ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

বগুড়ার জিআই পণ্য প্রতিদিন তৈরি হয় ৩০ টন দই

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
প্রতিদিন তৈরি হয় ৩০ টন দই
বগুড়া শহরে একটি কারখানায় দই তৈরি করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

বগুড়ার দইয়ের সুনাম দেশজুড়ে। এ ছাড়া বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। এ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দই ভালো থাকে দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত। তবে ফ্রিজে রাখলে খাদ্যমান ও স্বাদ ঠিক থাকে প্রায় এক সপ্তাহ। কখনো কখনো আরও বেশি।’ 

বগুড়ার ১১২ বছরের পুরোনো আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। এ প্রতিষ্ঠানের তৈরি লাচ্ছা সেমাই, চিকন সেমাই আর সাধারণ মিষ্টির মতোই জনপ্রিয় সাদা দই, টক দই, মিষ্টি দই আর ক্ষীরশা। সারা দেশে যেমন চাহিদা রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের দইয়ের তেমন যুক্তরাষ্ট্রেও প্রচুর চাহিদা রয়েছে। 

আকবরিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হাসেন আলী আলাল জানান, গত কয়েক বছরে তার প্রতিষ্ঠানে তৈরি দই আমেরিকায় গেছে অন্তত ৭ বার। পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ৪০ হাজার শরা দই গেছে আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে। প্রতিটি এলাকা থেকেই দই আবারও পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি বিধিবিধান আর খাদ্যমান ঠিক রাখার পদ্ধতির অভাবে তা সম্ভব হয়নি। 

মো. হাসেন আলী আলাল বলেন, ‘এ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে সরকারি প্রণোদনার দরকার, প্রয়োজন ভ্যাট-ট্যাক্সে ছাড় ও সেই সঙ্গে প্রয়োজন দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষণ নিশ্চিত করা। আগে যেখানে দই তৈরিতে সময় লাগতো ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা সেখানে নতুন কিছু মেশিন বসানোর ফলে এখন সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। নতুন পদ্ধতিতে বানানো দইয়ের খাদ্যমানও ঠিক থাকে আগের চেয়ে বেশি সময়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়া, নেপাল, কানাডা ও সিঙ্গাপুরের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারীদের অনেকেই বগুড়ার দই নিয়ে যাওয়ার পর জানতে চেয়েছেন তাদের দেশে পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা আছে কি না।’

বগুড়ার আরেক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান এশিয়া সুইট। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রথম দই বিক্রি শুরু করে। প্রথমে দিন ৫ মণ দুধে তৈরি করত ১৫০ শরা দই, এখন প্রতিদিন অন্তত ১০০ মণ দুধের দই বানায় প্রতিষ্ঠানটি। এশিয়া সুইটের ম্যানেজিং পার্টনার মো. নুরুল আলম টুটুল এসব তথ্য দিয়ে জানান, ১৯৮৬ সালের আগস্টে প্রতিষ্ঠানটি চালু হয়। বর্তমানে দই মিষ্টির জন্য প্রতিষ্ঠানটির দেশজুড়ে সুনাম আছে। 

চিনিপাতা দই নামের দোকানটি বগুড়া শহরে বেশ জনপ্রিয়। শহরের সাতমাথায় দইয়ের এ দোকান থেকে প্রতিদিন বিক্রি হয় গড়ে সাড়ে ৭ মণ দুধের তৈরি প্রায় ১৫০ শরা চিনিপাতা দই। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর এখান থেকে ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই দই নিয়েছেন জাপান, মালয়েশিয়া, কানাডাসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে। 

প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. মুক্তার আলম জানান, মূলত দুধ আর চিনির মানের ওপর নির্ভর করে এ খাবারের মান। তিনি বলেন, যারা এখান থেকে দই নিয়ে বিদেশ গেছেন তাদের অনেকেই প্রশংসা করেছেন। মো. মুক্তার আলম বলেন, ‘বগুড়ায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩০ টন দই তৈরি হয়, যা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। তবে ছুটির দিনগুলোতে আরও অন্তত ১০ টন দইয়ের চাহিদা বেড়ে যায়। উৎসবের দিনগুলোতে এ চাহিদা আরও বৃদ্ধি পায়।’

অনেক বছর ধরেই পাইকারি দই বিক্রি করেন শেরপুর উপজেলার ঘোষপাড়া এলাকার নিমাই ঘোষ। তিনি দাবি করেন, ঘেটু ঘোষের হাত ধরেই তাদের পূর্ব পুরুষরা দই তৈরি শুরু করেন শেরপুরে। শুধুমাত্র বগুড়ার শেরপুরেই দই তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন ৫৬টি পরিবার। এসব পরিবারে দই তৈরিকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত ২৫০ জনের।

বগুড়ার প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডে দইয়ের দোকান রয়েছে। সেসব দোকানে টক, সাদা, মিষ্টি আর কড়া মিষ্টির ক্ষীরশা পাওয়া যায়। প্রতিটি এলাকা থেকেই দই আবারও পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি বিধিবিধান আর খাদ্যমান সঠিক রাখার পদ্ধতির অভাবে তা সম্ভব হয়নি।

এদিকে বগুড়ার সুস্বাদু এ খাবার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি পেয়েছে চলতি বছরের জুন মাসে। বগুড়ার সাবেক ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মাদ নূরে আলম সিদ্দিকীর সহযোগিতায় বগুড়ার বিখ্যাত এ খাদ্যের আন্তর্জাতিক সনদ অর্জনে একসঙ্গে কাজ করেছে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। 

বগুড়ার দই কবে কোথায় এবং কে প্রথম তৈরি করেছেন, এ তথ্য সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। অনেকেই মনে করেন, অন্তত আড়াইশ বছর আগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ঘোষ পরিবারের সদস্য ঘেটু ঘোষ প্রথম দই তৈরি করেন। আবার অনেকেই মনে করেন, বহু বছর আগে বগুড়ার নবাব পরিবার তাদের অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য খাদ্য তালিকায় দই যুক্ত করেন। 

সময়ের ব্যবধানে টক দইয়ের পাশাপাশি শুরু হয় মিষ্টি দই তৈরি। এখন বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৪০০ দোকানে একই সঙ্গে বিক্রি হয় টক ও মিষ্টি দইয়ের পাশাপাশি ক্ষীরশা। কালের বিবর্তনে দইয়ের স্বাদে বৈচিত্র্য এসেছে। দেশ-বিদেশে বেড়েছে চাহিদা। 

এদিকে রপ্তানি আইন শিথিল করার পাশাপাশি খাদ্যমান ঠিক রাখার সময় বাড়ানো গেলে বগুড়ায় তৈরি সুস্বাদু দই রপ্তানি করা যাবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত, নেপাল ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।

সন্তান হত্যার হুমকি দিয়ে ভাবিকে ধর্ষণ, কারাগারে দেবর

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:৩৮ পিএম
সন্তান হত্যার হুমকি দিয়ে ভাবিকে ধর্ষণ, কারাগারে দেবর
ছবি: খবরের কাগজ

কুষ্টিয়া কুমারখালীতে দেড় বছরের মেয়ে শিশুকে হত্যার হুমকি দিয়ে মাকে ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগীর দেবর নাঈম শেখকে (২০) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগীকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কুমারখালী থানায় একটি মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে নাঈমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার নাইম শেখ কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চলতি বছরে খোর্শেদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ভুক্তভোগী ও আসামি সম্পর্কে আপন দেবর-ভাবি।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো. সোলাইমান শেখ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগীের স্বামী পদ্মানদীতে ট্রলারে কাজ করেন। গত সোমবার (৭ জুলাই) রাতে স্বামী কাজে গেলে দেবর নাইম শেখ ভাবির শোবার ঘরে ঢুকে দেড় বছর বয়সি শিশুকে হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করেন। এর পর ভুক্তভোগী তার স্বামীকে বিষয়টি বললে তিনি আপোষ-মীমাংসার কথা বলেন। পরে ভুক্তভোগীের বাবা থানায় মামলা করেন।

ভুক্তভোগীর মামা বলেন, 'ভাগ্নিকে নিয়ে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য এসেছি। তার দেড় বছরের এক বাচ্চা আছে। নাইম বাচ্চাকে জবাই করে হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক খারাপ কাজ করেছে।'

মামলার বাদী বলেন, 'মেয়েকে তার দেবর জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। উপযুক্ত শাস্তির প্রত্যাশায় থানায় মামলা করেছি।'

তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ভুক্তভোগী নারীর স্বামী ও অভিযুক্তের বড় ভাই।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ  বলেন, 'ভাবিকে তার সন্তান হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে দেবরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলায় আসামিকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও ভুক্তভোগীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

মিলন/মেহেদী/

চাঁদপুরে জলাবদ্ধতায় বেড়েছে দুর্ভোগ, ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
চাঁদপুরে জলাবদ্ধতায় বেড়েছে দুর্ভোগ, ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড
ছবি: খবরের কাগজ

