চট্টগ্রামে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব সম্প্রদায়ের নানা বয়সী মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘সম্প্রীতির আড্ডা।’ আড্ডায় সবাই একটি বৈষম্যবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কথা বলেছেন।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকালে চট্টগ্রাম মহানগরের জামালখান এলাকায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সম্প্রীতির আড্ডায় অংশ নেওয়া মো. ইলিয়াস হোসেন নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ নেই। আমাদের বড় পরিচয়, আমরা মানুষ। সবাই মিলেমিশে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে থাকবে পরম মমতা আর ভালোবাসা।’
বিজন বড়ুয়া বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই রাত জেগে অন্য ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি, উপাসনালয় পাহারা দিতে হচ্ছে। এটা খুব দুঃখজনক। এমন বাংলাদেশ আমরা প্রত্যাশা করি না। আমরা চাই একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।’
অনুপ সেন বলেন, ‘ধর্মীয় পরিচয় বাদ দিয়ে বাংলাদেশের নানা সমস্যা সমাধান করতে আমরা সবাই হাতে হাত রেখে কাজ করে যেতে চাই। দুর্নীতি রোধ, নারীর ক্ষমতায়ন, বিভিন্ন অনিয়ম, মাদকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং মানুষের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য কাজ করে যেতে হবে।’
সোমবার (১২ আগস্ট) সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ও ফিল্ম মেকার সাইদ খান সাগর ফেসবুকে ঘোষণা দেন, ‘ধর্ম নিয়ে বর্তমানে কিছু মানুষ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। তার বিপরীতে ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা রোজা রেখে এবং অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের উপাসনালয়ে উপাসনা করবেন। তারপর ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় ইফতারের সময় সব ধর্মের বন্ধুরা নগরের জামালখানে খাবার খাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এতে সাড়া দিয়ে জামালখানে উপস্থিত হন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নানা শ্রেণি-পেশার প্রায় ১৫০ জন মানুষ।’
সাইদ খান সাগর খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা এই আড্ডার আয়োজন করেছি এটুকু বুঝাতে যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে বিশেষ কিছু নেই। আমরা সবাই প্রজাতন্ত্রের নাগরিক। তাই আমাদের সবাইকে নাগরিক অধিকার দিতে হবে। এই নাগরিক অধিকার পেতে হলে ধর্মীয় পরিচয় ভুলে আমাদের একত্র হতে হবে। কেউ যেন ধর্মকে ব্যবহার করে তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পারে, সে লক্ষ্যে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু হামলার নামে বহির্বিশ্বে যে ভুল তথ্য ও প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, সে ব্যাপারেও সচেতন করে তোলাটা জরুরি।’
ইফতেখারুল/ইসরাত চৈতী/অমিয়/