ঢাকা ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

হত্যা মামলার বিচার এবং সাম্প্রতিক প্রেক্ষিত

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৩ এএম
হত্যা মামলার বিচার এবং সাম্প্রতিক প্রেক্ষিত
মাসুদ আহমেদ

সরকার পতনের পরপরই শুরু হয়েছে গণহত্যার জন্য দায়ী সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, পুলিশ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাদিক্রমে হত্যার অপরাধে ফৌজদারি মামলা দায়ের। যদিও ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের গণহত্যা এখনো স্বীকৃত হয়নি। ঢাকা মহানগরসহ আরও ছয়টি স্থানে এ পর্যন্ত ৪১০টি মামলা হয়েছে। ডেপুটি কমিশনারের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। এসবে আসামি ও সাক্ষীর সংখ্যা মোট ৬০ হাজার। 

এই মানুষগুলোর বিরুদ্ধে প্রাথমিক চার্জশিট দিতে প্রয়োজন হবে তাদের নাম, বাবা ও মায়ের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, অপরাধের ধরন, সিআরপিসির প্রযোজ্য ধারা, সাক্ষীদের নাম ও ঠিকানা, সাক্ষ্য, আলামত ও অকুস্থলের বর্ণনা। এ ছাড়া লাগবে ভিডিও ক্লিপ, এফআইআর, নিহতের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন, লাশ শনাক্তকারীর স্বাক্ষর, ধ্বংসকৃত সরকারি সম্পত্তির চিত্র এবং বিমাকারীর প্রতিবেদন ইত্যাদি। 

একেকজন তদন্তকারী কর্মকর্তাকে এর একেকটি মামলায় শুধু এই বিষয়গুলো প্রথমে হাতে লিখে এবং পরে টাইপ করে চার্জশিটের ছকে পেশ করতে কমপক্ষে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে। তার পর তার ওপরস্থ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সার্কেল এএসপি, অতিরিক্ত এসপি ও এসপির সঙ্গে এবং কখনো কখনো সিনিয়র কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এগুলো যাচাই-বাছাই শেষ করে আদালতে পাঠাতে আরও তিন মাস করে সময় লাগবে। এগুলো হচ্ছে সেই সব মামলাসংক্রান্ত, যেগুলোর চার্জশিট সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার অনুমোদন করে আদালতে পাঠাতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত। 

আরেক শ্রেণির মামলা এর মধ্যেই পাওয়া যাবে, যেগুলোর চার্জশিট প্রণয়নে জেলা জজ আদালতে শুনানি সম্পন্ন করতে হবে। এই মামলাগুলো যেহেতু হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংসসংক্রান্ত এবং এগুলো দায়ের হচ্ছে ঝড়ের গতিতে, সেহেতু এগুলোর বিচার করার জন্য প্রবল জনচাপ এবং ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনৈতিক দলের প্রবল চাপ থাকবে দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে। বাংলাদেশে বিচারকের সংখ্যা ২ হাজার ১০০ জনের মতো। বিচারাধীন এবং অনিষ্পন্ন মামলার সংখ্যা প্রায় ৪২ লাখ। নতুন দায়েরকৃত মামলার দ্রুত বিচার দাবি করা মানেই পুরোনো মামলার বাদীদের প্রতি অন্যায় করা। 

কারণ এতে ‘আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এবং আগে আসলে আগে পাবেন’- সাধারণ ন্যায়বিচারের ভিত্তির চরম লঙ্ঘন। দ্রুত বিচার মানেই হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিচারকরা আগের মামলার শুনানি স্থগিত করে এই ৪১০টি মামলার বিরতিহীন শুনানি গ্রহণ ও বিচারকাজ সম্পন্ন করা; যেমন সাম্প্রতিকালে নোয়াখালীর মাদ্রাসা মামলায় নুসরাত হত্যাকাণ্ডে এবং চট্টগ্রামে ওসি প্রদীপের মামলায় আদালত একাদিক্রমে শুনানি ও বিচারকার্য সম্পন্ন করে রায় দিয়েছিলেন। 

ধরা গেল, সেই বেদম বিচারকাজ আরম্ভ হলো। তখন এই মামলাগুলো যাদের কলমের ভেতর দিয়ে আগাতে থাকবে, তাদের মানসিকতা এবং অবস্থানের ওপর বিচারের মান ও গতি নির্ভর করবে। যেমন প্রধান উপদেষ্টা প্রথমেই বলেছেন, ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে প্রাণহানি, সম্পদহানি এবং নৈরাজ্য হয়েছে তার জন্য আন্দোলনকারী ছাত্রদের দায়ী করা যায় না, দায়ী করা যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। বাস্তব হলো এই যে, আন্দোলনকারীদের হাতে ৪২ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। সরকারি গাড়ি ও মেট্রোরেলের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। তাহলে এই দুটি বিষয়ে ছাত্রদের বিরুদ্ধে কি মামলা বা শাস্তি হবে না? 

