
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) পরীক্ষা দিতে এসে আটক হওয়া এক ছাত্রলীগ নেত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারের পাঠানো হয়।
আটক ছাত্রলীগ নেত্রী টিকলী শরীফ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সামনের সারির একজন নেত্রী ছিলেন। গত বছর জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময়ে টিকলী ক্যাম্প ছাড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে সম্প্রতি তিনি বরিশালে আসেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে ভোলা রোডে একটি রেস্তোরাঁর ভেতরে টিকলী শরীফসহ তিনজনকে অবরুদ্ধ করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হলে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর তাদের তিনজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। টিকলীর সঙ্গে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী টিকলী শরীফ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কয়েকজন ফোন করে জানান টিকলী শরীফসহ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী ক্যাম্পাসের সামনে একটি রেস্তোরাঁয় বসে গোপন মিটিং করছেন। সেখানে গিয়ে গোপন সভা করা অবস্থায় তাকেসহ তিনজনকে আটক করা হয়। এ ছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশকে অস্থিশীল করার পাঁয়তারা করছেন।
মঙ্গলবার রাতে পুলিশ হেফাজতে থাকা ছাত্রলীগ নেত্রী টিকলী শরীফ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আমার বুধবার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। আমি লাইব্রেরিতে পড়ছিলাম। সন্ধ্যায় বাইরে বের হলে আমার জুনিয়রদের সঙ্গে দেখা হয়, তাদের নিয়ে চা খেতে গেলে সেখান থেকে আমাদের আটক করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী বিষয়টি আমাকে জানানোর পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের হস্তান্তর করি। পরবর্তী ব্যবস্থা পুলিশ আইন অনুযায়ী গ্রহণ করবে।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতাকর্মীরা টিকলী শরীফসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। আটক তিনজনের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। টিকলীর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় থাকা মামলাটিতে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলার আসামি হওয়ায় তাকে সেখানে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।