
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটক ও আশপাশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশের ছয় সদস্যসহ অর্ধশত মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শাবিপ্রবির ফটকসহ আশপাশের এলাকা ও ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) কমপ্লিট শাট ডাউন কর্মসূচি চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মদিনা মার্কেটসহ সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়।
বেলা দেড়টার দিকে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল, শটগান ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়েন; তা থেমে থেমে প্রায় ২ ঘণ্টা চলে।
সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, গোলচত্বর, ছাত্র-ছাত্রীদের হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, সোয়াট, সিআরটি টিমের পাঁচ শতাধিক সদস্য জলকামানসহ অবস্থান নেন। দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হলগুলোর প্রভোস্টকে সঙ্গে নিয়ে হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হয়। তবে হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে বের হওয়ার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লাথি ও কিল-ঘুষি মারে পুলিশ। এর প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পুলিশের হামলায় অন্তত ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ইফরাতুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থীর মাথায় রাবার বুলেটের আঘাত রয়েছে। ছররা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থী রাফিদ, নাঈম, রাহিম, শাফায়েত, লুবনা, তৌফিক, রাশেদ, রহিম, মাহিদ। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৬ জন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ খবরের কাগজকে বলেন, শাবিপ্রবির ফটকের সামনে অনেক বহিরাগত অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। এ সময় ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট, শটগান ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।