ঢাকা ২৯ আষাঢ় ১৪৩২, রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
English

শাবিপ্রবি ক‍্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা, খাল খননেই মিলল সুফল

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
শাবিপ্রবি ক‍্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা, খাল খননেই মিলল সুফল
খননকৃত খাল। ছবি:খবরের কাগজ

বিগত বছরগুলোতে বর্ষাকাল আসতে না আসতেই অল্প বৃষ্টিতে ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ার কারণে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের। কিন্তু এবার বর্ষা আসার আগেই ক্যাম্পাসের প্রতিটি খাল পুনরায় খনন করায় সে সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে প্রশংসায় ভাসছে প্রশাসনের খাল খননের এ উদ্যোগ। 

সোমবার (২ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিলেটে বিগত কয়েকদিনের মৌসুমি বৃষ্টিতে আগের মতো জলাবদ্ধতা তৈরি হয়নি ক্যাম্পাসে। পুনঃখননকৃত খাল দিয়ে সহজেই ক্যাম্পাসের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে দেখা যেত ঠিক উল্টো চিত্র। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা তৈরি হতো, রাস্তা ডুবে যেতো এবং এতে করে যাতায়াত ভোগান্তিতে পড়তে হতো শিক্ষার্থীদের। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পাসের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার সমস্যা দূর করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন ও নতুন খাল খনন করা হয়। খালটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানাঘেঁষা টিলারগাও এলাকা দিয়ে চেঙ্গের খালে গিয়ে পতিত হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ইতিবাচক পরিবর্তনের ব্যাপারে পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তুফা আহাম্মেদ বলেন, অতীতে সামান্য বৃষ্টিতেই ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা দেখা দিত, যা শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাত। তবে সম্প্রতি খাল খনন ও জলাধার উন্নয়নের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন বৃষ্টির পরও ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা দেখা দেয় না, যা শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তির বিষয়। এই উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূসম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেখা যেত একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সবাইকে যাতায়াত ভোগান্তিতে পড়তে হতো। তাই আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই প্রথম এই কাজটার দিকেই মনোযোগ দিয়েছিলাম। আমাদের কাজ এখনো চলমান আছে। আশা করি এই সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, প্রত্যেক বছর বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পাস প্লাবিত হয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। পাশাপাশি ক্লাসরুম বা ল্যাবের ভিতরে পানি ঢুকে অনেক ক্ষতি করতো। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই সময় মতো খাল খনন করা হয়েছে। খালের পানি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার বাহিরে যাতে পানি সহজে নিষ্কাশন হয় সে ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট প্রশাসককে বলা হয়েছে। তারাও বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তার খানাখন্দ ঈদের বন্ধের মধ্যে মেরামতের জন্যও সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে। আশা করি এই বন্ধের মধ্যে তারা এটা করে ফেলবে।


মো: ইসফাক আলী/মাহফুজ 

 

মিটফোর্ডের সামনে নির্মম হত্যাকাণ্ডে ক্ষুব্ধ নোবিপ্রবি উপাচার্য

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৩:০২ পিএম
মিটফোর্ডের সামনে নির্মম হত্যাকাণ্ডে ক্ষুব্ধ নোবিপ্রবি উপাচার্য
নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে পিটিয়ে ও মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ও শোক প্রকাশ করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য।

নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল ফেসবুকে লেখেন, ‘একজন জীবন্ত মানুষকে হত্যার পর লাশের ওপর নৃত্য দেখে বাকরুদ্ধ বাংলাদেশ। কী ভয়ানক নৃশংসতা! ভিডিও দেখে এখনো ঘুমাতে পারছি না, চোখ থেকে এই দৃশ্য সরাতে পারছি না কোনোভাবেই। আমরা কি দিন দিন বিবেকহীন অমানুষে পরিণত হচ্ছি?’

ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজুয়ানুল হক লেখেন, ‘ওদের হয়তো ফাঁসি হবে। এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে বিস্ময়কর লাগছে, ওরা এই দুঃসাহস কীভাবে করল? জানের ভয় থাকলে তো কারও এমন কাজ করার কথা নয়। এটি গবেষণার বিষয়। একেবারে প্রকাশ্য দিবালোকে, এত মানুষের সামনে ঘটনা ঘটল, তাও জুলাই মাসে!’

