ঢাকা ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
English

ঢাবি মার্কেটিং অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের নতুন কার্য নির্বাহী কমিটি

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
ঢাবি মার্কেটিং অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের নতুন কার্য নির্বাহী কমিটি
ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) মার্কেটিং অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের (এমএএ-ডিইউ) ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের জন্য নতুন কার্য নির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে। 

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত নবম বার্ষিক সাধারণ সভায় এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। 

নবগঠিত কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন খন্দকার মো. রাফিক হাসান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এর দায়িত্ব পেয়েছেন এম এ হানিফ।

নতুন নির্বাহী কমিটিতে মোট ৫১ জন সদস্য রয়েছেন। যারা অ্যালামনাইদের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তা এবং মার্কেটিং পেশার অগ্রগতিতে অবদান রাখার লক্ষ্যে কাজ করবেন।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৬ সালে মার্কেটিং অ্যালামনাই এসোসিয়েশন যাত্রা শুরু করে। এসোসিয়েশনটি বিভিন্ন প্রজন্মের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।

/আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ

 

জাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি রাবেয়া, সম্পাদক ইয়াসির

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৮:৫৬ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৮:৫৮ পিএম
জাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি রাবেয়া, সম্পাদক ইয়াসির
জাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির নবনির্বাচিত সভাপতি রাবেয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত। ছবি: খবরের কাগজ

জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় বিতর্ক সংগঠন জাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির কার্যনির্বাহী পর্ষদ নির্বাচন ২০২৫-২৬ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত। 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ক্লাবটির সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে রাবেয়া খাতুন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। অন্যদিকে ৫৪ ভোটের মধ্য ৩৮ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে ইয়াসির আরাফাত, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মুসলিম ইবনে রবি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং কোষাধ্যক্ষ পদে শায়রা ফিদ্দা বিনতে শাহেব ২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ৬১ ভোটারের মধ্যে ৫৪ জন তথা ৮৮.৫২ শতাংশ সদস্য ভোট দেন।

নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন এবং তারা আগামী এক বছর দায়িত্ব পালন করবেন।

নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহিদ আলম এবং সহকারী নির্বাচন কমিশনার ছিলেন গনিত বিভাগের প্রভাষক সজিব হায়াত ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আতিকুর রহমান।  

জাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির নবনির্বাচিত সভাপতি রাবেয়া খাতুন বলেন ‘যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে বিতর্ক চর্চা অপরিহার্য। আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের বিতার্কিক গড়ে তোলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করব।’

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত বলেন ‘বিতর্ককে তরুণদের চিন্তাশক্তি ও নেতৃত্ব বিকাশের হাতিয়ার করতে নিয়মিত কর্মশালা, প্রতিযোগিতা ও ডিজিটাল আর্কাইভ চালু করব। এতে সবার আন্তরিক সহযোগিতা কাম্য৷’

ইয়াসির/সুমন/

ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে আলটিমেটাম

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে আলটিমেটাম
ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশনে ঢাবি শিক্ষার্থী। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (ডাকসু) কমিশন গঠন করে তফসিল ঘোষণার দাবিতে আলটিমেটাম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল শিক্ষার্থী। আগামী দু-একদিনের মধ্যে কমিশন গঠন এবং ঈদের আগেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করা হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

এ দিকে কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে বুধবার (২১ মে) থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে বসেছেন ঢাবি শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা বিন ইয়ামিন মোল্লা।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বিন ইয়ামিন মোল্লা জানান যতক্ষণ পর্যন্ত তার তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন। 

ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিতে যতক্ষণ ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হবে ততক্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ নয়। আমার যে কথা, এটি কিন্তু আমার কথা নয়, এটি ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থীদের কথা। সবাই অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন চায়। ইতোমধ্যে আমার অনশনের ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে, মাথা ঘুরাচ্ছে-চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। আমার অবস্থা যদি খারাপের দিকে যায়, এর দায় থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।’

কেন ডাকসু নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তার স্পষ্ট কারণ জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আমাকে অনশন ভেঙে আলোচনায় বসতে বলা হয় কিন্তু আমি রাজি হইনি, কেননা আমি চাই এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন কারণে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল, সময়সীমা এবং নির্বাচন কমিশন গঠন করছে না, সেটি স্পষ্ট করুক। যদি আমাদের মনে হয় সেটা যৌক্তিক, তাহলে আমরা তা মেনে নিব। আমরা দেখছি, ভিসি-প্রক্টরদের পদত্যাগের দাবি উঠেছে, এমন নানা ধরনের অস্থিতিশীল বিষয় তোলা হচ্ছে। তাই অবিলম্বে সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার, পাশাপাশি ছাত্রসংসদ নির্বাচনের ডেডলাইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন গঠন এবং তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশার সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। এ সময় তারা আগামী দু-একদিনের মধ্যে কমিশন গঠন এবং ঈদের আগেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানান। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