কারণ তারা তো নির্দোষ বলে সরকারপ্রধান উল্লেখ করেছেন, কিন্তু কোনো ইনডেমনিটি জারি করা হয়নি। সরকারি সম্পত্তি না হয় রেহাই পেল, কারণ সেগুলো অপ্রাণীবাচক। কিন্তু ৪২ জন পুলিশের মারা যাওয়ার মামলা থেকে রেহাই দেবে কে? সন্তর্পণে পুলিশ বা নিহতদের স্বজন বাদী হয়ে মামলাগুলো করবেন, তা নিশ্চিত। তাতে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এদের সহকর্মীরা এবং সমর্থকরা পুলিশের নানা স্তরে কর্মরত। 

চার্জশিট প্রণয়ন এবং আদালতে অনুমদিত হওয়ার স্তর পর্যন্ত এরা চার্জশিটের উপজীব্যকে তাদের মনমতো না হলে কৌশলে তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবেন। তেমনি রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি সহানুভূতিশীল গোয়েন্দা ও পুলিশ সদস্যরাও মামলার চার্জশিটের উপজীব্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবেন। প্রধান রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সমন্বয়করা সরকার পতনের প্রথম দিন থেকেই বলে আসছেন যে, জেলা, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বিচারকদের অধিকাংশ আওয়ামী প্রেতাত্মায় ভরপুর। 

এই বিশ্বাসে প্রথম কয়েক দিন বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ স্তর থেকে ম্যাজিস্ট্রেট স্তর পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং পদত্যাগ করানো হয়েছে। কিন্তু একজন জেলা জজ বা উচ্চতর আদালতের বিচারকের শূন্যস্থান কোনো বিপ্লবের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব নয়। কারণ এই না যে, এই সার্ভিসে প্রয়োজনের অতিরিক্ত এমনকি ৫০ জন বিচারক রিজার্ভ রাখা হয়। একজন বিচারক তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে।

ফলে এই শূন্যস্থান পূরণ করে দ্রুত বিচার করা অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব হবে। অন্যদিকে আবার আগের আমলের মতো শাসন বিভাগ যদি বিচারকদের মামলার রায়ের ব্যাপারে তাদের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন, তা হলে সেই সংস্কৃতি আগের আমলের মতোই নিচু হবে। বিচার কোনো তড়িঘড়ির বিষয় নয়। জেলা জজ পর্যায়ে যে রায়ই হোক, পরবর্তী দুটি স্তরে আপিল নিষ্পত্তিতে কী রকম সময় লাগে, তা স্মরণ করতে তিনটি মামলার উদাহরণই যথেষ্ট। 

প্রথমত, শাজনীন খুনের মামলায় বিচার শেষ হতে ১৮ বছর; দ্বিতীয়ত, আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১২ বছর; তৃতীয়ত, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার বিচার হতে ৮ বছর লেগেছিল। এই সর্বশেষ মামলাটি এখন ডেথ রেফারেন্স হিসেবে ৫ বছর ধরে উচ্চতর আদালতে বিবেচনাধীন আছে। অপরদিকে ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সংঘটিত খুনের মামলার বিচার ও রায় কার্যকর হতে ৩৫ বছর সময় লেগেছে। এর মধ্যে ৬ বছর সংক্ষুব্ধ পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও। আবার বিডিআর হত্যাকাণ্ড মামলায় বিচার আরম্ভ হওয়ার পর সাড়ে ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। রায় এখনো অনিশ্চিত। 

