ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মাথা ন্যাড়া করে দুধ দিয়ে গোসল

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মাথা ন্যাড়া করে দুধ দিয়ে গোসল
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মাথা ন্যাড়া করে দুধ দিয়ে গোসল করেন হাসেম আল ওসামা// খবরের কাগজ

চার বছর ধরে এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল যুবকের। আর সেই প্রেমিকা দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ইতি টেনে অন্যত্র বিয়ে করেন। পরে রাগে ও ক্ষোভে নিজের মাথা ন্যাড়া করে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন ওই যুবক। সেই সঙ্গে শপথও করেছেন, জীবনে আর কোনো মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে যাবেন না, বিয়েও করবেন না।

সোমবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবকের নাম হাসেম আল ওসামা (২০)। তিনি উপজেলার শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে ও সলঙ্গা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রেমের বিচ্ছেদের বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে চেয়েছিলেন হাসেম। পরিবারের কথা ভেবে এবং বন্ধুদের পরামর্শে প্রেমের ব্যর্থতার শোক কাটাতে নিজের মাথা ন্যাড়া করে গোলাপ ফুলের পাঁপড়ির সঙ্গে ২০ লিটার দুধ মিশিয়ে গোসল করেন। শুধু মাথা ন্যাড়া আর গোসল করেই থেমে থাকেনি হাসেম। সেই সঙ্গে শপথও করেছেন, জীবনে আর কোনো মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে যাবেন না, বিয়েও করবেন না।

এ বিষয়ে হাসেম বলেন, ‘কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার এক মেয়ের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চার বছর ধরে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সবকিছু মেনে নিয়ে সে আমাকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আমাকে ছাড়া জীবনে অন্য কাউকে বিয়ে করবে না বলে শপথও করেছিল। কিন্তু আমি বেকার, সেই অজুহাত দেখিয়ে কয়েক দিন আগে সে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায়। বিষয়টি আমি মেনে নিতে পারিনি। ভেবেছিলাম আত্মহত্যা করব। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। পরে ২০ লিটার দুধ দিয়ে গ্রামবাসীর সামনে গোসল করেছি। শপথও করেছি, জীবনে আর কোনো দিনও প্রেম করব না।’ 

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শুনেছি ছেলেটির সঙ্গে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। এতে রাগে-ক্ষোভে হাসেম মাথা ন্যাড়া করে দুধ দিয়ে গোসল করে।’

ঈদযাত্রা ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে বাড়ছে গাড়ির চাপ

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে বাড়ছে গাড়ির চাপ
ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে বাড়ছে গাড়ির চাপ। বুধবার (৪ জুন) ভোর থেকে এই মহাসড়কে গাড়ির লম্বা লাইন দেখা যায়। অনেকে বাসে সিট না পেয়ে ট্রাক বা পিকআপে বাড়ি যাচ্ছেন।

সড়কপথে ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ভোরে যমুনা সেতু সংযোগ সড়কে একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও গাড়ি বিকল হওয়ায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো সরানোর পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

ভোর থেকে বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন ঘরমুখো মানুষ। এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। উত্তরের ঘরমুখো মানুষ বলছেন, ৩০০ টাকার ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন যাত্রীরা।

সকাল থেকে মহাসড়কে গণপরিবহনের চেয়ে ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। গণপরিবহন না পেয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে খোলা ট্রাকে করে গন্তব্য পৌঁছাতে দেখা গেছে যাত্রীদের। অনেকেই গরুবাহী ফিরতি ট্রাকেও বাড়ি ফিরছেন।

বেলা ১১টায় মহাসড়কের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শরীফা হক।

এ সময় তিনি বলেন, ঘরমুখো মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারেন সেজন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় মোবাইলকোর্ট বসানো হয়েছে। পরিবহন কর্তৃপক্ষ যাতে বাড়তি ভাড়া না নিতে পারে সেজন্য অভিযান চলমান রয়েছে।

বাসচালকরা বলছেন, উত্তরবঙ্গ থেকে খালি গাড়ি নিয়ে ঢাকায় নিয়ে যেতে হয়। তাই কিছুটা ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে। আর যানবাহনের চাপ বাড়লেও বর্তমানে সড়কের অবস্থা স্বাভাবিক।

যমুনা সেতুর পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েজ আহমেদ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও যানজট নেই। মহাসড়কে পর্যাপ্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে দুই কোটি ৮৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর বিপরীতে ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

বুধবার (৪ জুন) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার ৫০ টাকা।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর উপর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে।সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে, যেন মানুষ নিবিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে যানজট নেই। মানুষ যেন নিবিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারেন সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জুয়েল রানা/অমিয়/

পঞ্চগড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কলেজছাত্রসহ ৩ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
পঞ্চগড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কলেজছাত্রসহ ৩ জনের মৃত্যু
পঞ্চগড়

পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকায় ভুট্টাখেতে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কলেজছাত্রসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (৪ জুন) সকালে এ দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মৃতরা হলেন- বেংহারি পাড়ার সফিউল ইসলামের ছেলে রব্বানী (৩৫), লিয়াকত আলীর ছেলে শাহীন ইসলাম (৪৫) এবং কলেজছাত্র জামেদুল ইসলাম।

তারা ১৪ জনের একটি দল ফকিরের হাট এলাকায় চুক্তিভিত্তিক একটি ভুট্টাখেতে কাজ করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাজের সময় খেতে বিদ্যুতের একটি ছেঁড়া তার পড়ে ছিল। তখন লাইনে বিদ্যুৎ না থাকলেও, হঠাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলে কয়েকজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জামিদুল ইসলাম। তিনি স্থানীয় একটি কলেজে অর্নাস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

আহত রব্বানী, শাহীন এবং শাহীনের ভাই জয় ইসলামকে হাসপাতালে নেওয়া হলে পথে রব্বানী ও শাহীন মারা যান। গুরুতর আহত জয় ইসলামকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহত জয় বলেন, “বিদ্যুতের তারটি মাটিতে পড়ে ছিল। তখন বিদ্যুৎ ছিল না। হঠাৎ আমার পা ঝিনঝিন করতে থাকে, বুঝতে পারি আমরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হচ্ছি। সঙ্গে সঙ্গে দৌড় দেই। পরে বিদ্যুৎ অফিসে বারবার ফোন দিই, কিন্তু তারা ফোন ধরেনি। পরে আরও কয়েকজন ফোন দিলে বিদ্যুৎ বন্ধ করা হয়।”

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবুল কাশেম জানান, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে দুইজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুরে পাঠানো হয়েছে।”

সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

রনি মিয়াজী/অমিয়/

ব্যস্ত সময় পার করছেন গোপালগঞ্জের কামার শিল্পীরা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
ব্যস্ত সময় পার করছেন গোপালগঞ্জের কামার শিল্পীরা
ছবি: খবরের কাগজ

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন গোপালগঞ্জের কামার শিল্পীরা। সারা বছর কাজ না থাকলেও ঈদের কয়েক দিন কর্মব্যস্ত থাকেন তারা। আর সেই সঙ্গে তাদের আয়ও ভালো হয়। 

আর মাত্র কয়েকদিন বাকি ঈদুল আজহার। জেলার সর্বত্র কয়েক হাজার পশু কোরবানি হবে। এসব পশু কাটতে দরকার হবে ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও সরগরম হয়ে উঠেছে জেলার কামারপাড়াগুলো। এতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে কর্মকারদের। কেউ হাপর টানছেন, কেউ হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। সারা বছর কাজ কম থাকলেও এ সময়টা ব্যস্ত সময় কাটান তারা। তাদের তৈরি দা, চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম মান অনুযায়ী কেজি দরে আবার পিস হিসেবেও বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৩৫০, বটি ৩৫০ থেকে ৫০০ এবং পশু জবাইয়ের ছুরি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। 

পশু কোরবানি দিতে ও মাংস কাটার সরঞ্জামের জন্য ক্রেতারা ভিড় করছেন স্থানীয় কামারদের কাছে। বানাচ্ছেন দা, চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। আবার অনেকে তাদের পুরোনো ছুরি, চাপাতি ধারালো করে নিচ্ছেন। জেলার সদর উপজেলার হায়াত আলী বলেন, ‘প্রতিবছর নতুন সরঞ্জাম বানানোর পাশাপাশি পুরোনোগুলো ধার দিতে কামারপল্লিতে আসি। জেলার চন্দ্রদিঘলীয় মাদ্রাসা, গোপীনাথপুর মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় পশু কোরবানি দেওয়া হবে। এসব পশু কোরবানি দিতে সরঞ্জাম বানাতে এখানে এসেছি। মজুরি গত বছরের মতোই নিচ্ছে।’

একই এলাকার মিটু শরীফ বলেন, ‘কয়েকদিন পরই ঈদুল আজহা। গরু-ছাগল কোরবানি এবং মাংস কাটার জন্য চাকু, ছুরি ও চাপাতি কিনতে কামারপাড়ায় এসেছি।’ কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া বাজারের কর্মকার কেশব ভক্ত বলেন, ‘এক সময় কামারদের কদর ছিল। বর্তমানে আধুনিক মেশিনে ছুরি, চাপাতি ও দা তৈরি হচ্ছে। ফলে আমাদের তৈরি সরঞ্জামের চাহিদা কমে গেছে। ঈদুল আজহার সময় কিছু কাজ হলেও সারা বছরই কষ্টে চলতে হয়। এ কারণে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন।’

সদর উপজেলার কামারপল্লির খোকন কর্মকার বলেন, ‘ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতার চাপও বাড়ছে। কেউ চাপাতি, কেউ ছুরি আবার কেউ দা বানাতে ভিড় করছেন। কাজের চাপ থাকায় এক প্রকার থাওয়া-দাওয়া ও ঘুম ছেড়ে দিতে হয়েছে। সারা বছর টুকটাক কাজ করে কোনোভাবে সংসার চালিয়ে নিই। এবারের ঈদ অনেক আয় হবে বলে আশা করছি।’