আলোচনা শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘৯ মাস অতিবাহিত হলেও এই প্রশাসন ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। একটি গোষ্ঠী চায় এই ডাকসু নির্বাচন বন্ধ করতে। সর্বশেষ প্রশাসন একটি টাইমলাইন ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সে অনুযায়ী তারা তা করতে পারেনি। আগামী দু-একদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে, তফসিল ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের দিকে যেতে বাধ্য হব।’

ক্যাম্পাস নিরাপদ রাখতে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘সাম্য হত্যাকে কেন্দ্র করে যে নিরাপত্তাহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেটাকে ডাকসুর মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে।ক্যাম্পাসকে শিক্ষার্থী-বান্ধব এবং নিরাপদ করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’

উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়, ডাকসু নির্বাচনের সময়সীমা  অনুযায়ী মে মাসের শুরুর দিকে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। কিন্তু গত ১৩ মে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারের দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। এরপর তড়িৎগতিতে ইতোমধ্যে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতে বেশকিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপও নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরিফ জাওয়াদ/সুমন/

কুয়েটের অন্তর্বর্তী ভিসির প্রতি অনাস্থা শিক্ষক সমিতির

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১২:১৮ পিএম
কুয়েটের অন্তর্বর্তী ভিসির প্রতি অনাস্থা শিক্ষক সমিতির
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবিকে অবজ্ঞা এবং বিধিবিধান সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল না থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তী উপাচার্য ড. মো. হযরত আলীর প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে তাকে দ্রুত পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়েছে। 

বুধবার (২১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। এর আগে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্নের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নেওয়ায় কঠোর অবস্থান নেয় শিক্ষক সমিতি।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে একটা গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে গতকাল তৃতীয় দিনের মতো ভিসি অনুপস্থিত রয়েছেন। দাপ্তরিক কাজের কথা বলে গত সোমবার তিনি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। তার অনুপস্থিতিতে মৌখিকভাবে যাকে ভিসির দায়িত্ব দেওয়া হয়, তিনি দায়িত্ব পালনে অক্ষমতার কথা জানিয়েছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি মনে করে, ভিসি হিসেবে ড. মো. হযরত আলী দায়িত্ব পালনে অক্ষম। ভিসি একক সিদ্ধান্তে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনার বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন না করে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করছেন। শৃঙ্খলা কমিটি অভিযুক্তদের শোকজ করেছে। এখন নিয়মানুযায়ী বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ করা হয়েছে। এসব কারণে শিক্ষক সমিতি তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন এবং অতিদ্রুত তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছে।’ 

তিনি জানান, আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করবে শিক্ষক সমিতি। এই মানববন্ধন থেকে কুয়েটে পূর্ণাঙ্গ ভিসি নিয়োগ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানাবেন শিক্ষক নেতারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১ মে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ড. মো. হযরত আলীকে কুয়েটে অন্তর্বর্তী ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়। ৩ মে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেন। এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সাবেক ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নোবিপ্রবির পদবঞ্চিত ৬৯ শিক্ষকের পদোন্নতি

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:২০ এএম
নোবিপ্রবির পদবঞ্চিত ৬৯ শিক্ষকের পদোন্নতি
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অভিন্ন নীতিমালার জটিলতায় পদবঞ্চিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ৬৯ জন শিক্ষক প্রভাষক পদ থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বুধবার (২১ মে) পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের হাতে পদোন্নতির চিঠি তুলে দেন নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল। 

বিভিন্ন বিভাগ থেকে পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষকদের সংখ্যা যথাক্রমে এফটিএনএস ৭ জন, ইইই ৩ জন, ফিমস ২ জন, ইংরেজি ৪ জন, ইএসডিএম ৪ জন, আইসিই ৩ জন, বিজিই ৪ জন, অর্থনীতি ৫ জন, ফার্মেসি ৫ জন, অ্যাপ্লাইড ম্যাথ ৫ জন, কৃষি ২ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৩ জন, আইআইটি ৫ জন, সমুদ্রবিজ্ঞান ৪ জন, বাংলা ১ জন, টিএইচএম ৩ জন, আইন ১ জন, সমাজবিজ্ঞান ১ জন, মাইক্রোবায়োলজি ৪ জন, পরিসংখ্যান ২ জন এবং রসায়ন বিভাগে ১ জন৷

