‘রাতে বাবার খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ দেই। তারপর ঘুমিয়ে গেলে বাবাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করি।’
খুলনার দৌলতপুর থানায় হাজির হয়ে নিজের বাবাকে এইভাবে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার দাবি করেছে সুমাইয়া বিনতে কবির নামের এক কিশোরী। গত ৪ জুলাই শেখ হুমায়ুন কবির নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর ১২ জুলাই রাতে সুমাইয়া থানায় হাজির হয়ে জানায়, বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ও বালিশচাপা দিয়ে সে হত্যা করেছে। ওই কিশোরীকে বর্তমানে কেএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তবে পরিবারের সদস্যরা বলছেন, হঠাৎ করেই বাবার মৃত্যুতে মানসিক আঘাত পেয়ে এ ধরনের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে পারে সুমাইয়া।
জানা যায়, দৌলতপুর থানার দেয়ানা উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত শেখ হুমায়ুন কবির নামাজি মানুষ ছিলেন। প্রতিদিনের মতো ৪ জুলাই দৌলতপুর দেয়ানা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে তিনি মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। তবে তিনি রাতে মসজিদে এশার নামাজ পড়তে আসেননি। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিবেশীরা জানতে পারেন রাতে ঘুমের মধ্যে স্টোক করে হুমায়ুন কবির মারা গেছেন।
তবে গোসল করানোর সময় তার বাম হাতের বাহুতে দুটি ছোট ছিদ্র দেখা যায়। তখন অনেকে সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করেন। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যদের আচরণ দেখে অনেকের মনে সন্দেহ হয়। পরিবারের প্রধান ব্যক্তির মৃত্যুর পরও পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিক হাসিখুশি ছিল। তবে সুমাইয়া থানায় এসে বাবাকে হত্যার দাবি করলে ঘটনা নতুন মোড় নেয়।
এদিকে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর বিশ্বাস বলেন, ‘‘সুমাইয়া বিনতে কবির অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। সে একবার বলছে, ‘বাবাকে রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছি।’ আবার পরক্ষণেই বলছে, ‘আমি বাবাকে হত্যা করিনি, আমার ঘাড়ে জিন আছে, সেই জিন হত্যা করেছে।’ তার অসংলগ্ন কথাবার্তায় আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি।”
হুমায়ুন কবিরের বড় মেয়ে মরিয়ম বলেন, ‘বাবার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশার ভেতরে আছি। এখনো মামলা করার সিদ্ধান্ত নেইনি। তার মা দাবি করছেন, ছোট মেয়ের মানসিক সমস্যা আছে। তিন বছর আগে তাকে একবার মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়েছিল।’ সুমাইয়া চলতি বছরে দৌলতপুরের একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে।