
গাজীপুরের বড়বাড়ি এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় হেলপারের কাজ করত জয়পুরহাটের কিশোর মিনহাজুল ইসলাম (১৭)। কারফিউ চলাকালে গত ২০ জুলাই বড়বাড়ি জয়বাংলা সড়কে গুলিতে নিহত হয় সে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার অসুস্থ মা মেরিনা বেগম এখন পাগলপ্রায়।
নিহত মিনহাজুল ইসলাম জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার উত্তর রামশালা গ্রামের আবু বক্কর সরদারের ছেলে। আবু বক্কর বিদেশে থাকেন।
প্রায় ১৫ বছর আগে ২ বছরের মিনহাজুলকে রেখে বাবা আবু বক্কর সরদার প্রবাসে চলে যান। এর পর থেকে মিনহাজুলের মা একই গ্রামে বাপের বাড়িতে থাকতেন। পরে মিনহাজ ১৩ বছর বয়সে গাজীপুরে তার খালার বাসায় চলে যায়। তার মা মেরিনা গুরুতর অসুস্থ। মিনহাজ একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেয়। বেতন থেকে মায়ের চিকিৎসার জন্য বাড়িতে টাকা পাঠাত। গত কোরবানির ঈদের ছুটিতে মিনহাজুল বাড়িতে এসেছিল। তখন অসুস্থ মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার খালার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে রেখে মায়ের চিকিৎসা করাত।
নিহত মিনহাজুলের খালু শাহ্ পরান বলেন, ‘আমার বাড়ির পাঁচতলায় থাকত মিনহাজুল। গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে বাড়ি থেকে নিচে সড়কে যায় সে। ওই সময় তার বাম হাতের কনুই ভেদ করে বাম পাঁজরে একটি গুলি লাগে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে জয়দেবপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’
নিহতের চাচাতো ভাই মাহফুজ হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই কোনো আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে পোশাক কারখানায় চাকরি করত। ওই দিন রাস্তায় বের হওয়ামাত্রই তাকে গুলি করা হয়। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের চাচা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘ছোটবেলায় মিনহাজের বাবা ওর মাকে ছেড়ে বিদেশে চলে যায়। তবে মা অন্যত্র বিয়েও করেননি। এমন অবস্থায় মা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। একমাত্র সন্তান মিনহাজের রোজগারের টাকায় চিকিৎসা চলত অসুস্থ মায়ের। এখন তার মায়ের কী হবে?’
এ বিষয়ে আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নয়ন হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে ঘটনাটি অন্য জেলার হওয়ায় বেশি কিছু বলতে পারছি না।’