ঢাকা ২৮ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

‘উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত দাম দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে’

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ১১:৫১ এএম
আপডেট: ১৩ মে ২০২৪, ১২:০২ পিএম
‘উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত দাম দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে’
ছবি : খবরের কাগজ

কৃষকদেরকে তাদের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত দাম দিয়ে উৎসাহিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ, আলুসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করলে হয়তো দাম কমে যাবে। কিন্তু এসব পণ্য আমদানি করলে আমাদের দেশের কৃষকরা ভাল দাম পাবেন না। এতে তারা নিরুৎসাহিত হবেন। তাই এসব পণ্যের মৌসুম আসলেই আমরা পণ্যগুলো আমদানি অনুমতি বন্ধ করে দিই। কাজেই কৃষকদেরকে তাদের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত দাম দিয়ে উৎসাহিত করতে হবে। এটাই সরকারের পলিসি।’

রবিবার (১২ মে) নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্ত অংশীজনের সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘ক্রেতা চাইবে কম দামে পণ্য কিনতে। কিন্তু ব্যবসা করতে গেলে লাভ করতে হবে। কিন্তু কেউ যাতে অতি মুনাফা করতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। ব্যবসা শুরু করতে কিছু সার্টিফিকেট লাগে। আবার আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রেও নানা কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। আমদানির অনুমতিপত্র লাগে। আবার কোনো কোম্পানি বা সমিতি খুলতে গেলে রেজিস্ট্রার বা জয়েন রেজিস্ট্রার কোম্পানিতে যেতে হবে। আমাদের যে ব্যক্তিতান্ত্রিক অর্থনীতি তা এসব কোম্পানির ওপর ভর করেই দাঁড়িয়ে যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ছোটখাটো কোম্পানিগুলো ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করতে পারে। তবে বড় ব্যবসা করতে গেলে কোম্পানি খুলতে হবে। আগে একটা কোম্পানি খোলার ক্ষেত্রে দুজন ব্যক্তি লাগতো। ২০২০ সালের আইন অনুযায়ী, একজন ব্যক্তিও একটি কোম্পানি খুলতে পারবেন। রপ্তানিকারক কোন কোন দেশে পণ্য রপ্তানি করলে ব্যবসায়ী লাভবান হবেন তা পরামর্শ দেওয়ার জন্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো রয়েছে।’  

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্নসচিব জসিম উদ্দিন, চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ, চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক নাছরিন আক্তার, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সিঅ্যান্ডএফ অ্যাজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম আকতার হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

তারেক মাহমুদ/জোবাইদা/অমিয়/

যুবদল কর্মী হত্যায় আটক ছাত্রদল নেতা

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৩ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ এএম
যুবদল কর্মী হত্যায় আটক ছাত্রদল নেতা
গ্রেপ্তার শামীম রেজা ও মেহেদী হাসান। ছবি: খবরের কাগজ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় যুবদল কর্মী পিয়াল হাসানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এবার ছাত্রদল নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন র‍্যাব-৬ এর সদস্যরা।

গ্রেপ্তাররা হলেন ঝিকরগাছা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোবারকপুর গ্রামের শামীম রেজা ও একই গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী মেহেদী হাসান।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) র‍্যাব-৬ কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার রাসেল আহমেদ জানান, গত সোমবার রাতে খুলনার চুকনগর ও ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত সোমবার বেনাপোল সীমান্ত ও মোবারকপুর গ্রাম থেকে আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার করে ঝিকরগাছা থানার পুলিশ।
 
গত শনিবার (৯ নভেম্বর) দেড়টার দিকে নিহত যুবদল কর্মী পিয়াল বাজারে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন। পৌর শহরের মিতালী হল রোড এলাকায় তাকে হত্যার উদ্দেশে আসামিরা বোমা নিক্ষেপ করেন। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে ঝিকরগাছা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকলে সেখানে আসামিরা দা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিয়ালের গলা, হাতে, পায়ে ও পিঠে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা করলে মামলাটি নিয়ে র‍্যাব-৬ সদস্যরা ছায়া তদন্তে নামেন। পরবর্তী সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান চালানো হয়।
 
