ঢাকা ১০ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
English

‘বাবাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছি’

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
‘বাবাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছি’

‘রাতে বাবার খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ দেই। তারপর ঘুমিয়ে গেলে বাবাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করি।’ 

খুলনার দৌলতপুর থানায় হাজির হয়ে নিজের বাবাকে এইভাবে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার দাবি করেছে সুমাইয়া বিনতে কবির নামের এক কিশোরী। গত ৪ জুলাই শেখ হুমায়ুন কবির নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর ১২ জুলাই রাতে সুমাইয়া থানায় হাজির হয়ে জানায়, বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ও বালিশচাপা দিয়ে সে হত্যা করেছে। ওই কিশোরীকে বর্তমানে কেএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তবে পরিবারের সদস্যরা বলছেন, হঠাৎ করেই বাবার মৃত্যুতে মানসিক আঘাত পেয়ে এ ধরনের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে পারে সুমাইয়া।

জানা যায়, দৌলতপুর থানার দেয়ানা উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত শেখ হুমায়ুন কবির নামাজি মানুষ ছিলেন। প্রতিদিনের মতো ৪ জুলাই দৌলতপুর দেয়ানা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে তিনি মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। তবে তিনি রাতে মসজিদে এশার নামাজ পড়তে আসেননি। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিবেশীরা জানতে পারেন রাতে ঘুমের মধ্যে স্টোক করে হুমায়ুন কবির মারা গেছেন।

তবে গোসল করানোর সময় তার বাম হাতের বাহুতে দুটি ছোট ছিদ্র দেখা যায়। তখন অনেকে সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করেন। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যদের আচরণ দেখে অনেকের মনে সন্দেহ হয়। পরিবারের প্রধান ব্যক্তির মৃত্যুর পরও পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিক হাসিখুশি ছিল। তবে সুমাইয়া থানায় এসে বাবাকে হত্যার দাবি করলে ঘটনা নতুন মোড় নেয়।

এদিকে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর বিশ্বাস বলেন, ‘‘সুমাইয়া বিনতে কবির অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। সে একবার বলছে, ‘বাবাকে রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছি।’ আবার পরক্ষণেই বলছে, ‘আমি বাবাকে হত্যা করিনি, আমার ঘাড়ে জিন আছে, সেই জিন হত্যা করেছে।’ তার অসংলগ্ন কথাবার্তায় আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি।”

হুমায়ুন কবিরের বড় মেয়ে মরিয়ম বলেন, ‘বাবার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশার ভেতরে আছি। এখনো মামলা করার সিদ্ধান্ত নেইনি। তার মা দাবি করছেন, ছোট মেয়ের মানসিক সমস্যা আছে। তিন বছর আগে তাকে একবার মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়েছিল।’ সুমাইয়া চলতি বছরে দৌলতপুরের একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে।

চট্টগ্রামে ১৪ হাজার ইয়াবাসহ মাদককারবারি গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০১:২৩ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
চট্টগ্রামে ১৪ হাজার ইয়াবাসহ মাদককারবারি গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার মাদককারবারি মো. মারুফ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী স্টেশনে চট্টগ্রামবাসী একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে তল্লাশি চালিয়ে ১৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ এক মাদককারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোহাজারী পৌরসভার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারী স্টেশনে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় বাসটি জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার মাদককারবারি মো. মারুফ (২১) চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, চট্টগ্রামগামী একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবাসহ মাদককারবারি মো. মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সালমান/

চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে শিক্ষকদের কক্ষে শিক্ষার্থীদের তালা

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১০:০৭ এএম
চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে শিক্ষকদের কক্ষে শিক্ষার্থীদের তালা
চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল।

বৈঠকের সময় পেছানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের অপটোমেট্রি বিভাগের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের রুমে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করেছেন। 

সোমবার (২৩ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত তারা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় অংশ নেন ১২০ জনের বেশি শিক্ষার্থী। 

এর আগে গত ১৯ জুন পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতাল ক্যাম্পাসেই চার দফা দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইনস্টিটিউট অব কমিউনিটি অথার্মোলজি অধ্যাপক খুরশিদ আলম, হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. রাজিব হোসাইন এবং গভর্নিংবডির সদস্য ডা. তারেক উপস্থিত হয়ে আগামী বুধবার গভর্নিংবডির মিটিংয়ে বিষয়টি আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। 

