নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পৌর সদরের গারিষাপাড়া, গোপালের মোড়সহ বেশ কিছু এলাকায় একই রাতে ধানের চাতাল, মিল, কারখানা ও বাড়ির প্রায় ৩৬টি বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করা হয়েছে।
চুরি হওয়া মিটারবাক্সের স্থানে চোরেরা পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে যায় চিরকুট। সেখানে লেখা রয়েছে, চুরি যাওয়া মিটার পেতে ফোন করুন (০১৮৫৬-৬৬৫৪৯২)।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ওই নম্বরে কল করলে বিকাশে টাকা চাওয়া হয়। টাকা পরিশোধ করলে তাদের বলে দেওয়া জায়গায় পাওয়া যায় চুরি যাওয়া মিটার। কখনো আবার ওই মিটারের নিচে একটি লাল বা অন্য রঙের ফিতা বেঁধে দিতে বলে চোরেরা, যেন দ্বিতীয়বার ওই মিটার তারা আর চুরি না করে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে গুরুদাসপুরের বেশ কিছু এলাকায় গিয়ে চুরি হওয়া মিটারের স্থানে ফোন নম্বর লেখা কাগজ দেখা যায়।
ভুক্তভোগীদের দাবি, বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এসব এলাকার ৩৬-৪০টি মিটার চুরি হয়েছে।
গারিষাপাড়া এলাকার ধান ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘শুক্রবার সকালে আমার ধানের চাতালে এসে দেখি মিটার নেই। মিটারের নিচে পলিথিনে মুড়িয়ে রাখা চিরকুটে দেওয়া নম্বরে কল করলে একজন কথা বলেন। এরপরই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। বিকেল পর্যন্ত ওই নম্বরটি বন্ধ থাকায় কেউই কোনো মিটার ফেরত পাননি।’
একই এলাকার ধান ব্যবসায়ী ও চাতাল মালিক রবিউল করিম জানান, দীর্ঘদিন ধরে এমন ঘটনা ঘটছে। মোবাইলে যোগাযোগ করে চার থেকে ৫ হাজার টাকা দিলে চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পাওয়া যায়। এর আগে একবার তার মিলের মিটার চুরি হয়। ৪ হাজার টাকা দেওয়ার পর নদীর পাড়ে মিটারটি পান।
বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারপাড়ার বাসিন্দা সোহেল জানান, প্রায় ছয় মাস আগে তার বাড়ির মিটার চুরি হয়েছিল। পরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে তারা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরে ১ হাজার ৫০০ টাকা ফি জমা দিয়ে তিনি আবারও মিটার পান।
একই এলাকার মিল মালিক কামরুল জানান, প্রায় ছয় মাস আগে তার চাল মিল থেকে চিরকুটে মিটার চোরের নম্বর পান। পরে ওই নম্বরে যেগাযোগ করে ৫ হাজার টাকা দিয়ে তিনি মিটারটি ফেরত পান।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে শুনে এ বিষয়ে অভিযোগ চেয়েছিলাম। অভিযোগ পেলে, নম্বরটির ডিটেইলস বের করে চোর শনাক্ত করা যেত।’
কামাল মৃধা/পপি/অমিয়/