ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

ভেঙে দেওয়া হলো ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য, সমালোচনার ঝড়

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১১:১১ এএম
আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫, ১১:৩০ এএম
ভেঙে দেওয়া হলো ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য, সমালোচনার ঝড়
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) পুকুরে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নির্দেশে ঈদের ছুটির মধ্যে ভাস্কর্যটির ভাঙার কাজ শুরু হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ শুরু হলে অর্ধেকের বেশি ভেঙে ফেলা ভাস্কর্যটির গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ও পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝখানে পুকুর পাড়ে সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের সময় এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছিলেন ভাস্কর মনিন্দ্র পাল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চার কোটি বেশি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পুকুরগুলোর সৌন্দর্য বর্ধন কাজের অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য।

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। তার স্থলে রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন ট্রেজারার অধ্যাপক জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী। ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়ে অনেক আগেই ডিন ও সবাইকে নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটা সম্ভবত সেই সিদ্ধান্তের কারণেই হয়েছে। তখন তো অনেকগুলো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছিল, কেউ কেউ ভাস্কর্যটি নিয়ে তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন। ফলে ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। এ প্রসঙ্গে হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অঞ্জলি লহ মোর ভাস্কর্যটি শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ভাঙা হয়েছে।’

এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী মুনমুন আহমেদ ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘কেউ কি তাঁদের থামাতে পারবেন? ভেঙে ফেলা হচ্ছে “অঞ্জলি লহ মোর” নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ম্যুরাল, যেটি আমার হাতের ছবি থেকে করা হয়েছিল। এটি ভাস্কর্যবিদ মনিন্দ্র পাল করেছিলেন। খুবই দুঃখজনক যে এই মুহূর্তে সেটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে “অঞ্জলি লহ মোর” ম্যুরাল ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিভিন্ন অঙ্গনের সংস্কৃতিজন, লেখক, সাংবাদিক ও প্রগতিশীল নাগরিক সমাজের সদস্যরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত শিল্পকর্ম “অঞ্জলি লহ মোর” প্রশাসনিক নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এই ম্যুরালটি প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদের হাতের ভঙ্গিমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করেছিলেন বিশিষ্ট ভাস্কর মনিন্দ্র পাল। এটি শুধুমাত্র একটি শিল্পকর্ম নয়, বরং আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ, নারীর শক্তি ও ভাবগম্ভীর মানবিক প্রকাশের প্রতীক। এ ধরনের একটি শিল্পবস্তুকে ধ্বংস করা নিছক প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয় - এটি আমাদের মৌলিক সাংস্কৃতিক ও মানবিক চেতনার ওপর আঘাত।

আমরা মনে করি, সংস্কৃতির প্রতীক ধ্বংসের অপরাজনীতি একদিনে শুরু হয়নি। এটি ধর্মান্ধতা, প্রতিক্রিয়াশীলতা ও রাজনীতির ছদ্মবেশে এক দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের ফল। ভাস্কর্য বা ম‍্যুরাল নয়, বরং ষড়যন্ত্রের এই বিষদাঁত ভেঙে ফেলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। 

ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারি বাড়িতে হামলাসহ সারাদেশে শিল্প ও সংস্কৃতির ওপর বিভিন্নরকম হামলা ও আক্রমণ হয়েছে। আমরা এই ধরণের সকল অপচর্চার নিন্দা জানাই। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া “অঞ্জলি লহ মোর” নামক ভাস্কর্য ভাঙ্গার কঠোর নিন্দা জানাই এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জবাবদিহি দাবি করি। একইসঙ্গে আমরা আহ্বান জানাই - সকল সৃজনশীল ও বিবেকবান নাগরিক, যাঁরা প্রগতিশীলতাকে হৃদয়ে ধারণ করেন, তাঁরা যেন এখন থেকেই সরব হন, দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে মৌলবাদ-সন্ত্রাস-সংস্কৃতিবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলেন।