পুলিশের সাবেক আইজি মামুন পলাতক ও কমিশনার আসাদুজ্জামান গ্রেপ্তার। তারাসহ ওই বিভাগের যারা সাবেক সরকারের অবৈধ সুবিধা ভোগ করেছেন এবং তাদের আমলে অধস্তন পুলিশ কর্মচারী নিয়োগ করেছেন, তাদের প্রভাব এই বিশাল বাহিনীতে অনেকাংশেই অক্ষুণ্ন রয়েছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সগিরা মোর্শেদ হত্যাকাণ্ড হাইকোর্টের একটি স্থান থেকে অযৌক্তিকভাবে আগত এক নির্দেশে মামলাটির বিচারকাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়। 

তারা সমাজের খুব প্রভাবশালী লোক ছিলেন না। তার পরও ক্ষমতার রশিতে এভাবে প্রভাব বিস্তার করা এই সমাজেই সম্ভব। মামলাটি শেয হতে ৩৮ বছর লেগেছে। সাম্প্রতিক মামলাগুলোর বাদী, আসামি ও সাক্ষীর মধ্যে মৃত ব্যক্তি, শিশু, বিদেশে অবস্থানরত এবং একেবারেই অসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কারণ তাড়াহুড়ো। আমরা আত্মরক্ষায় সমর্থ একটা জাতি। ফলে প্রসিকিউশনের দক্ষতা আমাদের সামান্য। সরকারি মামলায় বিবাদীর উকিল যতটা দক্ষতা দেখান, সরকারি উকিল ততটা দক্ষতা তো দেখানই না বরং অনেক সময় নীরব থাকেন। ফলে আসামি খালাস পেয়ে যান। 

এই মামলাগুলোর ক্ষেত্রেও কোর্ট দারোগা, পেশকার, পিপি, জিপি এবং আদালতের অন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বৃহৎ অংশ অভিযোগ প্রমাণের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা নেবেন বলে মনে হয় না। অভিযুক্তরা অত্যন্ত শক্তিশালী, বিখ্যাত, প্রভাবশালী এবং ব্যয়বহুল আইনজীবী নিয়োগ করবেন। তাদের সামনে অখ্যাত সরকারি উকিলরা দুর্বলতার পরিচয় দেবেন। কাঁচাভাবে মামলা দায়েরের ফলে তা বৃদ্ধি পাবে। মুন সিনেমার পাকিস্তানি মালিক বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ৩২ বছর মামলা লড়ে ওই সম্পত্তির মালিকানা ফিরে পান। 

১৯৭২ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর দালালদের মামলায় বিবাদীদের সমর্থন করেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। এমনিতেও মৌলিকভাবে ব্রিটিশ আইন অপরাধীর পক্ষে থাকে। বাদীর উকিল অত্যন্ত মেধাবী, সৎ ও প্রভাবশালী না হলে অভিযোগ প্রমাণ করা প্রায় ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। এ দেশে নারী নির্যাতনসংক্রান্ত মামলার শতকরা ৯৫ ভাগ অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এসব বাস্তবতা বিবেচনায় অত্যন্ত সম্পদশালী এবং প্রভাবশালী এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনীত মামলাগুলো খুব দক্ষতার সঙ্গে দায়ের এবং চার্জশিট প্রণয়ন না করলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা যাবে বলে মনে হয় না। 

মামলাগুলোতে অনেকেই হুকুমের আসামি, অনেক সাক্ষী বিদেশ চলে গেছেন, অনেকেই মৃত ও আহত, অনেকে সময়ের পরিসরে এই বিষয়ে আর আগ্রহী থাকবেন না। অনেক ক্ষেত্রে বিচারকও রাজনৈতিক কারণে অভিযুক্তের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন, কেউ কেউ আবার বোধ করবেন বিব্রত। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ও দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ ছাড়া মামলাগুলো দায়ের করা বিচারপ্রার্থীর জন্য আশাপ্রদ হবে না। ব্রিটিশদের প্রণীত ফৌজদারি আইন অক্ষুণ্ন আছে। তা একান্ত নৈর্ব্যত্তিক। সেগুলোর অন্তর্নিহিত লক্ষ্যের সঙ্গে পূর্ণ সামঞ্জস্য রেখে মামলাগুলো দায়ের করা উত্তম হবে। 

লেখক: সাহিত্যিক 
[email protected]

কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৫ এএম
কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
বৃষ্টি না হলেও বন্যার পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। ছবি : খবরের কাগজ

