সিভিতে সাধারণত কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য দক্ষতা উল্লেখ থাকে। কিন্তু সেই পদের জন্য প্রার্থী কেন যোগ্য, সিভিতে তার ব্যাখ্যা থাকে না। এ ক্ষেত্রে সিভির সঙ্গে কাভার লেটার থাকলে প্রার্থী সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া যায়।
কাভার লেটার কাকে বলে?
একটি নির্দিষ্ট পদের জন্য আপনি কী কারণে যোগ্য, তার ব্যাখ্যা কাভার লেটারে দেওয়া সম্ভব। তবে সিভির লেখাগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন এতে না থাকে । বরং পদের দায়িত্বগুলো কীভাবে আপনি অন্যদের চেয়ে ভালোভাবে পালন করতে পারবেন, সে যুক্তি তুলে ধরতে হয়। সাধারণত কাভার লেটার দেখে নিয়োগকারীরা কাউকে ইন্টারভিউয়ে ডাকার সিদ্ধান্ত নেন। তাই চাকরির আবেদনের সময় সিভির সঙ্গে কাভার লেটার পাঠানো জরুরি।
কাভার লেটার কী কাজে আসে?
একটি ভালো কাভার লেটার আপনাকে অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে রাখবে। অনেক ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব সিভির চেয়েও বেশি।
একটি পদের দায়িত্ব নিয়ে আপনার কতটা জানাশোনা রয়েছে, তা একজন নিয়োগকারী আপনার কাভার লেটারের মাধ্যমে বুঝতে পারেন। তাই এর মান ভালো হলে আপনার সম্পর্কে নিয়োগকারীর ইতিবাচক মনোভাব থাকবে।
কাভার লেটারে আপনার অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার পাশাপাশি কাজের আগ্রহের কারণ উল্লেখ করা থাকে। আপনার আগ্রহের কারণ যৌক্তিক হলে নিয়োগকারীর কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাবে।
কাভার লেটার লেখার নিয়ম
কাভার লেটার ইংরেজি ভাষায় লিখতে হয়। তাই ভালো কাভার লেটার লিখতে হলে ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতা থাকা জরুরি।
একটি কাভার লেটারে মূলত তিনটি অংশ থাকে- প্রথম অংশ (Introduction), মূল অংশ (Body) এবং শেষ অংশ (Closing)।
প্রথম অংশে তিনটি বিষয় উল্লেখ করুন-
-কোন পদের জন্য আবেদন করছেন।
-কীভাবে এ নিয়োগ সম্পর্কে জানলেন।
-আপনি কেন এ পদে কাজ করার জন্য আগ্রহী।
মূল অংশ ১-৩ প্যারাগ্রাফে লিখতে পারেন। যে পদের জন্য আপনি আবেদন করছেন, তার সঙ্গে আপনার যোগ্যতা কীভাবে সম্পর্কিত, তা ব্যাখ্যা করুন। আপনার আগের কাজের অভিজ্ঞতাগুলো কীভাবে বর্তমান পদ ও প্রতিষ্ঠানের কাজে আসবে, তা পরিষ্কারভাবে লিখুন।
ইন্টারভিউয়ের জন্য আপনার আগ্রহের কথা জানান শেষ অংশে। কীভাবে আপনার সঙ্গে নিয়োগকারী যোগাযোগ করতে পারবেন, তাও উল্লেখ করুন।
কাভার লেটারের শেষে স্বাক্ষর দিন।
চেষ্টা করুন এক পৃষ্ঠার মধ্যে লেখা শেষ করতে।
যার কাছে আবেদন করছেন, তার নামের উল্লেখ না থাকলে ‘Dear Sir/Mam’ সম্বোধন ব্যবহার না করা শ্রেয়। এর বদলে ‘Dear Concern/Hiring Official’ ব্যবহার করতে পারেন।
সিভির লেখাগুলো পুনরাবৃত্তি করবেন না।
নিয়োগকারীর মনোযোগ ধরে রাখতে পারে এমন শব্দ ব্যবহার করুন।
ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
অল্প কথায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো গুছিয়ে লিখুন।
যে পদের জন্য আবেদন করছেন, তার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলোর দিকে নজর দিন।
একই ধরনের বাক্য বারবার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। চেষ্টা করুন বাক্যগুলোর গঠনে পরিবর্তন আনতে।
বারবার পড়ুন ও ভুলগুলো খুঁজে বের করুন, বিশেষ করে বানানের বেলায় সতর্ক থাকুন।
ইন্টারনেটে প্রচুর কাভার লেটার স্যাম্পল পাওয়া যায়। আপনি যেই পদে আবেদন করছেন তার স্যাম্পল লেটার পড়ে কিছু ধারণা পেতে পারেন। এতে আপনার লেখার সুবিধা হবে।
গুগল ডকস এবং এমএস ওয়ার্ডের অনলাইন ভার্সনে কিছু টেমপ্লেট রয়েছে কাভার লেটার লেখার জন্য। আবার অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকেও টেমপ্লেট পছন্দ করতে পারেন। এমন কিছু ওয়েবসাইট হলো রেজুমেজিনিয়াস ডট কম (resumegenius.com), হাডসন ডট কম (hudson.com), জবস্ক্যান ডট কম (jobscan.com) ইত্যাদি।
কলি