
বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির ছাড়ের ছড়াছড়িতে শেষ সময়ে জমে উঠেছে রিহ্যাব মেলা। ফ্ল্যাটের মতো মেরিন গ্রুপ, প্রবাসী পল্লীসহ বিভিন্ন কোম্পানি প্লটেও ছাড় ঘোষণা করেছে। মেলার চতুর্থ দিনেও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আবাসন মেলায় আয়োজক ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) উদ্যোগে গত সোমবার পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) শেষ হবে মেলা। এবারের মেলায় মোট ২২০টি স্টল রয়েছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ খোলা থাকছে। মেলায় প্রবেশে সিঙ্গেল টিকিট ৫০ টাকা আর মাল্টিপল টিকিটের মূল্য ১০০ টাকা।
মেলায় মেরিন গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. কামরুল হাসান মোল্লা খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত বছর মেলা হয়নি। অনেকে অফিসে যোগাযোগ করেন। তবে মেলায় ব্যাপক দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটছে। তারা পূর্বাচলে বিভিন্ন সাইজের প্লট দেখছেন। অনেকে বুকিংও দিয়েছেন। ভালোই সাড়া পাচ্ছি।’ মেগা বিল্ডার্সের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রেদোয়ান মোল্লা বলেন, ‘আমরা পূর্বাচলের বিভিন্ন স্থানে প্লট বিক্রি করছি। বেশ ভালো সাড়া আসছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। বি ও সি ব্লকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা এবং এ ব্লকে ১২ লাখ টাকা কাঠা বিক্রি করা হচ্ছে।’ প্রবাসী পল্লী গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ জাহিদ হাসান জানান, আট লাখ টাকা কাঠা করে ৩, ৫, ১০ কাঠার প্লট বিক্রি করা হচ্ছে। অনেকেই বুকিংও দিচ্ছেন। ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ইসহাক ডেভেলপার্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মো. আলিনুর রহমান বলেন, ‘ফ্ল্যাটে বুকিং দিলেই ৫ লাখ টাকা ছাড় দেওয়া হচ্ছে। উত্তরা, মিরপুরে আমাদের প্রকল্পে ৭ হাজার ৩০০ থেকে ৮ হাজার ৫০০ টাকা বর্গফুট বিক্রি করা হচ্ছে।’
রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আক্তার হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিভিন্ন সংকটে আবাসন খাতে স্থবিরতা দেখা দেয়। এবারের মেলায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। কারণ দর্শনার্থীরা ভালো সাড়া দিচ্ছেন। মেট্রোরেল থাকায় উত্তরার দিকে ফ্ল্যাটের চাহিদা এখন অনেক বেশি। আবার দামের কারণে মিরপুরের দিকে ফ্ল্যাট খুঁজছেন কেউ কেউ। ড্যাপ সংশোধন হলে মেলার মাধ্যমে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াবে আশা করি।’
রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ জানান, ছোট থেকে মাঝারি সব ধরনের প্রকল্প মেলায় হাজির করা হয়েছে। স্বল্প, মধ্য এবং উচ্চবিত্ত সব ধরনের ফ্ল্যাট আনা হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পে।
হক হোম অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিহ্যাব পরিচালক ইমদাদুল হক বলেন, ‘বিগত সময়ের তুলনায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, শুক্রবার আরও ভালো সাড়া পাব। কারণ ছুটির দিন। সবকিছু মিলিয়ে আমি বলব, এই মেলা সফল এবং আমাদের সংকট কাটাতে সহায়তা করবে।’
এমএইচএম প্রোপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন মিন্টু বলেন, ‘মেলার শেষ দিন শুক্রবার অনেক ক্রেতা-দর্শনার্থী আসবেন। তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত ফ্ল্যাটটি খুঁজে নিতে পারবেন। আমরাও মেলা উপলক্ষে আমাদের প্রকল্পের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে বিশাল ডিসকাউন্টে তাদের কাছে বিক্রি করতে পারব।’
অ্যামবিট বিল্ডার্স কোম্পানির ডিএমডি ও রিহ্যাব পরিচালক ড. মো. হারুন অর রশিদ জানান, এ বছরের মেলায় তারা ভালো সাড়া পেয়েছেন। মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব পরিচালক মিরাজ মোক্তাদির জানান, হেরিটেজ লিমিটেডের মাধ্যমে তিনি চেষ্টা করছেন নাগরিকদের মৌলিক অধিকার পূরণ করতে।
মেলায় শুধু আবাসন প্রতিষ্ঠানই অংশগ্রহণ করেনি, ফ্ল্যাট বেচাকেনার জন্য অংশগ্রহণ করেছে ‘রিয়েলটস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। নতুন-পুরোনো সব ধরনের ফ্ল্যাট, জমি এবং বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি করছে তারা। মেলায় বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির পাশাপাশি আকিজ বশিরসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী কোম্পানিও তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে। পূবালী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং আইডিএলসিসহ অসংখ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও অংশ নিয়েছে মেলায়। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা তাদের ঋণ সেবা দেওয়ার জন্য দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছেন।
মাহফুজ