চর ও হাওরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়নে বিনা জামানতে ঋণ দিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) গাইবান্ধায় কেয়ার বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ঋণ প্রদান কর্মসূচিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ টাকার অ্যাকাউন্টধারী ২০ জন ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তার হাতে ঋণের চেক তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা, এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক নিশাত আফরোজ বিন্নি, এনআরবিসির মাইক্রো ফাইন্যান্স ইউনিটের প্রধান মো. রমজান আলী ভূঁইয়া, কেয়ার বাংলাদেশের সৌহার্দ্য প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মান্নান মজুমদার, সিনিয়র টিম লিডার জর্জ নকরেক প্রমুখ।
সৌহার্দ্য-৩ প্লাস কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ এলাকায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করতে কেয়ার বাংলাদেশ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, দেশের সকল মানুষকে আর্থিক সেবার আওতায় আনার লক্ষে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে প্রত্যেক মানুষের নামে অন্তত একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এজন্য কোন জটিলতা ছাড়াই ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এবং প্রায় ১ কোটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। স্বল্প সুদে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৭৫০ কোটি টাকার পুনঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে ব্যাংকগুলোকে অর্থের যোগান দিচ্ছে। প্রান্তিক এলাকায় ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ, বিনা জামানতে ঋণ প্রদানে এনআরবিসি ব্যাংকের কার্যক্রম প্রশংসনীয়।
তিনি আরও বলেন, বড় বড় শিল্পোদ্যোক্তারা ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ ফেরত দিচ্ছেন না। কিন্তু নারীদের মধ্যে খেলাপি হওয়ার প্রবণতা নেই। দেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নে নারীদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। তাই নারীসহ প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদেরকে আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক কর্মকাণ্ডের আওতায় আনতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মানুষের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। বৈষম্যমূলক সমাজ গঠনে আমরা বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অর্থায়ন করছি। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খোলা, বিনা জামানাতে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। অন্তত ১ লাখ মানুষকে ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে পুনঅর্থায়ন তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সাড়ে ৩ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে বিনাজামানতে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত শাখা-উপশাখার মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে ব্যাংকিং সেবার আওতায়আনা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে কেয়ার বাংলাদেশের সৌহার্দ্য প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মান্নান মজুমদার বলেন, গ্রামের উন্নয়ন করতে হলে নারীদের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর্থিক সংযোগ ও আর্থিক অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি আরও সহজ করতে হবে। মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ হতে হলে ব্যাংকগুলোকে আরও গ্রামমুখী হওয়া প্রয়োজন। এনআরবিসি ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক কর্মকাণ্ড গ্রামের মানুষদের সঞ্চয় করা এবং আয়বৃদ্ধিমূলক কাজে সহযোগিতা করছে।
বিজ্ঞপ্তি/নাবিল/এমএ/