বরিশালে পশুর হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শক বেশি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:০১ পিএম
বরিশালে পশুর হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শক বেশি
ফাইল ছবি

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বরিশালে বসতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। গরুর দাম গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত কেনাবেচা হচ্ছে না। গরু বিক্রেতারা জানান, হাটে আসা বেশির ভাগ মানুষ গরুর দাম শুনে চলে যান। এখন তারা বাজার যাচাই করছেন। হাটে আসা মানুষ জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছরে গরুর দাম খানিকটা বেশি মনে হয়।

বরিশালের বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, গত বছর ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় যে গরু বিক্রি হয়েছে, এবারে একই আকারের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৮৫ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। আবার মাঝারি সাইজের গরু গত বছর যা বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ হাজার টাকায়, সেই আকারের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা। তাই হাটে অসংখ্য গরু আসা সত্ত্বেও কেনাবেচা প্রায় শূন্যের কোঠায়।

বরিশাল নগরীতে তিনটিসহ জেলার ১০ উপজেলায় এ বছরে ৬৩টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এসব হাটে বরিশালের খামারিসহ যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা গরু নিয়েছেন। 

চরমোনাই গরুর হাটে আসা ক্রেতা মুশফিকুর রহমান বলেন, গত বছর যে গরু ৮০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম, সেই গরুর দাম এ বছরে চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়া গরুর ব্যাপারীরা বরিশালের হাটগুলোতে ক্ষণে ক্ষণে 
নানা অজুহাতে গরুর দাম বাড়াচ্ছেন।

নগরীর বাঘিয়ার গরুর হাটে আসা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর গরুর দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে। তাই বাজার যাচাই করছি। ঈদের এখনো বাকি আছে। বিভিন্ন হাটে গরুর দাম যাচাই করে কোরবানির আগের দিন যেকোনো হাট থেকে বাজেট অনুসারে গরু কিনব।’ 

কুষ্টিয়া থেকে বানারীপাড়ার গুয়াচিত্রার হাটে আসা ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত সোমবার ১২টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছি। একটিও বিক্রি হয়নি। ক্রেতারা আসছেন। দাম দর করছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী দাম বলছেন না। উৎপাদন খরচের চেয়েও দাম কম বলছেন তারা।’

চরমোনাই হাট ইজারাদারের সহযোগী বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতাদের এমন বাস্তবতায় বিপাকে পড়েছেন হাট ইজারাদাররাও। এবারে গৃহস্থ পশু আসছে না। যারাই হাটে গরু নিয়ে আসছেন, তারা ব্যাপারী। এ কারণে কেউ দাম ছাড়ছেন না। ফলে কেনাবেচার অবস্থা খারাপ। পাশাপাশি কোরবানির কয়েক দিন বাকি থাকায় ক্রেতারাও বিভিন্ন বাজার যাচাই করছেন। ফলে হাটে আসা ক্রেতার চেয়ে দর্শক বেশি। তবে আশা রাখি, দু-এক দিনের মধ্যে এই অবস্থার 
পরিবর্তন হবে।’

এদিকে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখারের কালী বাজারের শাকিল সুমনের বিশাল দেহী গরু ফনী-২ বিক্রি করতে না পেয়ে গত শনিবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে গরুটি চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকার পশুর হাটে রয়েছে। ওই হাটে নগরের সবচেয়ে বড় ও নামিদামি কোরবানির পশু বিক্রি হয়।

রাজবাড়ীতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর খোঁজ চেয়ে মানববন্ধন

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম
রাজবাড়ীতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর খোঁজ চেয়ে মানববন্ধন
ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র গত ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ছেলের খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার ও এলাকাবাসী তার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে পাংশা পৌর শহরের আবদুল মালেক প্লাজার সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

নিখোঁজ আব্দুল্লাহ ওরফে তামিম উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের সাঁজুরিয়া গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। সে 
স্থানীয় সরিষা-প্রেমটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র।

গত ২০ মে সকালে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে সে বাড়ি থেকে বের হয়। তবে স্কুলে পৌঁছায়নি এবং দিন শেষে আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও তার কোনো খোঁজ পায়নি। 

তামিমের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলেকে আজ ১৫ দিন ধরে দেখি না। কোথায় গেল, কে নিয়ে গেল, কিছুই জানি না। আমার ছেলের মুখটা আবার দেখতে চাই, আমি তাকে ফেরত চাই। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি আমার ছেলেকে খুঁজে দিন।’

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৫ দিন ধরে তামিম নিখোঁজ, এটি শুধু তার পরিবারের নয়, আমাদের সমাজের উদ্বেগের বিষয়। 

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘নিখোঁজ ছেলেটিকে উদ্ধারে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন।’