ঢাকা ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বরগুনায় ১১ দফা দাবিতে পুলিশের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:১১ এএম
আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১১:০৮ এএম
বরগুনায় ১১ দফা দাবিতে পুলিশের বিক্ষোভ
ছবি : খবরের কাগজ

বরগুনায় জীবনের নিরাপত্তাসহ ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে জেলা পুলিশের দুই শতাধিক সদস্য।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে বরগুনা পুলিশ লাইনের মধ্যে বিক্ষোভ করেন তারা।

এ সময় পুলিশকে নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে জনগণের কাছে শত্রুতে পরিণত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এর দায় আইজিপিকে নিতে হবে জানিয়ে তাকে বিচারের আওতায় এনে জনগণের কাছে পুলিশকে আস্থার জায়গায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানানো হয়।

মহিউদ্দিন অপু/জোবাইদা/

হাতিয়ায় লাইটার জাহাজ থেকে পড়ে নিখোঁজ ১

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ পিএম
হাতিয়ায় লাইটার জাহাজ থেকে পড়ে নিখোঁজ ১
লাইটার জাহাজ থেকে পড়ে নিখোঁজ মো. রাকিব হোসেন

হাতিয়ার ভাসানচরের কাছে লাইটার জাহাজ থেকে পড়ে মো. রাকিব হোসেন (১৮) নামে একজন নিখোঁজ হয়েছেন।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে হাতিয়ার নলচিরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সফিকুর রহমান খান।

নিখোঁজ রাকিব হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত দুলাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি এফবি সানি-৫ নামে জাহাজে খালাসি হিসাবে কর্মরত ছিল।

জাহাজের কোয়াটার মাস্টার মামুন খবরের কাগজকে বলেন, ‘জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে গম নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। ভাসানচরের পূর্ব পাশে এলে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পড়েন। এ সময় রাকিব জাহাজের পাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করতে গিয়ে ঢেউয়ের আঘাতে সাগরে পড়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সাগর উত্তাল থাকায় তাকে ভালোভাবে খোঁজাও যায়নি। পরে জাহাজ নিয়ে তারা ভাসানচর চলে আসেন।’

রাকিবের মামাতো ভাই রাসেল জানান, রাকিব সাগরে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি মোবাইলে জাহাজ থেকে পরিবারকে জানিয়েছেন। তার বাবা বেঁচে নেই। তারা দুই ভাই অন্যজনও জাহাজের সুকানি হিসাবে কাজ করেন। এই সংবাদে রাকিবের বাড়িতে মাতম চলছে।

নলচিরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সফিকুর রহমান খান খবরের কাগজকে বলেন, ‘এফবি সানি-৫ জাহাজের কোয়াটার মাস্টার মামুনের সঙ্গে কথা হয়েছে। নিখোঁজ রাকিবের সন্ধানে আমরাও চেষ্টা করছি। ভাসানচর কোস্টগার্ডকে জানানো হয়েছে। সকাল থেকে নদী উত্তাল রয়েছে। যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ। এতে নিখোঁজ রাকিবকে উদ্ধারে নদীতে যাওয়া যাচ্ছে না।’

সাকিব/ইসরাত চৈতী/

সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ রুপিসহ যুবক আটক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পিএম
সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ রুপিসহ যুবক আটক
রুপিসহ আটক মোহাম্মদ হৃদয় মিয়া। ছবি: খবরের কাগজ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে ১৯ লাখ ৫০ হাজার রুপিসহ বাংলাদেশি এক যুবককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিজিবি। 

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তের বাংলাবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ কলাউড়া গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে এই ভারতীয় মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। 

আটক যুবকের নাম মোহাম্মদ হৃদয় মিয়া (২৫)। তার বাড়ি উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ভাওয়ালীপাড়া গ্রামে। 

বিজিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট ব্যাটালিয়নের অধীনে বাংলাবাজার বিওপির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আবুল বাসার আজাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১২৩৫/৪-এস মেইন পিলারের ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অবৈধভাবে ভারত গিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে ভাওয়ালীপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ হৃদয় মিয়াকে আটক করা হয়। পরে তার সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগে তল্লাশি করে ১৯ লাখ ৫০ হাজার ভারতীয় রুপি জব্দ করা হয়।

ভারতীয় মুদ্রা থাকার বিষয়ে বিজিবিকে হৃদয় জানায়, বাদরেন নামে এক ভারতীয়র কাছে মাছ বিক্রি করে এই রুপি নিয়ে ফিরছিলেন তিনি।

৪৮ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারতীয় রুপিসহ আটক যুবককে দোয়ারাবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছে।’

