ছবি: খবরের কাগজ
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভায় একটি গবাদিপশুর খামারে অর্ধশশতাধিক গরুর পাহারা দেয়ে দুটি জার্মান শেফার্ড জাতের কুকুর। চোর থেকে গবাদিপশু রক্ষায় এই কুকুর দুটি পাহারাদার হিসেবে খামারের প্রধান ফটকে রাখা হয়েছে। বিষয়টি অনেকটা শখের বশে হলেও এটি এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে।
২০১৭ সালে শখের বশে ব্যবসায়ী জামাল হোছাইন ও জহির হোছাইন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের চরপাড়া গ্রামে ‘হোছাইন ডেইরি এন্ড এগ্রো’ নামে একটি গবাদিপশুর খামার গড়ে তোলেন। এর কয়েক বছর পর চোরের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় তারা খামারে দুটি জার্মান শেফার্ড জাতের কুকুর নিয়ে আসেন। সেই থেকে কুকুর দুটি খামারের পাহারাদার।
আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এই খামারে বিভিন্ন জাতের ৫৪টি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। ওই খামারে থাকা প্রতিটি গরুর মূল্য সর্বনিম্ন এক লাখ ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। বুধবার পর্যন্ত ১৪টি গরু বিক্রি হয়েছে। আর বাকি ৪০টি গরু।
সরেজমিনে দেখা যায়, জার্মান শেফার্ড দুটিকে খামারের প্রধান ফটকের পাশে লোহার খাঁচায় রাখা হয়েছে। কোনো অপরিচিত ব্যক্তি খামারের প্রধান ফটক অতিক্রম করার চেষ্টা করলেই কুকুর দুটি তৎপর হয়ে উঠে। যতক্ষণ পর্যন্ত খামারের মালিক বা কর্মচারীরা এগিয়ে না আসেন ততক্ষণ পর্যন্ত কুকুর দুটি আক্রমণাত্মক আচরণ করতে থাকে। ফলে খামারের নিরাপত্তা নিয়ে তেমন একটা চিন্তা করতে হয় না।
খামারের তত্ত্বাবধায়ক মো. শাহেদ বলেন, আমাদের মালিক শখের বশে খামারটি শুরু করার পর চোরের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় জার্মান শেফার্ড জাতের কুকুর দুটিকে খামারের নিরাপত্তার জন্য নিয়ে এসেছিলেন। সারাবছর এ খামারে অর্ধশতাধিক গরু লালন-পালন করা হয়। কুকুর দুটি এই গরুগুলোর পাহারাদার হিসেবে কাজ করে। দিনে কিংবা রাতে, অপরিচিত কোনো ব্যক্তিকে খামারে প্রবেশ করতে দেখলেই কুকুর দুটি হইচই শুরু করে দেয়। কুকুরগুলোর জন্য খামারের নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ খামারে কর্মরতরা অনেক বিশ্বস্ত। তবে তারা সারাদিন কাজকর্ম করে ক্লান্ত হয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। তখন চোরের দল এসে যদি গরু চুরি করে নিয়ে যায় তাহলে অনেক বেশি লোকসানের মুখে পড়তে হবে। কিন্তু কুকুর রাতে সহজে ঘুমায় না। আর ঘুমিয়ে গেলেও কোনো শব্দ পেলে জেগে যায়। এতে চুরি হওয়ার সম্ভাবনা একদম নেই বললেই চলে। তারই প্রেক্ষিতে কুকুর দুটিকে খামারে পাহাড়াদার হিসেবে রাখা হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, চোরের উৎপাত ঠেকাতে গবাদিপশুর খামার পাহাড়ায় কুকুর রাখা এটি অবশ্যই ভালো একটি পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে প্রথমে কুকুরকে অবশ্যই জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। তবে কুকুরের আকস্মিক আক্রমণে কোনো ব্যক্তি যদি আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহলে এর দায় অবশ্যই খামারের মালিককে নিতে হবে।
অমিয়/