জুলাই অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লবের এখনো এক বছরও পূর্ণ হয়নি। একটা মানুষও বাঁধা দিল না? কেউই এগিয়ে এল না? বন্দুকের নলের মুখে আন্দোলন করা সাহস হুট করে কোথায় উবে গেল? এই হত্যাকাণ্ড ভিডিও করার চেয়ে বাঁধা দেওয়া জরুরি ছিল। হ্যাঁ, ওরা অমানুষ, নরপিশাচ - কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমরা আর কতটুকু মানুষ, কে জানে!’

ভিডিওটি নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত কণ্ঠে আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঐ ভিডিও আমি দেখিনি। আসলে দেখার সাহস হয়নি। তবুও ঘুম আসছে না। যারা দেখেছেন, তারা কীভাবে ঘুমাবেন?’

কাউসার আহমেদ/অমিয়/

জাবিতে মিটফোর্ডের সামনে ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০১:৩১ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৩ পিএম
জাবিতে মিটফোর্ডের সামনে ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জাবিতে ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ।

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। 

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভকারীরা শহিদ মিনার থেকে রায়সাহেব বাজার ও তাঁতিবাজার হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে যায়। পরে একই পথ ধরে ফিরে এসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘যুবদলের নতুন গুণ, পাথর মেরে করছে খুন; জিয়ার সৈনিক, চাঁদা চায় দৈনিক; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; আমরা ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে; সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও; ওয়ান টু থ্রি ফোর, চাঁদাবাজ নো-মোর’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ী সোহাগকে যেভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা শুধু বর্বরতাই নয়, সাম্প্রতিক সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিরই প্রতিফলন।’

শিক্ষার্থীরা এ হত্যাকাণ্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংস ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, সাম্যের ও চাঁদাবাজিমুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু হাসিনার বিদায়ের পরপরই একটি গোষ্ঠী চাঁদাবাজি শুরু করেছে। আমরা ভুলে যাইনি আবু সাঈদের ভাইদের, শহিদ ওয়াসিম কিংবা শহিদ সাজিদের কথা। আবারও যদি প্রয়োজন হয়, আমরা রাজপথে নামব, আবারও জুলাই ফিরে আসবে।’

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নূর নবী বলেন, ‘মনে হচ্ছে, এই পাথর আমার ভাইয়ের গায়ে নয়, আমার বুকেই আঘাত করেছে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছিল, সেই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আজ আমরা মিটফোর্ডে দেখলাম। ৫ আগস্ট আমরা ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করেছি, এবারও যারা সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে, তাদেরও প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত।’

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা চেয়েছিলাম একটি সহিংসতামুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু আজ আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা হচ্ছে। যারা দেশজুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে, তাদের রুখতে আমরা প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নামব, আবারও জুলাই ফিরে আসবে।’

উল্লেখ্য, রাজধানীতে গত বুধবার চাঁদা না দেওয়ায় মো. সোহাগ নামের এক ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। সেদিনই পুলিশ যুবদল নেতা মঈনসহ দুজনকে আটক করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শতাধিক মানুষের সামনে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

মুজাহিদ/সুমন

সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৮ এএম
সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ মিছিল
ছবি: খবরের কাগজ

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। 

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভকারীরা শহিদ মিনার থেকে রায়সাহেব বাজার ও তাঁতিবাজার হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে যায়। পরে একই পথ ধরে ফিরে এসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘যুবদলের নতুন গুণ, পাথর মেরে করছে খুন; জিয়ার সৈনিক, চাঁদা চায় দৈনিক; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; আমরা ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে; সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দা; ওয়ান টু থ্রি ফোর, চাঁদাবাজ নো-মোর’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ী সোহাগকে যেভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা শুধু বর্বরতাই নয়, সাম্প্রতিক সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিরই প্রতিফলন।’

শিক্ষার্থীরা এ হত্যাকাণ্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংস ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, সাম্যের ও চাঁদাবাজিমুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু হাসিনার বিদায়ের পরপরই একটি গোষ্ঠী চাঁদাবাজি শুরু করেছে। আমরা ভুলে যাইনি আবু সাঈদের ভাইদের, শহিদ ওয়াসিম কিংবা শহিদ সাজিদের কথা। আবারও যদি প্রয়োজন হয়, আমরা রাজপথে নামব আবারও জুলাই ফিরে আসবে।’

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নূর নবী বলেন, ‘মনে হচ্ছে, এই পাথর আমার ভাইয়ের গায়ে নয় আমার বুকেই আঘাত করেছে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছিল, সেই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আজ আমরা মিটফোর্ডে দেখলাম। ৫ আগস্ট আমরা ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করেছি, এবারও যারা সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে, তাদেরও প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত।’

