর রহমান।

মুজাহিদ বিল্লাহ/মাহফুজ

এক বছরে ঢাবিতে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম
এক বছরে ঢাবিতে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ
ঢাবিতে পড়তে আসা চীনা শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) এক বছরে চীনা শিক্ষার্থী বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর চীন থেকে ঢাবিতে পড়তে এসেছিলেন ৯ জন। এ বছর পড়তে এসেছেন ১৮ জন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬ জন। এসব শিক্ষার্থী আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধীনে বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করছেন।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। 

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনের শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যা দূর করার জন্য স্যার পিজে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলে ১০টি কক্ষের সমন্বয়ে একটি ব্লক তৈরি করা হয়েছে। চীন থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান করছেন। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসনসংকট নিরসনে চীন সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী নামে একটি আবাসিক হল নির্মাণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

শ্রেণিকক্ষে চীনা শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

এ ছাড়া আগামী আগস্ট মাসে চীনের শিক্ষার্থীরা দুই সেমিস্টারের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসার আগ্রহ দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রফেশনাল মাস্টার্স কোর্সে পড়ারও আগ্রহ দেখিয়েছেন তারা। এ লক্ষ্যে চীনের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করতে চায়। সে জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। খুব শিগগির বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষা-গবেষণা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময়ের ক্ষেত্রটি আরও সম্প্রসারিত হবে।

এদিকে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা বিনিময়ের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের একটি শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে শুধু ভাষাগত দক্ষতাই অর্জন করছেন না, বরং চীনের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গেও পরিচিত হচ্ছেন।

আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ

আমরণ অনশনে চবি চারুকলার ৯ শিক্ষার্থী

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
আমরণ অনশনে চবি চারুকলার ৯ শিক্ষার্থী
অনশনে চবির ৯ শিক্ষার্থী। ছবি: খবরের কাগজ

চারুকলা ইনস্টিটিউটকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন চারুকলার ৯ শিক্ষার্থী। 

অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলা ইন্সটিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নূর ইকবাল সানি, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান সোহেল। এছাড়াও রয়েছেন ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান ইয়াসিন, মালিহা চৌধুরী, ইসরাত জাহান, নুসরাত জাহান ইপা, তরিকুল ইসলাম মাহী এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুল ইসলাম মিনহাজ। 

জানা গেছে, চারুকলা ইনস্টিটিউটকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা ৩টা থেকে সেখানে আমরণ অনশন শুরু করছেন তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন করছেন তারা। দীর্ঘ সময় ধরে অনশন করায় নারী শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। 

অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার আশ্বাস দেওয়ার পরও চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়নি। বার বার শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন। তাই তারা অনশন কর্মসূচিতে বসেছেন।

চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নাফিজা তালুকদার বলেন, ২১ এপ্রিল বেলা ৩টা থেকে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আমাদের বন্ধুরা। এখনও কিছু খায়নি তারা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে প্রক্টর স্যার এবং প্রো-ভিসি কামাল উদ্দিন স্যার এসেছিলেন। এরপরও অনশন ভাঙেন নি শিক্ষার্থীরা।

এর আগে সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে চবি প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত না করার প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১ এপ্রিলের মধ্যে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার কথা দিয়েছিল। কিন্তু তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। প্রশাসন কথা রাখেনি। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। তাই বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনে নামতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, চারুকলা ইন্সস্টিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত একটি ইনস্টিটিউট। এটি চট্টগ্রাম নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে অবস্থিত। ৪টি বিভাগ এবং প্রতিবর্ষে ৭০ টি আসনের সমন্বয়ে গঠিত এ ইন্সস্টিটিউট। এটি দেশের প্রথম চারুকলা বিভাগ ও একমাত্র ইনস্টিটিউট যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থিত। ২০১০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

২০২৩ সালের ২ নভেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকার কারণে চারুকলা ইনস্টিটিউট সংস্কারের উদ্দেশ্যে ২২ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ওই বছরের ৫ নভেম্বর থেকে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি ওঠে। পরবর্তী সময়ে ২০২৪ সালের ২১ জানুয়ারি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এক বৈঠকে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে ক্যাম্পাসে ফেরার একদফা দাবিটি অনেক লম্বা এবং ব্যয়বহুল একটি প্রক্রিয়া সেজন্য সময় দরকার। বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট সংস্কার করে পরবর্তী সময়ে একদফা দাবির বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে বলে জানান তিনি।

এর পরবর্তীতেও প্রশাসনের কাছ থেকে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের আশ্বাস পেলেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের। এরই জেরে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে নগর থেকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ফের একদফা দাবিতে টানা তিন দিন লাগাতার আন্দোলন করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম অচল করে দেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর নগরীর চারুকলা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন করে গণ-অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে জেরে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে আশ্বাস পেয়ে জন্য আন্দোলন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।

তারেক মাহমুদ/মাহফুজ

 

 

৩ দফা দাবিতে জবিতে লিফলেট বিতরণ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম
৩ দফা দাবিতে জবিতে লিফলেট বিতরণ
ছবি: খবরের কাগজ

তিন দফা দাবিতে আগামী সাত দিনব্যাপী কর্মসূচির প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের নিজ অধিকার আদায়ে সচেতন হওয়ার কথা বলেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের বিতরণ করা লিফলেটটিতে লেখা দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২০ বছর পরেও ছাত্রদের জন্য কোনো আবাসন সুবিধা নিশ্চিত হয়নি, যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বৈষম্যমূলক। তাই এই বিষয়ে তাদের ৩টি দাবি হলো

১) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বৃদ্ধি এবং ৭০% শিক্ষার্থীর আবাসন বৃত্তি বাজেটে অর্ন্তভূক্ত করতে হবে। ২) ২য় ক্যাম্পাসের কাজ, পুরান ঢাকায় ড. হাবিবুর রহমান হল ও বানী ভবনের নির্মাণ কাজ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শুরু করতে হবে। ৩) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২য় ক্যাম্পাস ও হল নির্মাণের কাজের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন পর পর মুক্তমঞ্চে ব্রিফ করতে হবে।
 
লিফলেটে আরও লেখ হয়, ‘যেহেতু আমাদের ছাত্র সংসদ বা জকসু নেই, তাছাড়াও আমাদের নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি নেই, তাই মুক্তমঞ্চে সকল শিক্ষার্থীদের সামনে সকল কাজের আপডেট দিতে হবে।’

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি শাখার সভাপতি একে এম রাকিব খবরের কাগজকে বলেন, ‘তিন দফা দাবি আদায়ে আমরা আমাদের আন্দোলন চলমান রাখব। আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা লিফলেট বিতরণ করেছি। আগামীকাল আমরা পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল এবং ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করব, পাশাপাশি দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রতীকী বির্তক’ আয়োজন করব।

উল্লেখ্য, সোমবার (২১ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচিগুলো হলো:

১) ‎২২ এপ্রিল, কাথা বালিশ কর্মসূচি এবং লিফলেট বিতরণ চলমান থাকবে। 
‎২) ‎২৩ এপ্রিল, বিক্ষোভ ও ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
‎৩) ‎২৪ এপ্রিল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে মুক্তমঞ্চে আলোচনা। 
৪) ‎২৫ ও ২৬ এপ্রিল খোলাচিঠি ও অনলাইনে প্রচারণা।
৫) ২৭ এপ্রিল আলোচনা সভা
৬) ২৮ তারিখ প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।

মুজাহিদ বিল্লাহ/মাহফুজ