যশোরের অভয়নগর উপজেলার বেসরকারি নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালে ‘ভুল অপারেশনে’ প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ৪ লাখ টাকায় মীমাংসা হয়েছে বলে স্থানীয়া জানিয়েছেন। এটি প্রচার হওয়ার পর তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার (১ জুলাই) রাতে মৃত নারী ইতি বেগমের স্বজনদের সঙ্গে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গোপন বৈঠকের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকায় রফাদফা হয়। ফলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মনজুরুল মোরশেদ পার পেয়ে গেলেন। একটি মানুষের জীবনের মূল্য ৪ লাখ টাকায় রফা হওয়ায় অভয়নগর উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড়ে উঠেছে।
অনেকে আক্ষেপের সঙ্গে জানান, এমনভাবে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভুল চিকিৎসায় মানুষের মৃত্যুর পর যদি টাকার মাধ্যমে রফাদফা করে ধামাচাপা দেওয়া হয়। তবে ভবিষ্যতে ওই সব বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে অনিয়ম-অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
স্থানীয়রা নওয়াপাড়ায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে রোগীর মৃত্যুসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ তদন্ত করে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
মীমাংসার বিষয়ে নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালের ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ওই নারীর স্বজনদের সঙ্গে মীমাংসা হয়েছে। তবে কত টাকায় মীমাংসা হয়েছে তা জানি না।’
নওয়াপাড়া পৌরসভার সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর রোকেয়া বলেন, ‘আমি মৃত নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ টাকা দাবি করেছিলাম। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ৪ লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসা করে নিয়েছে।
অভয়নগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার অলিয়ার রহমান বলেন, ‘সামাজিকভাবে মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে মীমাংসার আলোচনা চলছে, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা হাসপাতাল সিলগালা করে দিয়েছি। মীমাংসার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
গত ৩০ জুন নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালে ডাক্তার মনজুরুল মোরশেদের ভুল অপারেশনে ধোপাদী গ্রামের আরশাব শেখের মেয়ে ইতি বেগমের (২২) মৃত্যু হয়। এই খবর নওয়াপাড়া বাজারে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন শ্রেণির উত্তেজিত জনগণ ওই বিতর্কিত বেসরকারি হাসপাতাল ঘেরাও করে জড়িত ডাক্তারের কঠিন শাস্তির জন্য বিক্ষোভ করেন।