ঢাকা ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানরা দিচ্ছেন ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ এএম
আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানরা দিচ্ছেন ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ
ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আত্মগোপনে থাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা দিচ্ছেন ট্রেড লাইসেন্স এবং নাগরিক সনদ। প্যাডে এখনো শেখ হাসিনা সরকারের থিম স্লোগান ব্যবহার করছেন। যাদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের যোগাযোগ রয়েছে, তাদের কেউ কেউ সনদ পাচ্ছেন। তবে এই সেবা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, মেয়র এবং চেয়ারম্যানসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের বেশির ভাগ ইউপি সদস্যরাও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। যোগাযোগ রাখছেন না কেউই। চেয়ারম্যানদের ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ। 

এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকসেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। জরুরি প্রয়োজনেও পাচ্ছেন না কোনো সনদ। তবে যাদের সঙ্গে চেয়ারম্যানদের ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে, তারাই এ সেবা পাচ্ছেন। 

উপজেলার কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরী গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান। ৩৮ দিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদে আসেননি। থাকছেন না কুমিরা এলাকার নিজ বাড়িতেও। তবুও এক ব্যবসায়ীকে গত ১ সেপ্টেম্বর একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছেন তিনি। অজ্ঞাত জায়গা থেকেই এই ট্রেড লাইসেন্সটি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে পরিষদে না এসেও ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যদি ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারেন, তাহলে পরিষদে কেন আসছেন না, এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মধ্যে।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের কিউআর কোডসংবলিত একটি ট্রেড লাইসেন্স নুর-সু বিতান নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে দেন চেয়ারম্যান। এর লাইসেন্স নম্বর-১৪৭৫। প্রোপ্রাইটরের নাম মোহাম্মদ নুরুল আবছার। তিনি কুমিরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে। লাইসেন্স ফি বাবদ তিনি যে টাকা নিয়েছেন সেটা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে কি না নিশ্চিত নয় ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারীরা। লাইসেন্সের মেয়াদ দেওয়া হয়েছে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

এদিকে প্যাডের ওপর লেখা ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র, শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র, ‘শেখ হাসিনার দর্শন, সব মানুষের উন্নয়ন’। যদিও শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যান। কুমিরার চেয়ারম্যান এখনো কেন শেখ হাসিনা সরকারের থিম ব্যবহার করছেন। এটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক।

এ বিষয়ে কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শোভন কান্তি ভৌমিক বলেন, ‘পরিষদে চেয়ারম্যান আসতে পারছেন না, সেটা তো সবাই জানেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্য সনদপত্র স্বাক্ষর করে পাঠান তিনি। তবে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। সেবা যাতে অব্যাহত থাকে সেই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা আছে। একটু দেরি হলেও নাগরিকসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পরিষদে কয়েকজন ইউপি সদস্য মাঝে মধ্যে আসেন।’

এদিকে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরীর বক্তব্যও একই রকম। ৫ আগস্টের পর থেকেই পরিষদে আসেননি বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ্ মিয়াজি। ওয়ারিশ সনদসহ অন্যান্য নাগরিক সনদে স্বাক্ষর দেন চেয়ারম্যান। সেবাগ্রহীতা ও পরিষদের পক্ষ থেকে কাউকে পাঠিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে তিনি সম্ভবত শহরেই বসবাস করছেন। এই পরিষদে শুধু জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা সমাজসেবক কর্মকর্তা লুৎফুনন্নেছা বেগম।

উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, ‘পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম গত জুন মাসে হজে গিয়েছিলেন। তিনি যাওয়ার আগে দুটি প্যাডে স্বাক্ষর নিয়ে রেখেছিলাম। এর মধ্যে একটি প্যাড শেষ আরেকটি আছে। তবে স্বাক্ষর আগের হলেও বর্তমানের তারিখ দেওয়া হচ্ছে। পরিষদে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে আছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম।’

কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড, সৈয়দপুর ও ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তাদের পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

চমেক হাসপাতালে সাবেক এমপি লতিফ

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম
চমেক হাসপাতালে সাবেক এমপি লতিফ
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-১১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এমপি লতিফকে (৫৬) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে কারারক্ষীরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। 

এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন কারারক্ষী সন্ধ্যার দিকে সাবেক এমপি লতিফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। লতিফ হুইল চেয়ারে বসে ছিলেন। তার মুখে মাস্ক এবং ডান দিকের কপালে ব্যান্ডেজ দেখা যায়। 

