শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে শিল্প-কারখানাগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে ‘কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্সের’ মাধ্যমে দ্রুত ঘটনাস্থলে টিম পৌঁছে যাবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় উইন্ডি গ্রুপের হলিউড পোশাক কারখানাসহ আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেন কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
স্প্যারো গ্রুপের ডিরেক্টর এবং বিজিএমইএর পরিচালক শোভন ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যেখানে শিল্প-কারখানা আছে সেখানে নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীর সেল গঠন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রচুর টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে শ্রমিকরা বুঝতে পারেন তাদের জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যাতে সবাই নিরাপদে কারখানাগুলোতে কাজ করতে পারেন। আমাদের শ্রমিকরা কাজের জন্য অত্যন্ত আগ্রহী। তারা গতকালকেও ৮১ শতাংশ খোলা কারখানায় ৯০ শতাংশের বেশি শ্রমিক কাজ করেছেন। কাজেই আমরা সবাইকে অনুরোধ করব, সবাই নির্ভয়ে খুশি মনে কাজে আসুন। ওই সময় আমরা মালিকরা কিছুটা শঙ্কিত হলেও শ্রমিকরা কিন্তু শঙ্কিত হয়নি। তারা কিন্তু কাজ করতে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এক্সপোর্ট যাতে কোনোভাবেই দেরি না হয়। বায়ারের কাছে যাতে কোনোভাবে আমাদের বলতে না হয় যে, আমরা এক্সটেনশন চাই। ব্র্যান্ড বাংলাদেশ একটা বড় ইমেজ। এটা ধরে রাখতে আমাদের আর্মি ভাইয়েরা খুব দ্রুত সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন। ইনশাআল্লাহ আগামীকালের মধ্যে আমাদের সব ফ্যাক্টরি চালু হয়ে যাবে।’
সাভার সেনানিবাসের কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অলরেডি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় ফ্যাক্টরি ও কল-কারখানাগুলোতে টহল শুরু করেছে। এর জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টাস্কফোর্স বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। সেই সেক্টর অনুযায়ী জোনভিত্তিক আমরা টহল পরিচালনা করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে, বাহ্যিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হবে। তখন সবাই আনন্দ নিয়ে কাজ করবে। আজ (শুক্রবার) সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে কিছু কারখানা খোলা আছে। শুক্রবার থেকেই আমরা প্যাট্রোল শুরু করেছি। আগামীকাল (শনিবার) থেকে ইনশাআল্লাহ সব কারখানা খুলে যাবে। আমরা সেই পরিবেশ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। যাতে কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে।’
তিনি আরও বলেন, “টাস্কফোর্সের সঙ্গে অন্যান্য বাহিনীও আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। কিছুদিনের মধ্যেই শিল্প-পুলিশ অ্যাক্টিভেট হবে। আমরা বিশ্বাস করি, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে দ্রুত এই অরাজকতা রোধ করা যাবে। ছোট ছোট বাহ্যিক নিরাপত্তার পাশাপাশি বড় পরিসরে কিছু হলে আমাদের ‘কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স’ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে।”
কলকারখানা, মার্কেট ও বিপণিবিতানে নিরাপত্তা দেবে সেনাবাহিনী
অন্যদিকে সারা দেশে কলকারখানা, মার্কেট ও বিপণিবিতানের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি জানিয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, আইটিসি ও বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের এক যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত ৮ আগস্ট সেনা সদর দপ্তরে ওই যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয় বলে শুক্রবার বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ওই সভায় কলকারখানা, মার্কেট ও বিপণিবিতানের নিরাপত্তা বিধানে পর্যাপ্ত কাজ করা হবে বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবসায়ী নেতাদের আশ্বাস দেওয়া হয়।