চার সড়কের সংযোগস্থল সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে সিলেট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশফাক জাহান সুলতান। এ সময় সে যানবাহনের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট পরার জন্যও আহ্বান জানাচ্ছিল। ইশফাকের মতো প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে বুধবার সকাল থেকে।
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা চৌহাট্টা। চৌহাট্টায় গতকালও ছিল প্রচুর যানজট। তবে আজ কোনো যানজট নেই সড়কে। সকাল থেকেই সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, রোভার, স্কাউটের সদস্যরা এই সড়কসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে। তাদের সঙ্গে রয়েছেন আনসার সদস্যরা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর জেলার সব থানার কার্যালয়, পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পুলিশ বাহিনীও কর্মবিরতিতে রয়েছে। এতে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর রিকাবীবাজার, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, কোর্টপয়েন্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা। প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যখন ছাত্রছাত্রীরা যানজট নিয়ন্ত্রণ করছিল তখন সাধারণ মানুষ তাদের পানি, কেক, জুস, ছাতা দিয়ে সাহায্য করছিলেন। আওয়ামী সরকারের পতনে অনেকে এই শিক্ষার্থীদের মিষ্টি বিতরণ করেন।
সিলেট নগরীর স্কলার্স হোম স্কুল অ্যান্ড কলেজ মেজরটিলা শাখার এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পিয়াস দাস হিমেল নগরীর বন্দরবাজারে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনের সময় খবরের কাগজকে বলেন, ‘এর আগে কখনো এই ধরনের কাজ করিনি। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশে শৃঙ্খলা প্রয়োজন। তাই নিজ দায়িত্বে এসেছি এই কাজ করতে।’
সিলেট উইমেন্স মডেল কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী হাদিয়া জান্নাত খবরের কাগজকে বলেন, ‘আন্দোলন সফলের পর দেশের সমস্যা সমাধানের দায়িত্বও আমাদের। তাই আজকে আমার সহপাঠীদের সঙ্গে এখানে এসেছি যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে। আমার এসব কাজে বাবা সব সময় সাপোর্ট দেন। মা একটু ভয় পান। এসবে আসতে মানা করেন। আজও বাবার সাপোর্টে বেড়িয়েছি।’
ব্লু বার্ড হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আবুল বসর যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায়। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা চাই দেশের মানুষ ভালোভাবে থাকবে। আমরা চাই দেশের সব আইন-কানুন মানুষজন মেনে চলবে। দেশের সবাই যেন স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে। দেশের চলমান সংকট উত্তরণে আমরা শিক্ষার্থীরা আমাদের সাধ্যমতো সব করার চেষ্টা করব। কিন্তু আমাদের সঙ্গে সবাইকে যার যার জায়গা থেকে আবার নতুন করে দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।’
শাকিলা ববি/সালমান/