১২৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হলেও জেলেদের জালে প্রত্যাশার চেয়েও মাছ কম ধরা পড়ছে। জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ দিনে ৯৫০ টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অথচ গেল মৌসুমের প্রথম ১৩ দিনে এক হাজার টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই কোটি টাকার বেশি। জেলে ও ব্যবসায়ীরা বলছেন হ্রদে পানি বেশি থাকায় জালে মাছ কম ধরা পড়ছে।
প্রজনন মৌসুমে ২৫ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত চলা ১২৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৬ হাজার ৮৬৬ জন জেলে মাছ শিকারে নামেন। এসব মাছ আনা হয় রাঙামাটি সদর, কাপ্তাই, মারিশ্যা ও মহালছড়ি এই চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে। সেখানে পরিমাপ ও শুল্কায়ন শেষে এসব মাছ যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
তবে হ্রদে ৭৯ প্রজাতির মাছ থাকলেও অবতরণ ঘাটগুলোতে আনা মাছের প্রায় ৯৫ শতাংশই চাপিলা আর কাঁচকি। এতে রাজস্বও আসছে কম। চাপিলা আর কাঁচকি মাছে কেজিপ্রতি শুল্ক দিতে হয় ২০ টাকা। আর বড় মাছে এই শুল্ক কেজিপ্রতি দিতে হয় ৪২ টাকা।
গেল মৌসুমে চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাট থেকে ৭ হাজার ৬২৬ টন মাছ থেকে ১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এবার আট হাজার টন মাছ থেকে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা শুল্ক বাবদ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটি অফিস।
চলতি মৌসুমে জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে ১ সেপ্টেম্বর প্রথম দিনে ৭৪ টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। অথচ গেল মৌসুমের প্রথম দিনে ১২৬ টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয় ২৬ লাখ টাকা।
রাঙামাটি মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে কথা হয় ব্যবসায়ী মো. মামুনের সঙ্গে। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই মৌসুমে হ্রদে এখনো পানি অনেক বেশি। এ কারণে জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে। এখন বেশি ধরা পড়ছে কাঁচকি আর চাপিলা। পানি কিছুটা কমে এলে মাছ আহরণ বাড়বে। তখন কার্প জাতীয় বড় মাছও পাওয়া যাবে।’
রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের মার্কেটিং অফিসার আইয়ুব আফনান জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম ১৩ দিনে জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে ৯৫০ টন মাছ অবতরণ হয়েছে। যেখান থেকে শুল্কায়ন বাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।