জানা যায়, ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত ইউজিসির ১৪৬তম সভায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতিবিষয়ক এক অভিন্ন নীতিমালা গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে ইউজিসির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে প্রণীত এই অভিন্ন নীতিমালাটি নীতিগতভাবে গৃহীত হয়।

এই অভিন্ন নীতিমালায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হতে হলে হলে প্রার্থীর শিক্ষকতা যোগ্যতার পাশাপাশি তিন বছরের সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যেখানে এর আগে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপককে পদোন্নতি পেতেন। 

নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্যমতে, এই জটিলতা মূলত তৈরি হয়েছে নোবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদারুল আলম থাকাকালীন সময়ে। তিনি শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষিতে এই নীতিমালা গ্রহণ না করার পক্ষে অবস্থান নিলেও পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন। সিদ্ধান্তের তারিখের অসামঞ্জস্যতার কারণেই মূলত পদবঞ্চিত হতে হয় শিক্ষকদের। 

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রার মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নীতিমালার জটিলতায় ৮৪ জন শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নীতিমালায় প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য ২ বছর নির্ধারিত থাকলেও অভিন্ন নীতিমালায় তা ছিল ৩ বছর। এ কারণে পদোন্নতির প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। অবশেষে রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তে ৬৯ জনের পদোন্নতি চূড়ান্ত হয়। তবে এখনও কয়েকটি বিভাগের বোর্ড অনুমোদন না আসায় কিছু শিক্ষকের পদোন্নতির প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। 

তবে দীর্ঘদিন পর পদোন্নতি পেলেও উচ্ছ্বসিত পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষকরা। বর্তমান প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে আমরা আমাদের প্রাপ্য পদোন্নতি পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সদিচ্ছা ও কার্যকর উদ্যোগে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আমরা রিজেন্ট বোর্ডের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তারা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে আমাদের প্রাপ্য নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। 

ইএসডিএম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সজিব আহমেদ বলেন, প্রায় দেড় বছর পর আমরা পদোন্নতি পেয়েছি। এই দীর্ঘ সময় পর নানা জটিলতায় আমাদের পদোন্নতি আটকে ছিল। বর্তমান প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে সমাধান করে দিয়েছে। আমাদের ক্ষতিপূরণও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে নোবিপ্রবি প্রশাসন।  

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের শুভ কামনা জানান এবং ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতা কামনা করেন। তিনি বলেন, অভিন্ন নীতিমালার যে জটিলতা ছিল তা সমাধান করা হয়েছে। নোবিপ্রবির নিয়োগ এবং পদোন্নতির বিষয়ে অভিন্ন নীতিমালা অনুসরণ করার বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই এ বিষয়ে আর কোনো জটিলতার অবকাশ নেই। পাশাপাশি পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা অধিকার হিসেবে তাদের প্রাপ্যতা পাবে।

কাউসার/সিফাত/

নোবিপ্রবি: উন্নয়নের ‘গলার কাঁটা’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৯:২৬ এএম
নোবিপ্রবি: উন্নয়নের ‘গলার কাঁটা’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান
নোবিপ্রবির শান্তি নিকেতন থেকে অ্যাকাডেমিক ভবন-১ পর্যন্ত সড়কটির সংস্কারকাজ ঝুলে আছে/খবরের কাগজ

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কোটি কোটি টাকার কাজ ঝুলে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনের তাগিদ ও একাধিক চিঠিতেও নির্বিকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে কাজের গতি ফেরাতে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে নোবিপ্রবি প্রশাসন। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এদিকে সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষার্থীরা। 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল দায়িত্ব নেন ২০২৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। এর আগে পতিত সরকারের প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার আহ্বান ও অনুমোদন দেয়।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের প্রধান সড়ক ও ড্রেন নির্মাণের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘কেএস ব্রিকস’। ২০২৪ সালের মার্চে শুরু হওয়া প্রায় ২ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের ১৮ মে। তবে নির্ধারিত সময় শেষ হলেও এখনো ড্রেনের কাজ শুরুই করেনি প্রতিষ্ঠানটি। বারবার তাগিদের পরও কাজের গতি বাড়েনি।

