ঢাকা ১৭ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

কাপ্তাই হ্রদের মাছ আহরণের ১৩ দিন গত বছরের তুলনায় কমেছে রাজস্ব

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
গত বছরের তুলনায় কমেছে রাজস্ব
খবরের কাগজের ফাইল ছবি

১২৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হলেও জেলেদের জালে প্রত্যাশার চেয়েও মাছ কম ধরা পড়ছে। জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ দিনে ৯৫০ টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অথচ গেল মৌসুমের প্রথম ১৩ দিনে এক হাজার টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই কোটি টাকার বেশি। জেলে ও ব্যবসায়ীরা বলছেন হ্রদে পানি বেশি থাকায় জালে মাছ কম ধরা পড়ছে। 

প্রজনন মৌসুমে ২৫ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত চলা ১২৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৬ হাজার ৮৬৬ জন জেলে মাছ শিকারে নামেন। এসব মাছ আনা হয় রাঙামাটি সদর, কাপ্তাই, মারিশ্যা ও মহালছড়ি এই চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে। সেখানে  পরিমাপ ও শুল্কায়ন শেষে এসব মাছ যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

তবে হ্রদে ৭৯ প্রজাতির মাছ থাকলেও অবতরণ ঘাটগুলোতে আনা মাছের প্রায় ৯৫ শতাংশই চাপিলা আর কাঁচকি। এতে রাজস্বও আসছে কম। চাপিলা আর কাঁচকি মাছে কেজিপ্রতি শুল্ক দিতে হয় ২০ টাকা। আর বড় মাছে এই শুল্ক কেজিপ্রতি দিতে হয় ৪২ টাকা।

গেল মৌসুমে চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাট থেকে ৭ হাজার ৬২৬ টন মাছ থেকে ১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এবার আট হাজার টন মাছ থেকে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা শুল্ক বাবদ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটি অফিস।

চলতি মৌসুমে জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে ১ সেপ্টেম্বর প্রথম দিনে ৭৪ টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। অথচ গেল মৌসুমের প্রথম দিনে ১২৬ টন মাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয় ২৬ লাখ টাকা। 

রাঙামাটি মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে কথা হয় ব্যবসায়ী মো. মামুনের সঙ্গে। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই মৌসুমে হ্রদে এখনো পানি অনেক বেশি। এ কারণে জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে। এখন বেশি ধরা পড়ছে কাঁচকি আর চাপিলা। পানি কিছুটা কমে এলে মাছ আহরণ বাড়বে। তখন কার্প জাতীয় বড় মাছও পাওয়া যাবে।’

রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের মার্কেটিং অফিসার আইয়ুব আফনান জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম ১৩ দিনে জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে ৯৫০ টন মাছ অবতরণ হয়েছে। যেখান থেকে শুল্কায়ন বাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো সাহিত্য সংসদ মঞ্চ, কাঁদলেন কবি-সাহিত্যিকরা

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৩ পিএম
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো সাহিত্য সংসদ মঞ্চ, কাঁদলেন কবি-সাহিত্যিকরা
ছবি: খবরের কাগজ

সাহিত্যিকদের গড়ে তোলা একটি মঞ্চ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদের এই দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে লেখকদের কাঁদতে দেখা যায়। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে ময়মনসিংহের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানে এটি উচ্ছেদ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) এবং জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে ওই উদ্যানে অবস্থিত বিজয়ী পিঠা ঘরসহ আরও কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। 

জানা গেছে, ইজারা না দিয়ে স্থাপনা গড়ে তোলায় বুলডোজার দিয়ে মঞ্চটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত কবি-সাহিত্যিকদের অনেকেই কাঁদছিলেন। অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।

কবি শামীম আশরাফ বলেন, ১৯৮৩ সালে ময়মনসিংহে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সাহিত্য সংসদ মঞ্চ নামের প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়। জেলার কবি-সাহিত্যিকরা এখানে বিভিন্ন উৎসব এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছিল। এটা ভাঙা মানে আমাদের মন ভাঙা, আমাদের সাহিত্যের সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া, সংস্কৃতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘মঞ্চটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১ মে) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদী কথা, কবিতা ও গান হবে। ময়মনসিংহের সব কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা এতে উপস্থিত থাকবেন।