উজ্জ্বল মেহেদী/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানরা দিচ্ছেন ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ এএম
আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানরা দিচ্ছেন ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ
ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আত্মগোপনে থাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা দিচ্ছেন ট্রেড লাইসেন্স এবং নাগরিক সনদ। প্যাডে এখনো শেখ হাসিনা সরকারের থিম স্লোগান ব্যবহার করছেন। যাদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের যোগাযোগ রয়েছে, তাদের কেউ কেউ সনদ পাচ্ছেন। তবে এই সেবা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, মেয়র এবং চেয়ারম্যানসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের বেশির ভাগ ইউপি সদস্যরাও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। যোগাযোগ রাখছেন না কেউই। চেয়ারম্যানদের ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ। 

এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকসেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। জরুরি প্রয়োজনেও পাচ্ছেন না কোনো সনদ। তবে যাদের সঙ্গে চেয়ারম্যানদের ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে, তারাই এ সেবা পাচ্ছেন। 

উপজেলার কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরী গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান। ৩৮ দিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদে আসেননি। থাকছেন না কুমিরা এলাকার নিজ বাড়িতেও। তবুও এক ব্যবসায়ীকে গত ১ সেপ্টেম্বর একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছেন তিনি। অজ্ঞাত জায়গা থেকেই এই ট্রেড লাইসেন্সটি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে পরিষদে না এসেও ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যদি ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারেন, তাহলে পরিষদে কেন আসছেন না, এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মধ্যে।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের কিউআর কোডসংবলিত একটি ট্রেড লাইসেন্স নুর-সু বিতান নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে দেন চেয়ারম্যান। এর লাইসেন্স নম্বর-১৪৭৫। প্রোপ্রাইটরের নাম মোহাম্মদ নুরুল আবছার। তিনি কুমিরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে। লাইসেন্স ফি বাবদ তিনি যে টাকা নিয়েছেন সেটা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে কি না নিশ্চিত নয় ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারীরা। লাইসেন্সের মেয়াদ দেওয়া হয়েছে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

এদিকে প্যাডের ওপর লেখা ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র, শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র, ‘শেখ হাসিনার দর্শন, সব মানুষের উন্নয়ন’। যদিও শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যান। কুমিরার চেয়ারম্যান এখনো কেন শেখ হাসিনা সরকারের থিম ব্যবহার করছেন। এটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক।

এ বিষয়ে কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শোভন কান্তি ভৌমিক বলেন, ‘পরিষদে চেয়ারম্যান আসতে পারছেন না, সেটা তো সবাই জানেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্য সনদপত্র স্বাক্ষর করে পাঠান তিনি। তবে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। সেবা যাতে অব্যাহত থাকে সেই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা আছে। একটু দেরি হলেও নাগরিকসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পরিষদে কয়েকজন ইউপি সদস্য মাঝে মধ্যে আসেন।’

এদিকে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরীর বক্তব্যও একই রকম। ৫ আগস্টের পর থেকেই পরিষদে আসেননি বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ্ মিয়াজি। ওয়ারিশ সনদসহ অন্যান্য নাগরিক সনদে স্বাক্ষর দেন চেয়ারম্যান। সেবাগ্রহীতা ও পরিষদের পক্ষ থেকে কাউকে পাঠিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে তিনি সম্ভবত শহরেই বসবাস করছেন। এই পরিষদে শুধু জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা সমাজসেবক কর্মকর্তা লুৎফুনন্নেছা বেগম।

উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, ‘পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম গত জুন মাসে হজে গিয়েছিলেন। তিনি যাওয়ার আগে দুটি প্যাডে স্বাক্ষর নিয়ে রেখেছিলাম। এর মধ্যে একটি প্যাড শেষ আরেকটি আছে। তবে স্বাক্ষর আগের হলেও বর্তমানের তারিখ দেওয়া হচ্ছে। পরিষদে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে আছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম।’

কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড, সৈয়দপুর ও ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তাদের পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

মূল হামলাকারীরা অধরা নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কাজে ফিরবেন না চিকিৎসকরা

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৮ এএম
নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কাজে ফিরবেন না চিকিৎসকরা
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও ওয়ার্ডকর্মীদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় স্থবির চিকিৎসাসেবা। সংগৃহীত

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও ওয়ার্ডকর্মীদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার পরেও মূল হামলাকারী আসিফ হাসনাত জিহাদ ও আবু জিদানকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মামলাটি করেন হামলার শিকার কক্সবাজার ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সজীব কাজী। মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়। সেখান থেকে দুজনের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়ায় তাদের আসামি হিসেবে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। 

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোগীর মৃত্যুর পর জিহাদ, তামিম, তাহসিন ও জিদান সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষ ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে চারতলা থেকে নিচে নামিয়ে মারধর করতে থাকেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বাকিরা। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন।
 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা হলেন কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নতুন বাহারছড়া এলাকার তাহসিন মোহাম্মদ রেজা, তামিম মোহাম্মদ রেজা, আসিফ হাসনাত জিহাদ ও আবু জিদান। তাদের মধ্যে জিহাদ, জিদান ও তাহসিন ছাত্রদলের কর্মী। তাদের ছাত্রদলের বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া তামিম শিবিরের সমর্থক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মছিউর রহমান বলেন, ‘সব আসামিকে শনাক্ত করা গেছে। তাদের দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ 

