খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় রাজেন্দ্র ত্রিপুরা নামে এক সরকারি চিকিৎসকের গাড়িচাপায় টমটম (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) চালকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে পানছড়ি উপজেলার বাসস্টেশন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত টমটমচালক পানছড়ি উপজেলা সদরের পোড়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সুশান্ত চাকমা (৫০)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পানছড়ি থেকে দ্রুত গতিতে ব্যক্তিগত জিপ চালিয়ে ফিরছিলেন খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেন্দ্র ত্রিপুরা। বাস টার্মিনাল এলাকা অতিক্রমের সময় ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশাকে চাপা দেন তিনি। অটোরিকশাচালক ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। নিজেও গুরুতর আহত হন ওই চিকিৎসক। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তবে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন তিনি মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। উদ্ধারের সময় তার শরীরে মদের গন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘেরাও করে ওই চিকিৎসকের ডোপ টেস্টসহ গ্রেপ্তারের দাবি জানান। যদিও তাকে আটক করেনি পুলিশ। পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউল আজম বলেন, ‘হাসপাতালে নিহতের স্বজনরা এসেছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে যদি মামলা করা হয়, তবে তদন্ত সাপেক্ষে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের বলেন, ‘ডাক্তার রাজেন্দ্রর বিরুদ্ধে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর পুরোনো অভিযোগ আমারও জানা। তবে আজ (সোমবার) তিনি কী অবস্থায় গাড়ি চালিয়েছেন তা, এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। এ দুর্ঘটনায় ডাক্তার নিজেও গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনা খতিয়ে দেখার পর মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেন্দ্র ত্রিপুরা ইতিপূর্বেও মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে বহুজনকে আহত করার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় তিনি নিজেও বেশ কয়েকবার আহত হয়েছেন। কিছুদিন আগে তিনি খাগড়াছড়ি-মাটিরাঙা সড়কের আলুটিলা এলাকায় গাড়িচাপা দিয়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করেছেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শহরের আদালত সড়কে শিশুসহ তিনজনকে গুরুতর আহত করেছিলেন। এর আগের বছর জেলা সদর হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় মাতাল হয়ে গাড়ি চালিয়ে এক শিশুকে চাপা দেন তিনি। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ওই শিশুটি।
এমএ/