প্রশাসনের দাবি, তাদের দুবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বারবার কাজ করার জন্য ফোনেও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কার্যত ‘কানে তুলছে না কথা’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিবহন শেড নির্মাণের কাজ পেয়েছে ‘মেসার্স মাজাহারুল ইসলাম’। প্রায় ১ কোটি ৪২ লাখ টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ৩০ মার্চ। প্রতিষ্ঠানটি সময় বৃদ্ধির আবেদন করে, যা মঞ্জুরও করে প্রশাসন। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো বড় অংশের কাজ বাকি। কাজে অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাধুলার জন্য বাস্কেটবল ও ভলিবল কোর্ট নির্মাণের কাজ পেয়েছে চট্টগ্রামের ‘ইইএস এন্টারপ্রাইজ’। ৫৩ লাখ টাকার এই কাজের মেয়াদ শেষ হলেও পুরোপুরি কাজ শেষ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। 

এদিকে কাজের ধীরগতিতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। বর্ষা মৌসুমে ড্রেন ও রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন অনেকে। দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন প্রশাসনের সমালোচনাও করেছেন তারা।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আল জোবায়ের জিসান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার দুই দশক হতে চললেও নোবিপ্রবি এখনো অবকাঠামোগত সংকট কাটিয়ে উঠতে পারছে না। ক্লাসরুম-আবাসনসংকটের পাশাপাশি ড্রেনেজব্যবস্থারও বেহাল দশা। যেসব উন্নয়নকাজ শুরু হয়, সেগুলোও সময়মতো শেষ হয় না, যা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে। শান্তি নিকেতন থেকে অ্যাকাডেমিক ভবন-১ পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার এবং ড্রেন নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। হজরত বিবি খাদিজা হল থেকে শুরু করে সালাম হল হয়ে অ্যাকাডেমিক ভবন-১ পর্যন্ত সড়কটিও বর্ষায় পানিতে তলিয়ে যায়। তখন এ পথে চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে যে ক্রিকেট পিচ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল, সেটিও শেষ হয়নি এখনো। ভলিবল-বাস্কেটবল কোর্ট তৈরির কাজও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। গুণগতমান বজায় রেখে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কাজ সম্পন্ন করে, সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।’ 

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেএস ব্রিকসের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের বিল থেকে অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ টাকা আটকে রেখেছে। ১০ শতাংশ জামানতের বাইরেও অতিরিক্ত অর্থ আটকে রাখার ফলে কাজ করতে পারছি না। শুরুতে কাজের গতি ভালো থাকলেও অর্থ আটকে রাখায় তা কমে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১০০ টাকার কাজ করে ৪০ টাকা আটকে রাখলে কাজ করব কীভাবে? এটা তো কার্যত কাজ না করানোর জন্যই করা হচ্ছে। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শেষ করানোর ইচ্ছে থাকত, তাহলে তারা পুরো টাকা পরিশোধ করত। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আস্থাও নষ্ট হয়েছে। তারপরও আশ্বস্ত করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করব।’

এ বিষয়ে বুধবার (২১ মে) নোবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ ও তদারকি কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ‘তিনটি পৃথক প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। আমরা তাদের চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছি। রাস্তার কাজ ১৮ মে শেষ করার কথা থাকলেও তারা শেষ করতে পারেনি। আমরা বিশেষ বিবেচনায় তাদের আরও কয়েক দিন সময় দিয়েছি। অন্যদিকে পরিবহন শেডের কাজ ৩০ মের মধ্যে শেষ করতে হবে। না হলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্ল্যাকলিস্ট করা হবে। কাজগুলো অন্য উপায়ে সম্পন্ন করা হবে এবং ক্ষতিপূরণও আদায় করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলা মেনে নেওয়া হবে না। আমরা উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশে মিটিং করে বিষয়গুলো তাদের পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি। তাদের কাছ থেকে মুচলেকাও নেওয়া হয়েছে।’

জামানত আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত রমজানে কাজ তদারকিতে গিয়ে অনিয়ম ধরা পড়ে, রড পরিমাণে কম দেওয়া হয়েছিল। আমরা কাজটি পুনরায় করাই। কিছু অসন্তোষ থাকলেও রমজান ও ঈদ বিবেচনায় ২০ শতাংশ রেখে আংশিক পেমেন্ট দিয়েছি। কাজ শেষ হলে পুরো টাকা পরিশোধ করা হবে, টাকা আটকে রাখার প্রশ্নই আসে না।’