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার খবরের কাগজকে বলেন, কারারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, বাথরুমে মাথাঘুরে পড়ে ডান পাশের কপালে আঘাত পান সাবেক এই সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের ১৯নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। 

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওজু করতে গিয়ে পা পিছলে বাথরুমে পড়ে আহত হয়েছেন তিনি। বয়স্ক মানুষ, উনার বাইপাস হয়েছে, তাই এমনটা হতে পারে। উনাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

তারেক মাহমুদ/এমএ/

চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করা হবে: এম সাখাওয়াত হোসেন

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করা হবে: এম সাখাওয়াত হোসেন
ছবি: খবরের কাগজ

নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করা হবে। এতে কনটেইনার লোডিং-আনলোডিং আরও সহজ হবে। বন্দরে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে। হয়রানি ও দূর্নীতি কমে যাবে।

মঙ্গলবার ( ৮ অক্টোবর) বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে  এ সব কথা বলে তিনি।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন,  চট্টগ্রামে বন্দরের ইয়ার্ডে ২০ বছরের পুরনো কনটেইনার পড়ে আছে। ১৫ বছর আগের গাড়ি পড়ে আছে। কাস্টমস কী করছে আমি জানি না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। কনটেইনারের নিলাম করা দরকার। আটকে থাকা কনটেইনারগুলো ডেলিভারি দিয়ে ইয়ার্ড খালি করা দরকার। পুরনো কনটেইনার জায়গা দখল করে আছে এটি বড় সমস্যা। আমি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলবো। যেন কাস্টমস হাউস দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করে।

এ বন্দরের সমস্যা দূর করতে হলে শুধু পোর্ট নয় আরও অনেকগুলো সংস্থাকে এক সঙ্গে উদ্যেগ নিতে হবে উল্লেখ করে নৌ উপদেষ্টা বলেন,   চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও সচল করতে হলে অটোমেশন করতে হবে। আমাদের কাছে চট্টগ্রাম বন্দরের বিনিয়োগের লোক আছে। তারাই কাজ করবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বে- টার্মিনাল প্রকল্প আমি পরিদর্শন করেছি। এ মূহুর্তে বে-টার্মিনাল সম্পর্কে কিছু বলবো না। আপাতত এখানে কোন সমস্যা নেই । এখানে বিনিয়োগ হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বসে আসে বেটার্মিনালে বিনিয়োগের জন্য। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বিনিয়োগ করতে চাইছে।

তিনি আরও বলেন, ২২ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের অনেক বেআইনি কাজ হয়েছে। সেগুলো বন্ধ করা হবে। উন্নয়ন প্রকল্পসহ সবকিছু ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে হবে। এখন আর ভাগবাটোয়ারা করে খাওয়ার সুযোগ নেই।

বেটার্মিনাল নিয়ে নৌ উপদেষ্টা বলেন, বেটার্মিনাল হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়বে। দেশের আরও বিদেশি বিনিয়োগকারী আসুন। আমরা বিদেশিদের উৎসাহিত করবো। সিংগাপুর, সৌদি আরব, নেদারল্যান্ড, দুবাই আমাদের বন্দরে বিনিয়োগ করছে। দেশের উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। বেটার্মিনালে জেনারেল কার্গো চট্টগ্রাম বন্দরের আন্ডারে থাকবে। আগামি সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক আছে। দেশের জন্য যেটা ভাল সেটা আমরা করবো। ডাইরেক্ট বিনিয়োগের জন্য অনেক দেশ বসে আছে। দেশের উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। আমার দেশের ক্ষতি হবে এমন কিছুই করা হবে না।