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা চেয়েছিলাম একটি সহিংসতামুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু আজ আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা হচ্ছে। যারা দেশজুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে, তাদের রুখতে আমরা প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নামব, আবারও জুলাই ফিরে আসবে।’

উল্লেখ্য, রাজধানীতে গত বুধবার চাঁদা না দেওয়ায় মো. সোহাগ নামের এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। সেদিনই পুলিশ যুবদল নেতা মঈনসহ দুজনকে আটক করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শতাধিক মানুষের সামনে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

মুজাহিদ/সুমন

মিটফোর্ডের সামনে ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডে ঢাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪১ এএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
মিটফোর্ডের সামনে ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডে ঢাবিতে বিক্ষোভ
ছবি: খবরের কাগজ

চাঁদা না দেওয়ায় রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ফেডারেশনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেয়।

শুক্রবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ঢাবি ক্যাম্পাসে পৃথক পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। রাত ১০টার দিকে ব্যবসায়ীকে হত্যাকাণ্ডে দ্রুত বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। মিছিলটি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডাস চত্বরপার্শ্ব রাস্তায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ‘আমাদের অধিকার, নিরাপদ বাংলাদেশ; ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত; বিচার-বিচার, বিচার চাই, সোহাগ হত্যার বিচার চাই; মানুষ মরে উল্লাস করে, ইন্টেরিম কি করেসহ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসাপাতালে সামনে যেভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে উল্লাস করা হয়েছে, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, অনতিবিলম্বে যদি বিচার নিশ্চিত না করা হয়, ছাত্রদল এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’

এদিকে একই সময়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দেশব্যাপী চলমান সকল প্রকার ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সহিংসতা ও ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে ইসলামি আন্দোলনের ঢাবি শাখা।

রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে আমরা যখন দেশকে গোছানোর চেষ্টা করেছি। তখন এই পথে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি মাত্র দল। সারা দেশ চাঁদাবাজের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেকটা জেলায়-বন্দরে নির্বিচারে চাঁদাবাজি করছে। গত পরশু দিন পুরান ঢাকায় চাঁদা না দেওয়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় পাথর মেরে একজনকে হত্যা করেছে যুবদল। আমরা কী নতুন করে আবার প্রস্তর যুগে ফিরে গেলাম? সোশ্যাল মিডিয়ায় না এলে আমরা জানতে পারতাম না। অবিলম্বে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।’

গত মার্চে বরগুনা পৌর শহরের এক মেয়েকে অপহরণের পরে ধর্ষণের মামলা দায়েরে ধর্ষিতার বাবাকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভুক্তভোগীর ফোনালাপের প্রসঙ্গে টেনে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার দেশে চাঁদাবাজি হয়, খুন হয় আর লন্ডন থেকে ফোন করে বলা হয়, বোন আমি তারেক বলছি। তারেক রহমান আপনি এই নাটক বন্ধ করে আপনার দলকে সামলান। ছাত্রদল, যুবদল আপনারা নতুন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন না। নয় তো আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও একই পরিণতি হবে।’

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আপনারা নিজেদের রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আনতে পারছেন না। আমরা আপনাদের শত্রু না। আপনারা মজলুম ছিলেন জালিম হইয়েন না।’

এদিকে একই সময়ে লাল চাঁদ মিয়া, খুলনার মাহবুবুর রহমানসহ সাম্প্রতিক সব হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের বিচার দাবিতে মশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র ফেডারেশন। সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মশাল মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ফের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।

এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে সোহাগ নামে এক ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। 

আরিফ জাওয়াদ/সুমন/

ছাত্রীনিবাস থেকে বেরোবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:২২ পিএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ০২:২১ পিএম
ছাত্রীনিবাস থেকে বেরোবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) জান্নাতুল ফেরদৌসি টুম্পা নামে এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সরদারপাড়ায় আপন লেডিস হোস্টেলের নিজ কক্ষ থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, টুম্পা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চাপুইর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

টুম্পার সঙ্গে হোস্টেলে থাকা সহপাঠীরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে টুম্পার রুম বন্ধ থাকায় তারা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানান। পরে পুলিশ  ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে রুমের ভেতর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং পুলিশ প্রশাসনের সহয়তায় দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করি। শিক্ষার্থীর পরিবারে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলে  তাদের সিদ্ধান্তে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাজী আজম/রিফাত/পপি/