কমান্ডার রাসেল জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি শামীম রেজা ঢাকার উদ্দেশে পালানোর জন্য খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে যান। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মেহেদী হাসান ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও মূলত ছাত্রদল নেতা শামীমের পরিবারের সঙ্গে নিহত পিয়ালের পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গত ৫ আগস্ট ঝিকরগাছা বাজারে আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে পৌর ছাত্রদলের সভাপতি শামীম রেজার সঙ্গে যুবদলের কর্মী পিয়াল হাসানের বিরোধ হয়। সেই বিরোধের জেরে পিয়ালের নেতৃত্বে কয়েকজন শামীমের বাবা কামরুল ইসলামকে ছুরি মেরে জখম করেন। ওই ঘটনায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় পিয়ালসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। দেড় মাস কারাভোগ করে গত ৮ নভেম্বর জামিনে মুক্ত হন তারা। পরদিন ৯ নভেম্বর পিয়াল রেলস্টেশন এলাকায় শামীমের কাছে গিয়ে ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে আসেন।

নিহত পিয়ালের ভাই সুমন হাসান বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শামীমের বাবা আহত হওয়ার ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে পিয়াল শামীমের কাছে মাপ চাইতে যান। কিন্তু শামীম মাপ না করে তার লোকজন ডেকে আমার ভাইকে হত্যা করেছেন। আমরা খুনিদের ফাঁসি চাই।’
 
এদিকে হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে উপজেলা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম রেজার সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

পদত্যাগ করা শিক্ষককে ফেরাতে ‘অর্থের বিনিময়ে’ বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
পদত্যাগ করা শিক্ষককে ফেরাতে ‘অর্থের বিনিময়ে’ বিক্ষোভ
নারায়নগঞ্জ

প্রভাব বিস্তার, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পদত্যাগে বাধ্য হন রূপগঞ্জের ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল মোল্লা। টাকার বিনিময়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী তার পক্ষ নিয়ে আন্দোলন করেন।

মঙ্গলবার ( ১২ নভেম্বর) দুপুরে পদত্যাগ করা ওই শিক্ষকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী স্থানীয় লোকজন নিয়ে স্কুলের ভেতরে আন্দোলনের চেষ্টা করে। এর আগে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিতব্য দশম শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি ও গালিগালাজ করে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দেয় তারা। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেনি।

ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন বলেন, ‘গত ১৮ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও ভুলতা স্কুলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আউয়াল মোল্লা পদত্যাগ করেন। এর পর থেকে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে নানা চক্রান্ত শুরু করেন তিনি।

এলাকার লোকজনসহ শিক্ষার্থীদের টাকা দিয়ে আন্দোলনসহ নানা অপকর্ম করাচ্ছেন আব্দুল আউয়াল মোল্লা। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দশম শ্রেণির পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের ৬ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মেয়েদের অশ্লীল কথা বলে হল থেকে বের করে দেন। এ নিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।’

খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল আলম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় উত্তেজিত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে আব্দুল আউয়াল মোল্লার চক্রান্তের বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, ‘আউয়াল মোল্লা স্কুলের ভেতরে ক্যান্টিন ও টেইলার্স ভাড়া দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের আয়ের প্রায় ১৯ কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও জানা গেছে, আব্দুল আউয়াল মোল্লা, উমা ম্যাডাম, আক্তার মোল্লা, আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সাবেক এমপির প্রভাব খাটিয়ে জোর করে ও স্বাক্ষর জাল করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হচ্ছে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল মোল্লা পদত্যাগ করেছেন। তার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আন্দোলন সংগ্রাম করে কোনো লাভ হবে না।’