টানা দুদিনের বৃষ্টিতে চাঁদপুরে বেড়েছে জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ। কখনো মাঝারি, আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ। বিশেষ করে নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় অনেক বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে চাঁদপুর শহরে নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। 

বুধবার (৯ জুলাই) সকালে দেখা গেছে শহরের বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড, নাজির পাড়া, পালপাড়া, আলিমপাড়া, রহমতপুর কলোনীসহ বেশ কিছু সড়কে জলাবদ্ধতা রয়েছে। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। 

এদিকে টানা বৃষ্টিতে জেলার গ্রামীণ সড়কগুলো ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি শাহরাস্তি ও ফরদিগঞ্জ উপজেলায় গেল বছরের মতো জলাবদ্ধতায় শিকার স্থানীয় বাসিন্দারা। 

অন্যদিকে যাত্রী সংকটে লঞ্চ চলাচলে শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। যাত্রী পেলে ২ থেকে ৩ ঘণ্টার পর ছাড়ছে ঢাকাগামী লঞ্চ।

চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড এলাকার ব্যবসায়ী বেলাল হোসাইন বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে দোকানের সামনে হাঁটু পানি জমে আছে। যার কারণে কোন ক্রেতা আসছে না। বৃষ্টি চলমান থাকলে দোকানে পানি ঢুকে যাবে।

শহরের মিশন রোড এলাকার বাসিন্দা আলম খান বলেন, টানা বৃষ্টিতে শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত এবং শ্রমিকরা কাজে যেতে পারছে না।

চাঁদপুর জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা শাহ মো. শোয়েব জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় সকাল ৬টা পর্যন্ত ১২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৯ ঘটিকা পর্যন্ত তা বেড়ে ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বৃষ্টিপাত আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মেহেদী/

চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধসের শঙ্কা

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:১৩ পিএম
চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধসের শঙ্কা
নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় ভারী বর্ষণে সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম নগরে ভারী বর্ষণে সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গত তিন দিনের বর্ষণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হলেও মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হয় ভারী বর্ষণ। যা বুধবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে জলজটের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত এবং পাহাড়ধসের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 

বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরের আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, হালিশহর, জিইসি, মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশসহ বেশ কিছু সড়কে জলজট তৈরি হয়েছে। পানিতে আগ্রাবাদ এলাকায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার ইঞ্জিন বিকল হতে দেখা গেছে। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে যান চলাচল তুলনামূলক কম দেখা গেছে। এ কারণে বিপাকে পড়েন শিল্পকারখানা, অফিসগামীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা ভাড়া বাড়তি আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। 

চট্টগ্রামের জিইসি এলাকায় কথা হয় চাকরিজীবী মো. শাহ আলমের সঙ্গে। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার বাসা আগ্রাবাদ। জিইসিতে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। স্বাভাবিক সময়ে আমি গণপরিবহনে যাতায়াত করি। আজ গাড়ি কম ছিল। অফিসের দেরি হওয়ায় সিএনজি অটোরিকশা নিতে হয়েছে। ১২০ টাকার ভাড়া আজ ২০০ টাকা দিয়েছি।’ 

আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা মো. আলতাফ বলেন, ‘আমরা এই জলাবদ্ধতা থেকে কবে পরিপূর্ণ রেহাই পাব জানি না। একদিকে হাঁটুসমান পানি, অন্যদিকে ভাঙা রাস্তা। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই জলাবদ্ধতা আমাদের জন্য অভিশাপ। জানি না এই ভোগান্তির শেষ কোথায়।’

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) চট্টগ্রামে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। 

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মাহমুদুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে বুধবার সকাল থেকে পরবর্তী ১২ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।’

সালমান/

 

দাউদকান্দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার, সেতু চান এলাকাবাসী

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:১০ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:১৮ পিএম
দাউদকান্দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার, সেতু চান এলাকাবাসী
ক্যাপশন: ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিলচালিত ট্রলার দিয়ে গোমতী নদী পার হচ্ছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দাউদকান্দি উত্তর ইউনিয়নে/ খবরের কাগজ

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দাউদকান্দি উত্তর ইউনিয়নের গোলাপের চর চেঙ্গাকান্দি, গঙ্গাপ্রসাদ ও পার্শ্ববর্তী মেঘনা উপজেলার বাটেরারচর, আলীপুর গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের কষ্ট যেন দেখার কেউ নেই। এসব গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ কয়েক হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ইঞ্জিলচালিত ট্রলার দিয়ে গোমতী নদী পার হয়ে দাউদকান্দি পৌর সদরে আসেন। তাই এলাকাবাসীর দাবি, এই নদীতে দ্রুত সেতু নির্মাণ করে তাদের দুর্ভোগ দূর করা হোক।