মামলায় আসামিদের নাম কেন উল্লেখ নেই জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিন ঞো বলেন,  ‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্ত করলেও তাদের পরিচয় আমরা নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। আমরা তাদের সহযোগিত করছি। মূল আসামিরা গ্রেপ্তার  না হওয়া পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক কাজে ফিরবে না।’

হামলাকারীরা রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মী হওয়ায় কোনো চাপে ছিলেন কি না জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক বলেন, ‘কে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা নেতা, তা আমার দেখার বিষয় না। জড়িত কাউকে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া সরকারি সম্পত্তি নষ্টের দায়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হবে।’ 

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানান, চিকিৎসকের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে পুলিশ। ইতোমধ্যে হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে চিকিৎসক ও ওয়ার্ডকর্মীদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। জরুরি সেবা চালু থাকলেও তা চলছে খুব সীমিত। এতে রোগীরা বিপাকে পড়েছে।

কাজ শেষ না হওয়ায় বিপাকে হাজারও মানুষ

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ এএম
কাজ শেষ না হওয়ায় বিপাকে হাজারও মানুষ
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বাজালিয়া-শীলঘাটা সড়কের সুয়ালক খালের ওপর সেতুটির সংস্কারকাজ চলছে। যাতায়াতের জন্য তৈরি বিকল্প কাঠের সেতুটিও ভেঙে গেছে। খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া-শীলঘাটা সড়কের সুয়ালক খালের ওপর সেতুটির সংস্কারকাজ ৯ মাসেও শেষ হয়নি। যাতায়াতের জন্য বিকল্প হিসেবে একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়। কিন্তু চার মাস আগে সেটিও ভেঙে গেছে। এরপর থেকে চন্দনাইশ ও পুরানগড় ইউনিয়নের বাসিন্দাদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পার হতে হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অসুস্থ রোগী, শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি।

স্থানীয়রা জানান, চলতি বছরের শুরুতেই বিকল্প কাঠের সেতুটি নড়বড়ে হয়ে যায়। স্থানীয়দের চাপের মুখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢিলেঢালাভাবে মেরামত করে কোনোরকম দায় সারে।  তবে মেরামতের কিছুদিন যেতে না যেতেই সেতুটি পাহাড়ি ঢলে আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন থেকে প্রায় তিন মাস পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত কাঠের সেতুটি মেরামত করা হয়নি। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিকল্প কাঠের সেতুটির জায়গায় বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সেজন্য অর্থ বরাদ্দ পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। 

গত বছরের আগস্টে সাতকানিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে সেতুটির দক্ষিণ পাশের পিলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। একই বছরের নভেম্বর মাসে সেতুটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দে কাজটি পায় চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নূর সিন্ডিকেট। ২০২৩ সালের মধ্যেই কাজটি শেষ করার কথা ছিল। অথচ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এসেও কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। 

চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি প্রায়ই এই দিক দিয়ে যাতায়াত করি। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মূল সেতুটি সংস্কার করা প্রয়োজন। এ ছাড়া আপাতত চলাচলের জন্য কাঠের সেতুটি মেরামতের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

শীলঘাটা গ্রামের বাসিন্দা সনজিৎ বড়ুয়া বলেন, ‘কাঠের সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের গ্রামের মানুষের যাতায়াতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছেলেমেয়েরা ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পার হয়ে স্কুল-কলেজে যাচ্ছে। হাট-বাজারে যাতায়াতসহ সব কিছুতেই স্থবিরতা নেমে এসেছে।’ 

আলী আকবর নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের এলাকার বাসিন্দারা উপজেলা, জেলা ও হাটবাজারে যাতায়াতে এই সেতুটি ব্যবহার করে থাকেন। সেতুটি ভেসে যাওয়ায় মানুষের যাতায়াত ও শাকসবজি বাজারজাতকরণে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া আমাদের এলাকায় কোনো হাসপাতালও নেই। মুমূর্ষু রোগী ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ভেসে যাওয়া কাঠের সেতুটি মেরামতের মাধ্যমে যাতায়াতের উপযোগী করে দেওয়া হলে ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হবে।’

ঠিকাদার মো. দিদারুল ইসলাম জানান, ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে খালটিতে অনেক বেশি পানি হয়েছে। এতে সেতুর দক্ষিণ পাশের পিলারটি পানিতে ডুবে গেছে। তাই আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টিপাত ও খালের পানি কমে গেলে সেতুর সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।

সাতকানিয়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তা সবুজ কুমার দে খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিকল্প সেতুটি বারবার যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য আমরা স্টিলের বেইলি ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে এখনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।’