পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও ধানের অবৈধ মজুতের কারণে চালের দাম বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ মজুতকারীদের বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে অভিযান। দিনাজপুরে অবৈধভাবে মজুত রাখা ৩০০ টন ধান জব্দ করেছে জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুরের বিরলে ওরিয়েন্টাল এগ্রো নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে এসব ধান জব্দ করা হয়।
এ দিন বিকেল ৫টায় জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দেবাশীষ চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে জানান, অবৈধভাবে প্রায় ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ধান মজুত করার অভিযোগ পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় ওরিয়েন্টাল এগ্রোর একটি গুদাম সিলগালা করা হয়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন জানান, একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে দেশের ধান-চালের বাজার অস্থির করে দাম বৃদ্ধি করে। ধান-চালের দাম সহনীয় রাখতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নওগাঁয় ৫ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
প্রশাসনের অভিযানে গত দুদিনে নওগাঁয় অবৈধভাবে ধান-চাল মজুত রাখার অপরাধে পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এ ছাড়া একটি গুদাম সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত বুধবার বিকেলে মহাদেবপুর ও নিয়ামতপুরে অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা জানান, ধানের অবৈধ মজুত রাখার কারণে মহাদেবপুর উপজেলার হাটচকগৌরী এলাকার মেসার্স তাসলিমা চাউল কল মালিককে ৫০ হাজার টাকা, বাগাচাড়া এলাকার মেসার্স থ্রি-স্টার মিল মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সোহাগ বুধবার বিকেলে উপজেলার ওই দুই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালান। এ সময় সিলিং বহির্ভূত মজুত, ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ না থাকায় ও মজুত চাউলের হিসাব সংরক্ষণ না রাখায় দুই প্রতিষ্ঠানে জরিমানা করেন।
অন্যদিকে নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের রাউতারা বাজারের ধান-চাল ব্যবসায়ী বাবু সোনারকে ১ লাখ টাকা, বক্কর সোনার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ৩০ হাজার টাকা ও নেহা ট্রেডার্স নামে আরও এক প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইমতিয়াজ মোরশেদ অভিযান চালান। এ সময় লাইসেন্সবিহীন ধান মজুত, ধারণ ক্ষমতার বেশি ও অবৈধভাবে ধান মজুতের অপরাধে ওই তিন প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া বাবু সোনার নামে ধানের গোডাউন সিলগালা করে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক জানান, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে মজুত করা ধান সঠিকভাবে খোলাবাজারে বিক্রি নিশ্চিত করতে এসিল্যান্ড, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, উপজেলা খাদ্য অফিসার এবং একজন এসআইয়ের সমন্বয়ে একটি টিম করে দেওয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি তদারকি করছেন। অবৈধ মজুতবিরোধী অভিযানের প্রভাবে ধানের সরবরাহ বেড়েছে মিলগুলোতে, যার প্রভাবে চালের দর কমছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।