শেরপুরে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। এতে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে দুর্ভোগ কমেনি। এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে হাজার হাজার পরিবার। ত্রাণ কার্যক্রম চললেও অনেক জায়গায় তা পৌঁছায়নি। বন্যায় এখন পর্যন্ত এ জেলায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ফুলপুর ও ধোবাউড়া উপজেলায় প্রায় অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। খাবার-সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। যারা গবাদিপশু পালন করেন, তারা সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

শেরপুরে বন্যাদুর্গত এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেও ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ঢাকাস্থ শেরপুর জেলা সমিতির উদ্যোগে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপার ইউনিয়ন, সূর্যনগর, কাশেমপুর বাজারসহ বেশ কিছু দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। তবে ব্রহ্মপুত্র, দশানি ও মৃগী নদীর পানি সামান্য বেড়েছে। এসব নদীর পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ৪৭ হাজার হেক্টর আবাদি জমির আমন ধান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় মাছের ঘের তলিয়ে গেছে ৬ হাজারেরও বেশি। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা ও সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

ময়মনসিংহে গতকাল সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, ধোবাউড়ায় গত কয়েক দিন একটানা পানি বাড়লেও বৃষ্টি না থাকায় বর্তমানে কিছু এলাকায় পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। কোথাও সামান্য কমেছে। একই অবস্থা হালুয়াঘাট ও ফুলপুর উপজেলায়। পানিতে বহু মানুষ ঘরবন্দি থাকায় ব্যাপক কষ্টে দিনযাপন করছেন। এ ছাড়া তারাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

তিন উপজেলার স্থানীয়রা জানান, টানা বর্ষণে ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া, গামারীতলা, ঘোষগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে নেতাই নদের বাঁধ ভেঙে ও পাহাড়ি ঢলে গ্রাম প্লাবিত হয়। গতকাল সকাল থেকে পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

হালুয়াঘাট সাখুয়াই ইউনিয়নের সাখুয়াই গ্রামের আজিজুল রহমান বলেন, ‘গত কয়েক দিন এই ইউনিয়নে পানি কম থাকলেও নিচু এলাকা হওয়ায় এখন বাড়ছে। ইতোমধ্যে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। সাপ-বিচ্ছুর ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারছি না। রান্না করে খাবার খাওয়ার মতোও অবস্থা নেই। খুব কষ্টে আছি।’

ধোবাউড়া সদর ইউনিয়নের গুজিয়ারকান্দা গ্রামের হালিমা খাতুন বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যেই পানি গড়িয়ে পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়ে যায়। গতকাল সকাল থেকে পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। বাইরে বের হওয়ার মতো অবস্থা নেই। আমি এখনো ত্রাণসামগ্রী পাইনি। আমার দুটি গরু সাঁতরিয়ে একটু উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তবে এগুলোকেও খাবার দিতে পারছি না।’



কিশোরগঞ্জে দুই ডিমের আড়তে অভিযান, জরিমানা

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৩ পিএম
কিশোরগঞ্জে দুই ডিমের আড়তে অভিযান, জরিমানা
ডিমের আড়তে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ছবি : খবরের কাগজ

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডিম বিক্রি করায় কিশোরগঞ্জে দুই ডিমের আড়তকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সোমবার (৭ অক্টোবর) জেলা সদর ও কটিয়াদি উপজেলায় এসব অভিযান পরিচালনা করেন অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বণিক। 

এ সময় জেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এ কে এম সিয়াম হোসেন উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন জেলা আনসার ব্যাটালিয়নের একটি টিম।

হৃদয় রঞ্জন বণিক জানান, পাইকারি পর্যায়ে বেশি দামে ডিম বিক্রি ও ব্যবসায়ীরা মূল্যতালিকা প্রদর্শন করছেন না। এসব অপরাধে সদর উপজেলার বিন্নাটি বাজারে আল-মদিনা এন্টারপ্রাইজকে ২০ হাজার টাকা এবং কটিয়াদি উপজেলার আচমিতা বাজারের মায়ের দোয়া ডিমের আড়তকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। 

তাসলিমা আক্তার/সালমান/ 

সীমান্তে বেড়েছে অনুপ্রবেশ, সক্রিয় মানবপাচার

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
সীমান্তে বেড়েছে অনুপ্রবেশ, সক্রিয় মানবপাচার
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

