ছবি : খবরের কাগজ
বরগুনার আমতলী উপজেলায় অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মা-বাবা ও চাচাতো ভাইকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে উত্ত্যক্তকারী জাহিদ মোল্লা ও তার স্বজনরা। আহত স্কুলছাত্রীর বাবা-মা ও চাচাতো ভাই রিমনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মেয়ের মা। ঘটনাটি বুধবার রাতে উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে এক বছর ধরে বখাটে জাহিদ মোল্লা উত্ত্যক্ত করে আসছে। তিন মাস আগে ওই স্কুলছাত্রীকে জাহিদ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এমন দাবি ছাত্রীর বাবার। স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল খাঁনের সহযোগিতায় ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেন। আবার বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে পুনরায় উত্ত্যক্ত করে জাহিদ।
খবর পেয়ে ছাত্রীর বাবা এ ঘটনার প্রতিবাদ করে জাহিদকে মারধর করে বলে দাবি তার খালু সজল আকনের। এ ঘটনার জের ধরে ওইদিন রাতে মেয়ের বাবা ও অন্তঃসত্ত্বা মাকে সালিশ-বৈঠকের কথা বলে ডেকে নেন সজল আকন। পরে সজল আকন, ছালাম আকন, সাইফুল মোল্লা ও বখাটে জাহিদ মোল্লা তাদের লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
এ সময় তাদের রক্ষায় মেয়ের চাচাতো ভাই রিমন এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। এতে তাদের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে ওইদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনার পর থেকে জাহিদ পলাতক রয়েছে।
স্কুলছাত্রীর বাবার বাড়ি ঢাকার সাভার থানার বাজারশোন এলাকায়। তিনি দুই বছর আগে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে জমি কিনে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন।
স্কুলছাত্রীর আহত বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়েকে জাহিদ মোল্লা স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছে। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমাকে, আমার দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। সজল আকন ও ছেলের বাবা সাইফুল মোল্লা আমাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে। আমি তাদের হাতে-পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। আমার বাড়ি এ এলাকায় না হওয়ায় তারা আমাকে বেশ নির্যাতন করছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
সজল আকন স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার ভায়রার ছেলেকে মেয়ের বাবা মারধর করেছে। তাই আমি সালিশ-বৈঠকে বসার কথা বলে তাদের ডেকে এনেছি। কিন্তু তিনি আমার ওপরে হামলা করেছে।’
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, ‘স্কুলছাত্রীর আহত বাবার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ও তার ভাইয়ের ছেলেকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মহিউদ্দিন অপু/জোবাইদা/
-1725781419.jpg)
-1725765860.jpg)