শিল্প, সাহিত্য, ভাস্কর্য, গান ও নৃত্য - এসব আমাদের অস্তিত্বের অনিবার্য অংশ। এগুলোর ওপর আঘাত আসলে, তা কেবল শিল্পের নয়, গোটা জাতির অন্তরে আঘাত করে। ধর্মান্ধতা নয়, প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তানজিল হোসেন ফেসবুকে লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ভাস্কর্যটি বিনা আলোচনায় ও ছুটি চলাকালে গোপনে ভেঙে ফেলার ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। এই নান্দনিক স্থাপনাটি ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি গানের অনুপ্রেরণায় নির্মিত, যা তাঁর সাহিত্য ও সংগীতভাবনার একটি চিত্ররূপ ছিল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিল্প, সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার প্রতীক হিসেবে যে ভাস্কর্যটি ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করত, তাকে এভাবে গোপনে ভেঙে ফেলা শুধু প্রশাসনিক অবিবেচনার নয়; বরং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির সংকটকেই প্রকাশ করে।’

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জেনাস ভৌমিক লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পুকুরে সাবেক ভিসি মোহিত উল আলম স্যারের বানানো একটা ভাসমান ঘর ছিলো। কেউ বলতো সিন্ধু সরোবর,  কেউ বলতো প্রমোদ তরী, কোনও অফিশিয়াল নাম ছিল না সম্ভবত। সৌমিত্র শেখর স্যার এসে সেটা ভেঙে দিলেন। একদল শিক্ষক কর্মকর্তা সেই ভাঙচুরে ভালোই ফুয়েল দিয়েছিলো। তারপর সৌমিত্র শেখর স্যার এসে এই পুকুরে বানায় "অঞ্জলি লহ মোর"। এটার কোনও প্রয়োজন ছিলো না, অর্থের অপচয়। তবে যেহেতু জনগণের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে নজরুলের কবিতাকে থিম করে এটা বানানো হয়েছে - বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমী একটি স্থাপত্য হিসেবে এটি থাকতে পারতো। কিন্তু আবারো একদল শিক্ষক কর্মকর্তার ফুয়েল আর বর্তমান ভিসি জাহাঙ্গীর স্যারের প্রায়োরিটি লিস্টে এটাও ভাঙা পড়লো। শিক্ষার্থীদের কোনও পক্ষের প্ররোচনা থাকলেও প্রশাসন জানাতে পারে। কিন্তু প্রশাসনের কোনও জবাবদিহিতাই তো নাই! প্রতিবার তাদের এই খামখেয়ালি ভাঙা এবং গড়ার খরচ দিচ্ছে জনগণ। ভিসি এবং শিক্ষক, প্রশাসনিক ভবনের কর্তাদের পকেটের টাকা খরচ করে ভাঙতে হলে উনারা নিশ্চয়ই চাঁদা তোলে ভাঙতো না। এখন বর্তমান ভিসি জাহাঙ্গীর স্যার যে স্বল্প কিছুদিন আছেন কিছু গড়ে যেতে পারলে ভালো। না হলে পরে নতুন কেউ এসে ভাঙবেটা কি! এসব প্রতিহিংসার বাস্তবায়ন ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোনও পরিবর্তন আনতে পারেনি এই প্রশাসন । প্রতিহিংসার সংস্কৃতির চর্চাই উনারা করে গেলেন।