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, তারা সোমবার ক্যাম্পাসে এসে জানতে পারেন বৈঠকটি বুধবার না হয়ে আগামী ২৮ জুন শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। 

চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের অপটোমেট্রি বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাব্বির মিয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘অপটোমেট্রি বিভাগটি দন্তচিকিৎসক, ফিজিওথেরাফি বা ফার্মেসির মতোই মেডিকেল সায়েন্সের একটি শাখা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ শাখার স্বীকৃতি রয়েছে। বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে অপটোমেট্রিস্টদের প্রাথমিক চক্ষু সেবাদানকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এতদিন অপটোমেট্রি বিভাগটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের অধীনে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ওই কোর্স চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদ থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব হেল্থ টেকনোলজির অধীনে চলে যায়। এ কারণেই আমাদের আন্দোলন।’

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: 
১. প্রসপেক্টাসে উল্লিখিত ‘অপটোমেট্রি ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্র্যাকটিস’ সুবিধা পুনর্বহাল করা।
২. চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদে অন্তর্ভুক্তকরণ অথবা স্বতন্ত্র অপটোমেট্রি ফ্যাকাল্টি গঠন করা। 
৩. এক বছরের ইন্টার্নশিপ নিশ্চিত করা এবং কারিকুলাম নম্বর পুনর্বিন্যাস করে আন্তর্জাতিক মানসম্মত করা। 
৪. দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই ক্লিনিক্যাল পোস্টিং নিশ্চিত করা।

সিরাজগঞ্জে বাড়ছে যমুনার পানি, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫২ এএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ১০:১৬ এএম
সিরাজগঞ্জে বাড়ছে যমুনার পানি, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি
চার দিন ধরে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ছবিটহ সদর উপজেলার জেলখানা ঘাট এলাকা থেকে তোলা। খবরের কাগজ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে গত চার দিন ধরে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ সময়ে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর মেঘাইঘাট পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার ও শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এর ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

জেলা সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর- এই পাঁচটি উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোর ফসলি জমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি। 

গতকাল সোমবার সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ১৯ মিটার। গত রবিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৭১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত রবিবার এই পয়েন্টে যমুনার পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার, গত শনিবার বেড়েছে ৮ সেন্টিমিটার ও গত শুক্রবার এই পয়েন্টে যমুনার পানি বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। চার দিনে বেড়েছে ৩৫ সেন্টিমিটার।  

অন্যদিকে কাজীপুর মেঘাইঘাট পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৯২ মিটার। গতকাল এ পয়েন্টে নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৮৮ সেন্টিমিটার নিচ প্রবাহিত হচ্ছে। গত রবিবার এই পয়েন্টে যমুনার পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার, গত শনিবার পানি বেড়েছে ১০ সেন্টিমিটার ও গত শুক্রবার এই পয়েন্টে যমুনার পানি বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। আর চার দিনে বেড়েছে ৩৬ সেন্টিমিটার।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নদীবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, আগামীকাল (বুধবার) পর্যন্ত সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বাড়তে পারে। আকাশের মেঘগুলো দেশের উত্তরের দিকে যাচ্ছে এবং বৃষ্টিপাত বাড়ছে। যে কারণে উজানের পানির কারণে নদ-নদীর পানি বাড়বে। 

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চার দিন ধরে সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আরও কয়েক দিন নদীর পানি বাড়তে পারে। পানি বাড়লেও বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। তবে বন্যা মোকাবিলা ও নদীভাঙন রোধে সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

খুলনায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান, জনমনে স্বস্তি

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম
খুলনায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান, জনমনে স্বস্তি

খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সক্রিয় হয়েছে যৌথ বাহিনী। গত দুই সপ্তাহে পরপর কয়েকটি বড় অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের খবরে স্বস্তি ফিরছে জনমনে। বিশ্লেষকরা অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ছাড় পাচ্ছেন না রাজনৈতিক দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতারাও। চাপের মুখে আত্মগোপনে যেতে শুরু করেছে সন্ত্রাসীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যৌথ বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের মুখে দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু। ৮ জুন রাতে নগরীর সামছুর রহমান রোডে তার বাড়িতে অভিযান চালান যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে বৈদেশিক মুদ্রা, পাইপগানসহ কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। এ সময় ওই বাড়ি থেকে আব্দুর রহমান, ইদ্রিস গাজী ও গ্রেনেড বাবুর বাবা জোনায়েদ চৌধুরী মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে ২২ জুন রাতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ সালাউদ্দিন মোল্লা বুলবুল, তৌহিদুর রহমান তৌহিদসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। টুটপাড়া তালতলা মেইন রোড থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি, একটি রিভলভার, একটি শটগান, চার রাউন্ড কার্তুজ, তিনটি রামদা, দুটি চাইনিজ কুড়াল, তিনটি চাপাতি, ১৭০ গ্রাম গান পাউডার, ১০৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রাজনৈতিক দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতারাও ছিলেন।