জানা গেছে, গোমতী নদীর স্রোত বেশি। তাই ট্রলার দিয়ে নদী পারাপার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত গ্রামগুলোর সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। অনেক সময় রাতে ট্রলার বা নৌকার মাঝি না থাকায় পারাপারে ভোগান্তি পোহাতে হয় গ্রামবাসীকে। জরুরি রোগীদের ক্ষেত্রে ভোগান্তির মাত্রা আরও বেশি। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই গোমতী নদী পার হওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। 

গোলাপেরচর গ্রামের মো. রবিউল মিয়া বলেন, ‘নদী পারাপারের সময় আমরা আতঙ্কে থাকি। প্রায় সময় এখানে ট্রলার বা নৌকা ডুবে যায়। স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আরও বিপজ্জনক। কারণ অনেক ছাত্র-ছাত্রী সাঁতার জানে না।’

চেঙ্গাকান্দি গ্রামের আকলিমা আক্তার বলেন, ‘ব্রিজের অভাবে এই গ্রামের মানুষকে সারা বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে স্কুলের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য নৌকায় পার হওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। যদি সরকার একটি ব্রিজ তৈরি করে দেয়, তাহলে আমাদের যাতায়াতের জন্য অনেক সুবিধা হতো।’ 

দাউদকান্দি আদর্শ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী তাসলিমা বলে, ‘বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বেশি থাকায় প্রায়ই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। কর্তৃপক্ষ যেন এখানে সেতু নির্মাণের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।’

চেঙ্গাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘নদীর দুই পাশ মিলিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫ থেকে থেকে ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে বা নৌকায় গোমতী নদী পারাপার হন। তাই এখানে দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাই।’

দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম বলেন, ‘সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে নদী পারাপারে শিক্ষার্থী, গর্ভবতী মা ও সাধারণ রোগীরা কষ্ট পাচ্ছেন- বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। গ্রামবাসী যদি একটি ব্রিজ দাবি করে লিখিতভাবে জানান তাহলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হবে।’

দাউদকান্দিতে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:০৫ পিএম
দাউদকান্দিতে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত
ছবি: খবরের কাগজ

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় সোমবার (৭ জুলাই) থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষজন। বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার পৌর সদর, গৌরীপুর,  ইলিয়টগঞ্জ, রায়পুর, মেঘনা - গোমতী  টোলপ্লাজা ও গৌরীপুর আঞ্চলিক সড়কসহ বেশ কিছু গ্রামীণ সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্ত রাস্তা দিয়ে পানি উপেক্ষা করে চলাচল করছে মানুষ। এ ছাড়াও গ্রামগুলোতে অনেক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া ও দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ। অন্যদিকে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় গোমতী নদ-নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবুল মিয়া জানান, এমন টানা বৃষ্টিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজকর্মও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেকে প্রয়োজনীয় কেনাকাটাও করতে পারছেন না। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী  শিশু ও বৃদ্ধদের ঘর থেকে বের হওয়াই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।

সবজিকান্দি গ্রামের অটোরিকশাচালক মো. লাল মিয়া বলেন, সোমবার দুপুর এখন পর্যন্ত প্রচুর বৃষ্টি। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় যাত্রী নেই, বৃষ্টিতে রিকশা চালানো যাচ্ছে না। সকাল থেকে বসে আছি রাস্তায় কোনো মানুষের দেখা নাই। ইনকামও নাই। এভাবে চলতে থাকলে সংসার চালানো বড় কষ্টকর হয়ে যাবে। 

সবজি বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, সারারাত ও সকাল থেকে এত বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বের হওয়ায় কঠিন। কাজ-কাম কি ভাবে করব। বিপদে আছি। খামু কি? চিন্তা করে পাচ্ছি‌ না আল্লাহই জানে। 

দাউদকান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী শিউলী আক্তার বলে, প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ইউনিফর্ম ভিজে গেছে তবুও আজকে আমাদের পরীক্ষা আছে। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করে পরীক্ষা দিতে স্কুলে যেতে হচ্ছে। 

জেলা আবহাওয়া সূত্রে জানা গেছে আগামী কয়েকদিন এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। 


লিটন/মেহেদী/