ইন্টারেস্টিং হচ্ছে এখানে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে আছে "ডিপিডি হাফিজ এর পরিকল্পনা দপ্তর"। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শুরু করে রাস্তা, ড্রেন, ভবন উনারা  নিজে হাতে বারবার সৃষ্টি করে আবার ধ্বংস করে। প্রতিবার ভিসি হিসেবে নতুন মাস্টার আসলে তাদের মাস্টারপ্ল্যান চেঞ্জ হয়। ভিসি বাংলোর সামনে দিয়ে যাওয়া রাস্তাটা সোজা বটতলায় গিয়ে শেষ হতো। ঐটাই ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকে প্রধান গেট। এখন শিউলি মালা হল ভেঙে রাস্তাটা সোজা করা বাকী। বুদ্ধি করে "শিউলি মালা" হলটাও এমন বাজে ভাবে বানিয়েছে যে একটা মাঝারি মানের ভূমিকম্প হলেই  যেকোনো সময় ভবনটি ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভেঙে ফেলার প্রয়োজন পড়তে পারে। তখন ভবন ভেঙে রাস্তাটাও আবার নতুন করে সোজা করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মূলত পুতুল মাত্র । ছাত্র সংসদ নেই, প্রশাসনের কোনও দায়বদ্ধতা, জবাবদিহিতাও নেই। নবীন শিক্ষার্থীরা যতদিনে বুঝতে পারে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিভাবে ফাংশন করে ততদিনে যাবার বেলা চলে আসে। একরাশ হতাশা নিয়ে তারা চলে যায়। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবসময় কিছু ব্যক্তিবিশেষের সিন্ডিকেট দ্বারা শোষিত হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১৫% ভ্যাট। অর্থাৎ শিক্ষাটা গণঅভ্যুত্থানের বিচার বিভাগের কাছেও বাণিজ্য। যেখানে শিক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রের শিক্ষা নিয়ে রাষ্ট্রীয় নীতি থাকবে। এখন শিক্ষা ব্যবসা যে দেশের আইনসম্মত নীতি সেদেশে শিক্ষার অবস্থা হবে বিভিন্ন গ্রেডের পণ্যেরের মতো। শিক্ষার্থীরা জেগে না উঠলে শিক্ষাকে ধ্বংস করার সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে থাকবে এই অসাধু সিন্ডিকেট।’

অমিয়/

হাবিপ্রবিতে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগ নেতা আটক

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:১১ পিএম
হাবিপ্রবিতে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগ নেতা আটক
ছবি: খবরের কাগজ

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) পরীক্ষা দিতে আসা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে পরীক্ষা দেওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আটক ছাত্রলীগ নেতার নাম শুভ (২৫)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।

জানা গেছে, শুভ স্থাপত্য বিভাগের স্পেশাল রিপিট পরীক্ষায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শামসুজ্জোহা বলেন, 'একজন হামলাকারীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার নিয়ম নেই। এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখা ব্যবস্থা নেবে। আমরা তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছি।'

সুলতান/মেহেদী/

বেরোবিতে আবু সাঈদের শাহাদৎবার্ষিকীতে যাচ্ছেন চার উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১১:৩১ এএম
বেরোবিতে আবু সাঈদের শাহাদৎবার্ষিকীতে যাচ্ছেন চার উপদেষ্টা
শহিদ আবু সাঈদ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) আগামী ১৬ জুলাই পালিত হতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদের শাহাদৎবার্ষিকী ও ‘জুলাই শহিদ দিবস’।

দিনটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা। তারা হলেন- আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীরপ্রতীক)।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. তানজীমউদ্দীন খান।

এদিনে কর্মসূচি
সকাল সাড়ে ৬টায় পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়ার বাবনপুর গ্রামের উদ্দেশে ক্যাম্পাস থেকে যাত্রা, সকাল সাড়ে ৭টায় শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত, সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে কালো ব্যাজ ধারণ ও শোকর‍্যালি, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শহিদ আবু সাঈদ তোরণ ও মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শহিদ আবু সাঈদ চত্বরে শহিদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনাসভা, বিকেল সাড়ে ৩টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বাদ আসর (বিকাল সাড়ে ৫টা ৩০ মিনিট) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, অনুষ্ঠানে আবু সাঈদের বাবা থাকবেন প্রধান অতিথি।

এ ছাড়াও আরও ২১ জন শহিদ পরিবারের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। তারা সবাই স্টেজে থাকবেন। উপদেষ্টাসহ অন্যান্য অতিথিরা নিচে থাকবেন।

গাজী আজম/অমিয়/

নোবিপ্রবির ৪৭৪ শিক্ষক-শিক্ষার্থী পাচ্ছেন গবেষণা প্রণোদনা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
নোবিপ্রবির ৪৭৪ শিক্ষক-শিক্ষার্থী পাচ্ছেন গবেষণা প্রণোদনা
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ৪৭৪ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পাচ্ছেন গবেষণা প্রণোদনা। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা তিনটি ক্যাটাগরিতে গবেষণা প্রণোদনা দিচ্ছি- পিএইচডি ফেলোশিপ, প্রকাশনা প্রণোদনা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী যৌথ গবেষণা (মাস্টার্স)।’