দূর্নীতি বন্ধ করতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বড় দূর্নীতি বন্ধ করলে ছোট দূর্নীতিও বন্ধ হয়ে যাবে। এখানে (বন্দরে) অনেক অনিয়ম হয়েছে। অনেকজনকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এ বন্দরকে জঞ্জালমুক্ত করতে হবে, বন্দরকে আরও দ্রুত তম করতে হবে।  দূর্নীতিমুক্ত করতে হবে, টেন্ডারে অনিয়ম হয়েছে এখন থেকে ওপেন টেন্ডার হবে। বহুবছর ধরে বিনা রেজিস্টেশনে গাড়ি চলছে। বিআরটিএকে বলবো সেই গাড়িগুলো বন্ধ করতে। সব কিছু নিয়মের মধ্যে চলে আসতে হবে। সব কিছু নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে চলতে হবে। যেখানে দূর্নীতি হবে সেখানে আপনারা লিখবেন, বলবেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি চট্টগ্রাম বন্দর দেখতে আসলাম, শিখতে আসলাম, বুঝতে আসলাম। আস্তে আস্তে বন্দরের সব সমস্যা সমাধান হবে। আমি তিনদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দর ঘুরে ঘুরে দেখেছি। সমস্যাগুলো দূর করতে সময় লাগবে। ইক্যুইপমেন্ট যা আসছে সব গুলোর সঠিক ব্যবহার হবে। দেশের স্থলবন্দরগুলোতেও অনেক অনিয়ম চলছে। সব দূর করা হবে। সমাধান হতে সময় লাগবে। দুই মাসের তো সম্ভব না। ২২ মাস সময় দেন।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে বিদেশি অপারেশনাল সংস্থা বেশ কিছু ইক্যুইপমেন্ট এনেছেন। তারা কাজ শুরু করেছে। আমাদেরও কিছু ইক্যুইপমেন্ট আছে। আমরা মাত্র ১৩শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু আগামি ২২ বছরে আমাদের আয় হবে ৫ হাজার কোটি টাকা।

আবদুস সাত্তার/এমএ/

বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির লাশ ২৬ ঘণ্টা পর ফেরত

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩২ পিএম
বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির লাশ ২৬ ঘণ্টা পর ফেরত
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা ভর্তি সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে কামাল হোসেন নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। পরে তার মরদেহ ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের যশপুর বিওপির কাছে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত কামাল হোসেন সদর দক্ষিণ উপজেলার কুড়িয়াপাড়া গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনার দীর্ঘ ২৬ ঘন্টা পর পতাকা বৈঠক শেষে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৯টার দিকে তার মরদেহ ফেরত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ইফতেখার হোসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাহাড়পুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন কামাল হোসেনসহ ৩ জন। কাঁটাতারের বেড়া টপকানোর পর এ তিনজনকে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরই একটি গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। এ সময় সেখান থেকে দুইজন দৌড়ে পালিয়ে গেলেও কামাল হোসেন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকেন। এরপর আরও একটি গুলির শব্দ শোনা যায়।  গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন কামাল। পরে বিএসএফ সদস্যরা একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ নিয়ে যায়।

নিহত কামালের মেয়ে কামরুন্নাহার জানায়, লাদেন কামাল ও শাহ আলম নামে দুই লোক ৭ তারিখ বিকালে আমার বাবাকে নিয়ে সীমান্তে যায়। এরপর আর উনি আসেনি। রাতে লোকজন খবর দেয় আমার বাবাকে বিএসএফ গুলি করে মেরে ভারতে নিয়ে গেছে। আমার বাবাকে কেন মারল তারা আমি জানি না। লাদেন কামাল আর শাহ আল পালিয়ে গেছে।

নিহত কামালের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে কোন অপরাধের অভিযোগ থাকলে তারে জেলে দিয়ে বিচার করতেন। এভাবে মেরে ফেললেন কেন?

১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ইফতেখার হোসেন জানান, কামাল হোসেন নামের ওই যুবক সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে পরলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

জহির শান্ত/এমএ/

সীতাকুণ্ডে সাবেক দুই এমপিসহ ২১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০০ পিএম
সীতাকুণ্ডে সাবেক দুই এমপিসহ ২১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন ও দিদারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনের দুই সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। 

সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে মামলাটি দায়ের করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী পরিবারের গাড়িচালক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান তারেক।

থানায় মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর বেলা ১১-১২ টার সময় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী, লায়ন আসলাম চৌধুরীর বড় ভাই ইছহাক কাদের চৌধুরীকে ফৌজদারহাটের জলিল বাজারস্থ নিজ বাড়ী ও রেলগেইটে হত্যার উদ্দেশ্য জখম, চুরি, রেলওয়ের সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধনসহ ককটেল বিস্ফোরণ এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপরাধ করা হয়েছে। 

এ মামলায় সীতাকুণ্ডের সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলমকে ১ নম্বর আসামি, সাবেক এমপি এস এম আল মামুনকে ২ নম্বর ও তার ছোট ভাই এস এম নোমানকে ৩ নম্বর আসামি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়াকে ৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে। 