হবিগঞ্জের মাধবপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। সেই সঙ্গে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মানবপাচারকারী চক্র। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু মানুষ এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। মাধবপুর সীমান্ত হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের প্রবণতা এখন সীমান্তরক্ষাকারী বাহিনীর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। স্থানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু সাধারণ মানুষ নয়, সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রভাবশালীদের আনাগোনাও বেড়েছে।

বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বলছে, অনুপ্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তে জনবল দ্বিগুণ করা হয়েছে। নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া মানবপাচারকারীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার সঙ্গে ভারতের প্রায় ৬০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলার এই সীমান্ত এলাকাটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশিদের জন্য শিক্ষা ও জরুরি চিকিৎসা ছাড়া সব ধরনের ভিসা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রেখেছে ভারত। এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর থেকেই হবিগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের মাত্রা বেড়েছে। এর মধ্যে সহজ পথ হিসেবে ভারতে গমনেচ্ছুরা মাধবপুর সীমান্ত এলাকাকে বেছে নিচ্ছেন। 

মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর, আন্দিউরা ও তেলিয়াপাড়া সীমান্ত ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকেই ওই এলাকায় অপরিচিত মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতা-কর্মী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরও প্রায় সময় ওই এলাকায় দেখা যাচ্ছে।

মাধবপুর সীমান্তের নিরাপত্তা ও টহল কার্যক্রম পরিচালনা করে সরাইল বিজিবি ব্যাটালিয়ন। তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে অনুপ্রবেশের সময় ২৫ জনের বেশি ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। তেলিয়াপাড়া সীমান্ত এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ইদানীং সীমান্ত এলাকায় অপরিচিত মানুষের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। তারা অল্প সময়ের মধ্যে এখান থেকে অদৃশ্য হয়ে যান।’

এদিকে গত ১ সেপ্টেম্বর মাধবপুরের সুরমা সীমান্ত এলাকা থেকে একটি বিলাসবহুল গাড়িসহ দুজনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে জানা যায়, গাড়িটি কুমিল্লার সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসিন বাহার সূচনার দেবর রুবেল মিয়ায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রুবেল মিয়া কুমিল্লার মানুষ হলেও মাধবপুরে তার বাড়ি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়দের মধ্যে রুবেল মিয়ার এ পথ দিয়ে ভারতে চলে যাওয়ায় আলোচনা রয়েছে।

সক্রিয় মানবপাচার চক্র

ভারতে অনুপ্রবেশে মানুষের আগ্রহকে পুঁজি করে সীমান্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি মানবপাচারকারী চক্র সক্রিয় হয়েছে। চক্রগুলো সীমান্ত পাড়ি দিতে ইচ্ছুক মানুষদের চুক্তির ভিত্তিতে সীমান্ত পাড় করে দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চক্রের এক সদস্য জানান, সীমান্ত পাড় করা হয় বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে। ভারতে যাওয়ার কারণ এবং আর্থিক সামর্থ্যের ওপর এটি নির্ভর করে। যেমন কেউ যদি কাজের জন্য যায় তা হলে এক রেট, ঘুরতে গেলে এক রেট, আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে স্থায়ীভাবে যেতে চাইলে এক রেট। সেটি জনপ্রতি তিন থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করে।

মানবপাচারের হাতিয়ার শিশু

সরাইল ২৫ বিজিবি ব্যাটালিনের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, ‘পাচারকারীরা পাচারের ধরন পাল্টেছে। বিশেষ করে তারা এখন শিশুদের ব্যবহার করছে। তারা মনে করে শিশু সঙ্গে থাকলে আটক করা হবে না। তাই যাদের পাচার করা হয় তাদের সঙ্গে এক বা একাধিক শিশু রাখার চেষ্টা করে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মাধবপুর সীমান্ত থেকে যাদের আটক করেছি তাদের মাধবপুর থানায় হস্তান্তর করেছি। পরে দেখা যায় থানায় কিছু লোক গিয়ে বলেন, শিশুদের অপরাধ কী। ওদের ছেড়ে দেন। বিভিন্ন কথা বলে আটকদের ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।’

টহল জোরদার-তালিকা তৈরি

মাধবপুরের ধর্মঘর, তেলিয়াপাড়া, আন্দিউড়া ও হরষপুর সীমান্তে টহল জোরদার করেছে ২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়ন (সরাইল)। একই সঙ্গে ওই এলাকায় সক্রিয় থাকা পাচারকারী চক্রের একটি তালিকাও তারা তৈরি করেছে।

