![মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার](uploads/2024/02/05/1707142279.Antora.jpg)
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) অন্তরা পানুয়া (২২) নামে এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে অন্তরা পানুয়াকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ তুলেছেন তার বাবা।
অন্তরা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ডেন্টাল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি পটুয়াখালীর খলিসাখালী এলাকার অনুকূল চন্দ্র পানুয়ার মেয়ে ও একই জেলার বাসিন্দা তাপস রায়ের স্ত্রী।
নিহতের সহপাঠী ও কোয়ার্টারের বাসিন্দা সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘হোস্টেলে সিট না পাওয়ায় আমরা বাইরের একটি মেসে থাকতাম। ওই মেস ছেড়ে দিয়ে গতকাল রবিবার দুপুরের দিকে শিক্ষক তাহের সুমনের মাধ্যমে আমরা এই কোয়ার্টারে উঠেছিলাম। স্টাফ কোয়ার্টারে উঠেছি বাসা খোঁজার জন্য। সকালে ঘুম থেকে উঠে পানুয়ার কক্ষের দরজা বন্ধ দেখতে পাই। দরজায় টোকা দিয়ে তার ঘুম ভাঙার চেষ্টা করি। ব্যর্থ হয়ে জানাল গ্লাস দিয়ে অন্তরাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, আত্মহত্যা বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
নিহতের বাবা অনুকূল চন্দ্র পানুয়া বলেন, ‘গতকালও আমার মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। তার মধ্যে কোনো ধরনের হতাশ কিংবা অন্য কোনো বিষয় লক্ষ্য করিনি। জামাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে, এমন কথাও কেউ বলেননি। ওকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইএইচটির একাধিক শিক্ষার্থী ও স্টাফ জানান, শিক্ষক তাহের সুমনের নামে স্টাফ কোয়ার্টার ভাড়া নিলেও তিনি থাকেন হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বাইরের একটি বাসায়। স্টাফ কোয়ার্টারের ওই বাসায় বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী ও মেয়েদের কাছে ভাড়া দেন। ভাড়া নেওয়া সঙ্গে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আইএইচটির ইন্সট্রাকশন তাহের সুমন কোনো উত্তর না দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।
স্টাফ কোয়ার্টারে শিক্ষার্থীদের থাকায় বিষয় এবং তাহের সুমনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বিষয়ে আইএইচটির অধ্যক্ষ মানষ কৃষ্ণ কুণ্ডু বলেন, ‘এখানে আমাদের শিক্ষার্থী থাকার কথা নয়। কী কারণে ওখানে তারা থাকেন এটি খতিয়ে দেখব। আর এর পেছনে কারও সম্পৃক্ততা থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, এটি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’