এ ছাড়া কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ চৌধুরী, আসলাম (পিএস আসলাম), ইউপি চেয়ারম্যান মনির আহমেদ, সাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী, রেহান উদ্দিন, তাজুল ইসলাম নিজামী চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্য আ.ম.ম দিলসাদ, নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান, গোলাম মহিউদ্দিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফুল আলম চৌধুরী রাজু, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মো. শায়েস্তা খান প্র. সাজু, মো.নাজিম উদ্দিন, মোঃ আসলাম, মাসুদ, রিমন, মোরশেদ, শিবলু, সাবের, মোঃ আমানত, মোঃ হাজী মহসিন রেজা, সৈয়দ আব্দুল মতিন, মোঃ আলা উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন স্টার, মোঃ মহিউদ্দিন মনি, খোকন, চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান, সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম জসিম, দিদারুল আলম অ্যাপোলো, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম রিয়াদ জিলানী, মো.নাছির, এসএম নজরুল ইসলাম, গোলাম মাসুদ পারভেজ, মোঃ ইসমাইল, তৌহিদুজ্জামান মেজবা, সাব্বির আহমেদ, শাহাদাত হোসেন, ইকবাল হোসেন টিটু, আমজাদ হোসেন, সাইদুর রহমান মারুফ ( পিএস মারুফ), আব্বাস, মাহবুব আলম, আশরাফ উদ-দৌলা, মো.রিদুয়ান সাইমন, মোজাম্মেল, ইকবাল সরওয়ার, পারভেজ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন, ফাহিম মোস্তফা, দিদারুল আলম, রফিক উল ইসলাম, মহসিন, মোহাম্মদ আলী, অহিদুল আলম, আবুল কালাম আজাদ প্র. বাবু, মো. ফরিদ, সিরাজুল আজম চৌধুরী প্র. রেজা, জসিম উদ্দিন, ইব্রাহীম হাসান। 

এদিকে সীতাকুণ্ড থানায় হওয়া দুই মামলায় তিন আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন,  আব্দুল হান্নান, সাইফুল ইসলাম ও মো. নিজাম উদ্দিন। এদের মধ্যে হান্নান (৪৭) উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের নিউ  রাজাপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে ও কুমিরা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫) মুরাদপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল ইসলাম ছেলে এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। অপরজন মো. নিজাম উদ্দিন (৩৫) একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে এবং ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি। 

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, থানায় রুজু হওয়া দুটি বিস্ফোরক মামলায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সিভাসুতে চলছে কমপ্লিট শাটডাউন

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম
সিভাসুতে চলছে কমপ্লিট শাটডাউন
ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) কর্মরত যেকোনো জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে ভিসি হিসেবে নিয়োগের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একাত্মতা প্রকাশ করায় বন্ধ রয়েছে প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক কার্যক্রম। 

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে সমবেত হয়ে তৃতীয় দিনের মতো শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তাসিন বলেন, ‘গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা কর্মসূচি পালন করে আসছি। আমাদের দাবির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের টনক নড়ছে না। আমরা বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাককালীন সময়ের এই শিক্ষকরা নিজেদের ভার্সিটির উপাচার্য হয়ে এলে ক্যাম্পাসের উন্নয়ন, ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যকার সম্পর্ক বৃদ্ধিসহ পুরো বিশ্বে ভেটেরিনারি শিক্ষায় বাংলাদেশ সিভাসুর মাধ্যমে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। পূজার বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বন্ধ হওয়ার আগেই যেন সিভাসুতে অভ্যন্তরীণ ভিসি নিয়োগ হয়। অন্যথায় আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করব।’ 

উল্লেখ্য, নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে ভিসি নিয়োগের দাবিতে সিভাসুর শিক্ষার্থীরা গত ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করেন। এরপর ৩ অক্টোবর ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট ও অবস্থান কর্মসূচি, ৪ অক্টোবর বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল, ৫ অক্টোবর রোড ব্লক, ৬ অক্টোবর কমপ্লিট শাটডাউন ও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভিসি নিয়োগের আলটিমেটাম এবং ৭ অক্টোবর শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারী সবাই একসঙ্গে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান করেন। ৮ অক্টোবর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা প্রেস কনফারেন্স করে বিকেল ৫টায় ভিসির বাসভবন ও ভিসির অফিসে তালা দেন।