‘আইস ব্রেকার অব নলেক’ শীর্ষক পঞ্চম বিজ্ঞানভিত্তিক ও শিক্ষামূলক উত্তর মেরু অভিযানে অংশগ্রহণ করছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থী কৌশিক আহমেদ।
রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ৭০জন অংশগ্রহণকারী নিয়ে পরমাণু শক্তিচালিত আইস ব্রেকার ‘বিজয়ের ৫০ বছর’ ১৩ আগস্ট রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম শহর মুরমান্সক থেকে উত্তর মেরু অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন রসাটম এবং এজনানিয়ে শীর্ষক একটি সামাজিক সংস্থার সহায়তায় অভিযানটি আয়োজন করেছে পরমাণু শক্তি তথ্যকেন্দ্র নেটওয়ার্ক। আগামী ২২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এই উত্তর মেরু অভিযান।
উল্লেখ্য, চলতি বছর রাশিয়া তাদের পারমাণবিক আইস ব্রেকার বহরের ৬৫ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।
নিজস্ব অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কৌশিক আহমেদ বলেন, ‘আগ্রহ এবং বিশেষ লক্ষ্য নিয়ে আমি এই অভিযাত্রায় সঙ্গী হয়েছি। এটা শুধুমাত্র একটি সাধারণ ভ্রমণ নয়, বরং অজানা উত্তর মেরু সম্পর্কে জানার একটি বিশেষ সুযোগ। নর্থ সীরুট একটি লুকায়িত বিশাল সম্পদের ভাণ্ডার এবং এটিকে এক্সপ্লোর করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি। তাছাড়াও প্রকৌশল ক্ষেত্রে নিউক্লিয়ার আইস ব্রেকার অত্যাশ্চর্য বিষয়, যা সম্পর্কে আমি বিশদভাবে জানতে আগ্রহী।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযানকালে জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে উত্তর মেরুকে প্রভাবিত করছে তা সম্পর্কে জানার সুযোগ পাব এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারী, ক্রু এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আমি বিষয়টি নিয়ে মতবিনিময় করার আশা রাখি। নিজস্ব আবাসে মেরু ভালুক এবং চিত্তাকর্ষক নর্দার্ন লাইটস স্বচক্ষে দেখারও সুযোগ হবে এই অভিযানে।’
বিজয়ের ৫০ বছর পারমাণবিক আইস ব্রেকারের ক্যাপ্টেন রুসলান সাসোভ যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা মুরমান্সক থেকে উত্তর মেরুতে যাব এবং সেখান থেকে আবার মুরমান্সক ফিরে আসবো। আপনাদের জন্য সামনে জীবনের সর্বোচ্চ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে। আমরা এবং নাবিকরা যেভাবে উত্তর মেরুকে প্রতিনিয়ত অবলোকন করি, সেভাবেই আপনারা দেখতে পাবেন। আইস ব্রেকারটি উত্তর মেরুতে পৌছুতে এক হাজার ২০০ মাইল অতিক্রম করবে এবং আগামী ১৭ আগস্ট পৃথিবীর শীর্ষে পদার্পনের আশা রাখি।’
অভিযানকালে অংশগ্রহণকারীদের নিউক্লিয়ার আইস ব্রেকারের গঠন এবং পরিচালন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হবে। উত্তর মেরুর অনন্য প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে জানার অভূতপূর্ব সুযোগ পাবেন অংশগ্রহণকারীরা। পৃথিবীর সর্ব উত্তর স্থান ‘ফ্রান্স জোসেফল্যান্ড’ এ অবস্থিত পোস্ট অফিস থেকে অংশগ্রহণকারীরা তাদের প্রিয়জনদের পোস্টকার্ড পাঠাতে পারবেন। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আকর্ষণীয় লেকচার সেশনের আয়োজন করবে রসাটম এবং এজনানিয়ে।
শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী থেকে শুরু কওে ভ্লগারদের লেকচার এতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিশু ও তরুণদের ওপর একটি ডকুমেন্টারি সিরিজও তৈরি করবে।
পরমাণু শক্তিচালিত জাহাজের বহর এটমফ্লোটের মহাপরিচালক লিওনিদ ইরলিস্তা অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের শুভকামনা জানিয়ে বলেন, ‘এবারের অভিযাত্রী দলটি সত্যিকারের আন্তর্জাতিক। রাশিয়ায় সম্প্রতি সমাপ্ত বিশ্ব যুব উৎসব থেকে নির্বাচিত বিভিন্ন দেশের তরুণদের এবং রাশিয়ার শ্রেষ্ঠ স্কুল শিক্ষার্থীরা এই টিমের সদস্য। আর্কটিক প্রতিভাবান ও গোল ওরিয়েন্টেড তরুণদের মিলনে মুখরিত হবে।’
আইস ব্রেকার অব নলেজ শীর্ষক প্রোগ্রামটির মূল লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং পরমাণু প্রযুক্তি সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি করে সম্ভাবনাময় প্রতিভাবান তরুণদের খুঁজে বের করা এবং তাদের প্রতিভা বিকাশে বিভিন্ন ধরণের সহায়তা ও ক্যারিয়ার গাইডেন্স প্রদান।
বিজ্ঞপ্তি/সাদিয়া নাহার/অমিয়/