উচ্ছেদ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব সুমনা আল মজীদ বলেন, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সাহিত্য সংসদ মঞ্চ এবং বিজয়ী পিঠা ঘরসহ ৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ গুলোর বৈধ কাগজপত্র নেই। তাই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

 

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল নরসিংদীর লটকন ও মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল নরসিংদীর লটকন ও মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর
লটকন ও পাতক্ষীর। ছবি: সংগৃহীত

অমৃত সাগর কলার পর এবার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে নরসিংদীর জনপ্রিয় ফল লটকন। অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীরও জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসকের হাতে জিআই পণ্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সনদ তুলে দেওয়া হয়।

নরসিংদীর জেলা প্রশাসক রাশেদ হোসেন চৌধুরীর হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। লটকনকে নিবন্ধিত ঘোষণা করায় আনন্দ প্রকাশ করেছে নরসিংদীর প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষ। এর আগে ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি) সহযোগিতায় ২০২৩ সালেই ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিল নরসিংদী জেলা প্রশাসন। দীর্ঘ পর্যালোচনার পর নরসিংদীর লটকনকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এই ফলটি নরসিংদী জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী ফলের পাশাপাশি স্বাদে-গন্ধে ও পুষ্টিসমৃদ্ধ হওয়ায় সর্বস্তরের মানুষের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে এই ফল। এর আগে গত বছর নরসিংদীর অমৃত সাগর কলাকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

অন্যদিকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর। এটি এ জেলার প্রথম কোনো জিআই পণ্য। বুধবার বিকেলে ফরেন সার্ভিসে একাডেমিতে ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও নিবন্ধনকৃত ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের সনদ প্রদান’ অনুষ্ঠানে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের হাতে নিবন্ধন সনদটি তুলে দেওয়া হয়। ‘জেলা প্রশাসক মুন্সীগঞ্জ’ এই সনদের স্বত্বাধিকারী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান।

জেলা প্রশাসন জানায়, বহু প্রজন্ম ধরে স্থানীয় কারিগরদের নিপুণ হাতে তৈরি এই সুস্বাদু মিষ্টি মুন্সীগঞ্জবাসীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে। দুধ, সামান্য হলুদ গুঁড়া ও চিনি দিয়ে প্রস্তুতকৃত পাতক্ষীরের স্বাদ, গন্ধ ও গুণগত বৈশিষ্ট্য একে দেশের অন্যান্য মিষ্টান্ন থেকে স্বতন্ত্র করে তুলেছে। জিআই সনদপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে এই পণ্যের মান ও স্বাতন্ত্র্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেল, যা স্থানীয় উৎপাদকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে বলে অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মত প্রকাশ করেন।

 

নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের মরদেহ, ৪ সহপাঠী আটক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের মরদেহ, ৪ সহপাঠী আটক
নিহত রাহাত খান। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদী থেকে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তারই চার সহপাঠীকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় জানায়নি পুলিশ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে নগরীর চান্দগাঁও থানার হামিদচর এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহতের নাম রাহাত খান (১২)। সে চান্দগাঁও থানার পূর্ব ফরিদেরপাড়া এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে। 

জানা গেছে, রাহাত চান্দগাঁও সানোয়ারা বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন জুনিয়র ক্রিকেট দলের সদস্য। মঙ্গলবার সকালে স্কুলে যায় রাহাত। সেদিন স্কুল ছুটির পর বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে আর বাসায় ফেরেনি। বুধবার সকালে হামিদচর এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ফায়ার স্টেশনে জানান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে নদী থেকে ভাসমান মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