তথ্য অনুযায়ী, ৩৪৯ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যৌথ গবেষণায় (মাস্টার্স) প্রণোদনা পাচ্ছেন। এ ছাড়া, ২০২২ সালের জন্য ২৮ জন শিক্ষক, ২০২৩ সালের জন্য ৩৩ জন এবং ২০২৪ সালের জন্য ৫১ জন শিক্ষক প্রকাশনা প্রণোদনার জন্য মনোনীত হয়েছেন। এ ছাড়া পিএইচডি ফেলোশিপ পাচ্ছেন ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০ জুলাই সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ মো. রুহুল আমিন অডিটোরিয়ামে গবেষণা প্রণোদনার চেক বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।

৩ দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
৩ দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ছবি: খবরের কাগজ

ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ রশিদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রকৌশল খাতে বর্তমানে চরম বৈষম্য চলছে। যার মধ্যে রয়েছে বিএসসি প্রকৌশলের এন্ট্রি লেভেলের পদসংখ্যা সংকোচিত করা, নবম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী পদে অভ্যন্তরীণ কোটার মাধ্যমে ডিপ্লোমাধারী উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা নিয়মের বাইরে পদোন্নতি পেলেও সহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষায় বিএসসি প্রকৌশলীদের পদ সংকোচিত হচ্ছে। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে ডিপ্লোমাধারী উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।’

বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তারা বলেন, ‘উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে শুধুমাত্র ডিপ্লোমাধারীরা আবেদন করতে পারেন। সেখানে বিএসসি ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারছে না। শুধুমাত্র বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরাই প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার করতে পারেন, সেখানে এই পদবিরও অপব্যবহার করা হচ্ছে।’

এ সময় তারা সংবিধানের সমতা নিশ্চিতে অবিলম্বে এই বৈষ্যম নিরসনের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত তিন দফা দাবিগুলো হলো- ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না; টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে অর্থাৎ ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীদের পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে; বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না, এই মর্মে আইন পাস করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।

তিন দফা দাবি ঘোষণা করে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে পলাশী মোড় প্রদক্ষিণ করে বুয়েট শহিদ মিনারে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘জুলাইয়ে গেল হাজার প্রাণ, করতে কোটার পুনর্বাসন?’ ‘কোটার নামে অবিচার বন্ধ করো, বন্ধ করো’ ‘প্রকৌশলীদের সব পদ, শুধুই প্রকৌশলীদের অধিকার’সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া বৈষম্য নিরসনে মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকেন।

জাওয়াদ/সালমান/

ঢাবি শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে ক্লাস বন্ধ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৭ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম
ঢাবি শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে ক্লাস বন্ধ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান খান

স্ট্রোকের একদিনের মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান খান। তার অকাল মৃত্যুতে শোকার্ত পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। প্রয়াত এ শিক্ষার্থীর স্মরণে শোক পালন করতে বন্ধ ছিল বিভাগের সব ক্লাস।

রবিবার (৬ জুলাই) রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ব্রেন স্ট্রোক করে শরীরের বাম অংশ অবশ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আহসান। পরে সোমবার (৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আহসানের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলায়। তিনি শেখ মুজিবুর রহমান হলের জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবনের ৯০০৩নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

পরে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাদ জোহর নিজ জেলা নরসিংদীর পলাশে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এদিকে আহসান খানের রুহের মাগফেরাত কামনায় বাদ এশা শেখ মুজিবুর রহমান হল মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া বুধবার (৯ জুলাই) বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

আহসানের অকাল মৃত্যুতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শোক জানিয়েছে ছাত্রদল, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। এ ছাড়া দুদিনব্যাপী বৃক্ষ ও ফল উৎসব কর্মসূচি স্থগিত করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

আরিফ/রিফাত/মেহেদী/