উপকূলের মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম নদীভাঙন। প্রতিবছর বর্ষায় পটুয়াখালীর গলাচিপায় নদীভাঙনে রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয় যাচ্ছে। এ ছাড়া উপজেলায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে হাজার হাজার পরিবার। ভাঙন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেবে অন্তবর্তী সরকার, এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বর্ষায় নদীভাঙনের কারণে জেলার গলাচিপার পানপট্টি এলাকার রাস্তাঘাট, হাট-বাজার নদীতে বিলীন হচ্ছে। ভাঙনের কারণে কৃষিজমি ও বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত পরিবার। ধনীরা অন্য জায়গায় জমি কিনে ভিটা ছাড়লেও নিম্নবিত্তরা সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। ভাঙনের কারণে এলাকায় মানচিত্র থেকে প্রতিদিনই কমছে গ্রামের সীমানা।
গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিক সরদার বলেন, ‘আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রুত ব্লক দিয়ে শক্তপোক্তভাবে এখানে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হোক।’
পানপট্টি লঞ্চঘাট এলাকার চায়ের দোকানি নুরুল হাসান বলেন, ‘প্রতিবছর ঝড়-বন্যা হলে এখানে নদীভাঙন শুরু হয়। ভাঙন থেকে দোকানঘর বাঁচাতে গত পাঁচ বছর ধরে সেটি ভেঙে সরিয়ে আবার নতুন করে গড়তে হচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে কী খেয়ে বাঁচব?’
সরেজমিনে দেখা গেছে, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা সড়কপথ বিচ্ছিন্ন একটি উপজেলা। রাঙ্গাবালী উপজেলা থেকে গলাচিপার পানপট্টি হয়ে জেলা শহরে যেতে হয়। যাতায়াতে ব্যবহৃত হয় লঞ্চ, ট্রলার বা স্পিডবোট।
রাঙ্গাবালী থেকে ট্রলারে আসা যাত্রী সিদ্দিক মাঝি বলেন, ‘নদীভাঙনের কারণে পানপট্টি লঞ্চঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে আছে। আমরা রাঙ্গাবালী থেকে এসে পানপট্টি লঞ্চঘাট নামলেও, এই ঘাট দিয়ে সড়কে উঠতে খুব কষ্ট হয়।’
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘ভাঙনকবলিত এলাকা ইতোমধ্যে পরিদর্শন করেছি। ওখানে আমাদের প্রাথমিক জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে একটি প্রকল্পও অনুমোদন হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে।
এদিকে নদীভাঙনে শুধু পানপট্টি নয়, এর মতো উপজেলার বদনাতলী, ডাকুয়া ও আমখোলা ইউনিয়নে রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।