২৫ বিজিবি ব্যাটালিনের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, ‘বিজিবিতে জনবলসংকট রয়েছে। তবু যেহেতু অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়েছে তাই সীমান্তে আগের চেয়ে দ্বিগুণ জনবল বাড়ানো হয়েছে। তারা সব সময় সীমান্তে কড়া নজর রাখছেন।’

নরসিংদী ও গাজীপুরের মানুষ মাধবপুর সীমান্তকে ব্যবহার করে ভারতে অনুপ্রবেশ করতে চায় জানিয়ে বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এরই মধ্যে মানবপাচারে সক্রিয় দালালদের একটি তালিকা আমরা তৈরি করেছি। এই তালিকাতে মাধবপুরের ৯ জন আছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।’

চীবর দান না করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে ভিক্ষু সংঘ: জেলা প্রশাসক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
চীবর দান না করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে ভিক্ষু সংঘ: জেলা প্রশাসক
রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক

পার্বত্য তিন জেলায় বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে এবার কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সময় নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন। 

সোমবার (৭ অক্টেবর) দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক।

সভায় পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের উপস্থিত ছিলেন। 

ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেলা কর্মকর্তারাও অংশ নেন।

এর আগে রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রাঙামাটি বনরূপা মৈত্রী বিহারে সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে তিন পার্বত্য জেলায় এবার কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।

পরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত শুভ কঠিন চীবর দান উদযাপনের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা হয়। এতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান সভাপতিত্ব করেন। সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ দেন উপস্থিত সুধীজন।

সভায় রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন- পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিরাপত্তা ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এবারের কঠিন চীবর দান উৎসবে আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সহিংসতার জেরে তৈরি হওয়া নিরাপত্তাহীনতা ও আস্থাহীনতা দূর করতে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন। 

সভায় বক্তব্য রাখেন এএসইউ পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার লে. কর্নেল মোহাম্মদ আল মামুন সুমন, পুলিশ সুপার এসএম ফরহাদ হোসেন ও সেনা জোনের প্রতিনিধি। 

এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি নিরূপা দেওয়ান, বনরূপা মৈত্রী বিহারের সাধারণ সম্পাদক পূর্ণ চন্দ্র দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দিপু, জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আব্দুল আলীম, জাতীয় পার্টির সভাপতি হারুন মাতবর, নির্মল বড়ুয়া, ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন প্রমূখ। 

সভায় পুলিশ সুপার এসএম ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রতিবছর যেভাবে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, এবার আরও শক্তিশালী ও আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাঙামাটিতে নিরাপত্তাহীনতার সমস্যা নেই। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব মোতায়েন করার ব্যবস্থা করা হবে। তবে খাগড়াছড়ির বিষয়টিকে রাঙামাটিতে টেনে আনার দরকার নেই। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন- নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে পার্বত্য তিন জেলায় এবারের কঠিন চীবর দান উৎসব না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। আমরা ভিক্ষু সংঘের ধর্মীয় গুরুদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক করেছি। তারা সময় নিয়েছেন বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য।

জিয়াউর রহমান/অমিয়/

মাগুরায় সড়ক থেকে অজ্ঞাত নারীর দেহাংশ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৭ পিএম
মাগুরায় সড়ক থেকে অজ্ঞাত নারীর দেহাংশ উদ্ধার
ছবি : খবরের কাগজ

মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও গাড়ির চাকায় একাধিকবার পিষ্ট অজ্ঞাত এক নারীর (৪০) দেহাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।

সোমবার (৭ অক্টোবর) ভোরে যশোর-মাগুরা রোড়ের ভায়না টেক্সটাইল মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী শাহীন শেখ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে এই এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারী চলাফেরা করছিলেন। সকালে দোকানে এসে দেখি রাস্তার মাঝখানে ওই নারীর লাশ পড়ে আছে। এ সময় রাস্তা দিয়ে চলাচল করা একাধিক গাড়ি তাকে পিষে দেয়। 

মাগুরা রামনগর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক গৌতম চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, একাধিক গাড়ির চাপায় লাশ রাস্তায় মিশে গেছে। আমরা ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার করি। তার পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন।

কাশেমুর শ্রাবণ/জোবাইদা/অমিয়/