
ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক হিসেবে পরিচিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার সাইনবোর্ড ‘মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও আলেম ওলামারা’ পরিবর্তন করে দিয়েছেন। ওই সাইনবোর্ডে আগে ‘বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে’ লেখা থাকলেও নতুন বোর্ডে ‘জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) এক্সপ্রেসওয়ে’ লেখা রয়েছে। ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে সড়ক ও জনপদের কর্মকর্তা বলছেন, নাম পরিবর্তনের বিষয়টি কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এভাবে নাম পরিবর্তন করা যায় না।
জামিয়া ইসলামিয়া হালিমিয়া মধুপুর মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল ও হেফাজত ইসলামের মুন্সীগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কাশেমী বলেন, ‘ঢাকার কেরাণীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার আলেম ওলামা ও মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা এক্সপ্রেসওয়ের নামফলক পরিবর্তন করেছে। আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এক্সপ্রেসওয়ের নাম ছিল। কিন্তু মুসলমানরা এটা মেনে নিতে পারে না। কারণ, মুসলমান জাতির পিতা ইব্রাহিম (আ.)। উনার নামে তাই এক্সপ্রেসওয়ের নাম দিলে সব মুসলমানের আশা পূরণ হবে। এটা মূলত (দেশকে) একটা মেসেজ দেওয়া।’
জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘ভাঙ্গায় যে আরেকটি টোল প্লাজা রয়েছে সেটারও নাম পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। আগের সরকার সব জায়গায় পরিবারতন্ত্র হাইলাইট করেছে। মানুষ এখন পরিবারতন্ত্র থেকে বের হতে চাচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই টোল প্লাজার দায়িত্বে থাকা মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহীন রেজা বলেন, ‘৫ জুলাই থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে টোল প্লাজায় কর্মরত কোনো স্টাফ সেখানে ভয়ে অবস্থান করছেন না। এ কারণে সেখানে আসলে কি হয়েছে নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছি না। ওখানকার কিছু লোকজন তাদের নিজস্ব দায়িত্বে ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নাম পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াটি হলো প্রজ্ঞাপন জারি করতে হয়। হুট করে এটি করা সম্ভব না। প্রথমে প্রস্তাব যাবে সচিব পর্যায়ে, তারপর অনুমোদন হয়ে আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে টোল প্লাজায় কর্মরত কোনো স্টাফ সেখানে ভয়ে অবস্থান করছেন না। টোল আদায় করা বন্ধ রয়েছে। এই এক্সপ্রেসওয়েতে দুটি টোল প্লাজা রয়েছে। উভয় টোল প্লাজা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০ লাখ টাকা টোল আদায় করা হতো।’
তিনি আরও বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনকে। যদিও অনেক জায়গায় ম্যানুয়ালি টোল আদায় করা হচ্ছে, কিন্তু আমরা এক্সপ্রেসওয়েতে সেটা করতে পারব না। টোল প্লাজায় যে ভাঙচুর হয়েছে সেগুলো মেরামত করতে ৪-৫ দিন সময় লাগবে। এরপরে যদি আইনশৃঙ্খলার অবস্থা উন্নতি হয় তখন আবার টোল আদায় শুরু হবে।’