কীর্তনখোলা থেকে পুলিশের স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ এএম
কীর্তনখোলা থেকে পুলিশের স্ত্রীর লাশ উদ্ধার
পুলিশ পরিদর্শকের স্ত্রী আলো রানি মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের কাশিপুরের ভাড়া বাসা থেকে নিখোঁজের এক দিন পর আলো রানি মজুমদার নামে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ।

কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় এই লাশ উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নৌপুলিশের সদর থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার। আলো রানি মজুমদার (৩৭) বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নরেরকাঠি গ্রামের কৃষ্ণকান্ত মজুমদারের মেয়ে। তার স্বামী অনুপ রায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। তারা নগরীর কাশিপুর পাসপোর্ট অফিসের পাশে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। স্বজনরা জানান, আলো রানি মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন।

বরিশাল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘৯৯৯-এ খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে শেরেবাংলা মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

বরিশাল সদর নৌ-থানার এসআই মো. আসাদুল আল গালিব জানান, সোমবার রাতে বরিশাল নৌবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ। রাতে খবর পেয়েছেন, লঞ্চ থেকে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে।

পুলিশের এএসপির বিরুদ্ধে জায়গা দখলের সত্যতা পেল প্রশাসন

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ এএম
পুলিশের এএসপির বিরুদ্ধে জায়গা দখলের সত্যতা পেল প্রশাসন
চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় পুলিশের এক এএসপি’র বিরুদ্ধে জোরপূর্বক প্রতিবেশির জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের সত্যতা পেয়েছে উপজেলা ভূমি প্রশাসন। 

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহরাজ শারবীন।

জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত এএসপি হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদের বাসিন্দা নুসরাত ইয়াছমিন টিসাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৭ মে চট্টগ্রামের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নতুন ভূমি আইনে ফৌজদারি অভিযোগ (সি আর (৫০৪/২৪) মামলা করেন মোহাম্মদ শফিউল আজম চৌধুরী (৫৬)।

এদিকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিরোধীয় জমিতে জোরপূর্বক পাকা ঘর নির্মাণ কাজের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন ভুক্তভোগী শফিউল আজমের ভাই ডা. মোহাম্মদ মাহবুব উল আলম চৌধুরী। শুনানি শেষে বিবাদীদের নির্মাণ কাজের ওপর আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থিতিবস্থা বজায় রাখার জন্য হাটহাজারী থানা ওসিকে নির্দেশ দেন। অভিযোগ উঠেছে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ওই পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে নির্মাণকাজ অব্যাহত রয়েছে।  

আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি বিরোধীয় জায়গা সরেজমিন তদন্ত করেন উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার সার্ভেয়ার।

প্রতিবেদনে হাটহাজারীর এসিল্যান্ড উল্লেখ করেন, বাদীর পুকুর ঘাটের কিছু অংশ ভেঙে বিবাদীরা পাকা ভবনের আরসিসি পিলার নির্মাণ করেছেন। বাদীর সীমানা দেয়াল ছাড়িয়ে আরও ছয় ফুটের একটি সানশেড নিমার্ণ করেছেন বিবাদীরা। এছাড়া বিবাদীরা বাদীর ৩৩৩ শতাংশ জমি দখলে নিয়ে পাকা ভবন নির্মাণ করে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৮৭ সালের ১৪ আগস্ট ৪০০ একর জমি দাবি করেন বিবাদীরা। কিন্তু ওই দাগে ১৭০০ একর জমি বাদীর বাবা আবদুল জলিল ১৯৬৩ সালের ১৪ অক্টোবর ২৮২২ নম্বর রেজিস্ট্রি দলিলমূলে কিনেন। জলিলের নামেই বিএস খতিয়ান (৪৫০) চূড়ান্ত প্রচার হয়। 