এর আগে ১৮ জুন বিদেশি রিভলভার, গুলিসহ খুলনা সিটি কলেজের একটি ছাত্র সংগঠনের সদ্য সাবেক আহ্বায়ক রাজু আহমেদ ও ২৭০ পিস ইয়াবাসহ শরণখোলা ইউনিয়নের একটি ছাত্র সংগঠনের সাবেক সদস্যসচিব শামীম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসীরা এলাকায় ফিরে নতুন করে অপরাধ তৎপরতা শুরু করেছে। এলাকা নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, পেশিশক্তির প্রদর্শন, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। পর পর কয়েকটি হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হওয়ায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অবৈধ অস্ত্রের উৎস খুঁজতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, খুলনা মহানগর ও জেলায় মে মাসে ১০টি হত্যা, ১৩টি ধর্ষণ, অস্ত্র আইনে পাঁচটি, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় ২৩টিসহ মোট ৩২৪টি মামলা হয়, যা গত এপ্রিল মাসে হওয়া মামলার চেয়ে ১৫টি বেশি। 

খুলনা সদর থানার ওসি হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রমে পুলিশ মাঠে সক্রিয় রয়েছে। খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকা করে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হয়েছে। এরই মধ্যে অস্ত্রসহ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে।’ 

তবে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক সময় পুলিশ অভিযান চালালেও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা যায় না। অজানা কারণে পুলিশ আসার আগেই তারা পালিয়ে যায়। আত্মগোপনে থেকে সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি, খুন, মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ করছে। সন্ত্রাসীদের কাছে অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি জনমনে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।’ তবে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ ইমরান বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে।’

 

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৯:২৭ এএম
ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল
ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। 

গত রবিবার থেকে সোমবার (২৩ জুন) দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে জেলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ২২১ জন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। তাদের মধ্যে জেনারেল হাসপাতালে ৭ জন এবং ১৫ জন উন্নত চিকিৎসা নিতে জেলার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন।

এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু মোকাবিলায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে শুরু হয়েছে হেল্প ডেস্ক ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম। সোমবার সকালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ও জাগোনারীর সহযোগিতায় বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম ২০ দিনব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হেল্প ডেস্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্টার্ট ফান্ডের সহযোগিতায় জেনারেল হাসপাতালে ২৫০টি মশারি দেওয়া হয়। যা রোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজাওনুর আলম, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকাহ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগোনারীর প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা হাসি, বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টু, এবং জেলা স্বাস্থ্য অধিকার যুব ফোরামের সমন্বয়ক মহিউদ্দিন অপুসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। 

বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দুই শিফটে ১০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই হেল্প ডেস্কে দায়িত্ব পালন করবেন। হাসপাতালের নিচতলায় স্থাপিত হেল্প ডেস্কে দুজন স্বেচ্ছাসেবক রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেবেন। ডেঙ্গু ওয়ার্ডে তিনজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন, যারা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উৎসাহিত ও নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলতে সহায়তা করবেন। এ ছাড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং মশারির ব্যবহার নিশ্চিত করবেন।

জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান জানান, ফোরামের পক্ষ থেকে হাসপাতালে কালার কোড যুক্ত ঝুড়ি সরবরাহ করা হয়েছে। যেন বর্জ্য সঠিকভাবে ফেলা যায়। পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ এবং সচেতনতামূলক পথসভা আয়োজনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। 

জেলার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় শুধু স্বাস্থ্য বিভাগ নয়, সবাইকে সচেতন হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। মশা নিধন করতে হবে। কারণ ডেঙ্গুর মূল চিকিৎসাই হলো মশা নিধন।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আলম বলেন, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রতিনিধিরা এখানকার প্রতিটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পেয়েছেন। ইতোমধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও বৃষ্টির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টি কমলেই আবার কাজ শুরু হবে।