
বহিরাগতদের বিভিন্ন অনৈতিক কাণ্ডে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এসব অপরাধ বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ। এ কারণে প্রতিনিয়তই বাড়ছে এসব ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের রাস্তায় বা হলের আশপাশে প্রায়ই বহিরাগতরা মেয়েদের ইভ টিজিং করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় ছাত্রী হলের আশপাশে বহিরাগতদের খারাপ অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায়। এতে নিজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিগত কয়েক মাসে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টিলাগুলোতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে টিলার গাছপালাসহ জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জনসাধারণের জন্য টিলায় ওঠা সম্পূর্ণ নিষেধ করে দেয়। এরপরও গত ৭ মার্চ আবার শহিদ মিনারসংলগ্ন টিলায় আগুন লাগে। এতে ওই টিলার প্রায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ জায়গা পুড়ে যায়। এ ছাড়াও ক্যাম্পাসে বেড়েছে মাদক সেবন।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রহিমা পারভীন রুহি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ভেতর বহিরাগতদের আনাগোনা দিন দিন বাড়ছে। আমরা হলের মধ্যেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবুল হাসনাত বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এতে অনৈতিক কার্যকলাপও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এই পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে নষ্ট করছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি অফিসার মোহাম্মদ ফারুক মিয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাকর্মী প্রয়োজন ২৫০ জন। তবে বর্তমানে রয়েছে ১৫৭ জন। আবার সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষের দিকে চলে আসায় আমরা নতুন করে নিরাপত্তাকর্মী বাড়াতে পারছি না।’
এসব বিষয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুরের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদকের ক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি এবং এ পর্যন্ত যতগুলো ঘটনা ধরা পড়েছে আমরা প্রত্যেককেই পুলিশে সোপর্দ করেছি। সীমানা প্রাচীর মেরামত করার জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কিছু শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতার কারণে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা সবাই যদি সচেতন হন, তাহলে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আমরা দ্রুত এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’