অপরদিকে পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক প্রতিবেশির জায়গা দখলের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে গত ৮ নভেম্বর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করেছেন পিবিআই’র একজন ডিআইজি এবং সংস্থাটির জেলা ইউনিটের পুলিশ সুপার শেখ জয়নুদ্দিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিবিআই জেলা ইউনিটের এক কর্মকর্তা জানান, তদন্তে পুলিশ কর্মকর্তা নুসরাত ইয়াছমিন টিসা প্রভাব খাটিয়ে প্রতিবেশীর জায়গা জোরপূর্বক দখলে নিয়ে ভবন নির্মাণের সত্যতা পায় পিবিআই। 

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা নুসরাত ইয়াছমিন টিসা’র পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ গ্রামের নাছির চৌধুরী বাড়িতে। তার বাবার নাম মৃত আবুল বাশর। অভিযোগকারী শফিউল আজিম চৌধুরীও একই বাড়ির বাসিন্দা।

এস এম ইফতেখারুল/জোবাইদা/

পড়ে আছে আড়াই শ কোটির রেলপথ

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ এএম
পড়ে আছে আড়াই শ কোটির রেলপথ
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। ছবি: খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফ

আন্তদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা ব্যয়ে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বহুল কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথ উদ্বোধনের এক বছর পেড়িয়ে গেলেও এখনো ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি!

এ ছাড়া রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে কবে নাগাদ এ পথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হবে তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। যদিও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, এই রেলপথ চালু হলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হবেন। এ ছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্যে ভাটা পড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আন্তদেশীয় এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ অংশের নির্মাণকাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে দেড় বছরের এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ছয় বছরেরও বেশি।

জানা গেছে, রেলপথ পুরোপুরি প্রস্তুত থাকায় কয়েক দফা ট্রায়াল রান শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই রেলপথের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তখনো ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবন, প্ল্যাটফরম এবং সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এরই মধ্যে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এই রুটে ভারত থেকে অর্ধশতাধিক পণ্য আমদানি এবং সব ধরনের পণ্য রপ্তানির সুযোগ ছিল বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।

অবশেষে চলতি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকশি জানান, বিভিন্ন সংকটে প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়েছে। এখন কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। ফলে প্রকল্পটি সরকারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে রেলপথটি নির্মিত হলেও কার্যত এটি ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হবে। উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে কলকাতা বা অন্য রাজ্যগুলোর দূরত্ব অনেক বেশি। ফলে পণ্য পরিবহনে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি খরচও বেশি হয়। মূলত ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এই রেলপথ দিয়ে নিজেদের পণ্য পরিবহন করবেন। এতে করে তাদের ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হবেন। এ ছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তখন ভারতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণও কমে যাবে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী রাজীব ভূঁইয়া মনে করেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের পণ্য রপ্তানি কমেছে। বর্তমানে যে কয়েকটি পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হয় তার মধ্যে রড ও সিমেন্ট অন্যতম।

‘মূলত ত্রিপুরার ব্যবসায়ীদের এ দুই পণ্য ভারতের অন্য রাজ্য থেকে আনতে খরচ বেশি পড়ে। তাই তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেন। তবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালু হলে তারা কম খরচে রড ও সিমেন্টের মতো চাহিদাসম্পন্ন পণ্যগুলো পরিবহন করতে পারবেন। এতে স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে’, বলেন রাজীব ভূঁইয়া।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসিবুল হাসান বলেন, ‘রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য খুব বেশি বাড়বে না। তবে পণ্য আমদানির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব হবে। যদি সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়- তা হলে যখন যে পণ্যের চাহিদা, সেই পণ্য রেলে কম খরচে আমদানি করে ব্যবসায়ীরা মুনাফা করতে পারবেন। এতে সরকারেরও রাজস্ব বাড়বে।’

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, ‘কখন রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলবে সেটি সরকারি সিদ্ধান্ত। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য শুরুর বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি হস্তান্তর করলে তখন বাণিজ্য শুরুর বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হবে।’