স্কুলছাত্র রাহাতের চাচা মো. রুবেল বলেন, ‘এক মাস আগে বন্ধুদের সঙ্গে একটি ছোটখাটো ঝগড়ার পর তার মা গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। ভাবা হয়েছিল, ঘটনা সেখানেই শেষ। কিন্তু বাস্তবতা নির্মম। ১৩-১৪ জন স্কুলের বন্ধু মঙ্গলবার স্কুল ছুটি শেষে রাহাতকে বেড়ানোর কথা বলে হামিদচরে নিয়ে যায়। সেখানে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। রাতভর খোঁজার পর সকালে তার নিথর দেহ পাওয়া যায়।’

নিহতের বাবা লিয়াকত আলী বলেন, ‘ওয়াহিদসহ কয়েকজন আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।’ 

চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তানভীর আহমেদ বলেন, ‘ছেলেটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা অস্বাভাবিক কিছু দেখা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জানা যাবে। ছেলেটি কাদের সঙ্গে স্কুল থেকে বেরিয়েছিল, কোথায় গিয়েছিল, সবকিছু তদন্ত করা হচ্ছে।’

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের চার সহপাঠীকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে।’

 

বগুড়ায় এনসিপি-বৈষম্যবিরোধী মারামারি

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম
বগুড়ায় এনসিপি-বৈষম্যবিরোধী মারামারি
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে শহরের পৌর পার্কের টিটু মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা নীরব ভূমিকায় ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিকেলে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের’ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে এনসিপি। অন্যদিকে এই আয়োজনের বিরোধিতা করে একই স্থানে পাল্টা প্রতিবাদ কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ।

বিকেল ৫টার দিকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসিন রিয়াজসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে ওঠেন। সমাবেশ শুরু হলে কিছুক্ষণ পরই ছাত্র আন্দোলনের একাংশ ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। এনসিপির নেতা-কর্মীরা তাদের বাধা দিলে প্রথমে কথা-কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এরপর তিন দফা মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এমনকি সারজিস আলম বক্তব্য দেওয়ার সময়ও উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে। তবে এই সংঘর্ষ নিয়ে কোনো পক্ষের সরাসরি বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এই দেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিহত করা হবে। বগুড়া থেকেই প্রতিরোধের সূচনা হবে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে গত ১৬ বছরে বগুড়া সবদিক থেকে বঞ্চিত হয়েছে। চাকরি, প্রমোশন, অবকাঠামো- সবখানেই বৈষম্য করা হয়েছে। বগুড়ার বিমানবন্দর সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি, আধুনিক হাসপাতালকে তৃতীয় শ্রেণির প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থাকলেও কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হয় না।’ তিনি ঢাকা থেকে বগুড়ায় সরাসরি রেললাইন চালুর দাবিও জানান।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক যুথী অরণ্য প্রীতি। বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসিন রিয়াজ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাকিব মাহদী, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম পলক, আবদুল্লাহ আল মুহিন, নাজমুল হক, জেলা সংগঠক আহমেদ সাব্বির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা সদস্যসচিব সাকিব খান, ওয়ারিয়র্স জুলাইয়ের আহ্বায়ক মো. মুশফিক, শহিদ সেলিম মাস্টারের ভাই উজ্জ্বল হোসেন, শহিদ রাতুলের ভাই হামজা প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে সারজিস আলমের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতমাথার মুক্তমঞ্চের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তাদের বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেন।

গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো ইটভাটাগুলো

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১২ পিএম
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো ইটভাটাগুলো
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাসহ পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ছবি: খবরের কাগজ

পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার সিন্দুরিয়া গ্রামে পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো ছয়টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধসহ সেগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে দিনব্যাপী চলে এ অভিযান। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাসহ পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, সিন্দুরিয়া গ্রামে উপজেলার প্রভাবশালীরা একজোট হয়ে ছয়টি ইটভাটা গড়ে তুলেছিলেন। সেগুলো হলো- মাস্টার্স ব্রিকস, রাকা ব্রিকস, সততা, সততা প্লাস, একতা ও ম-ল ভাটা। এসব ইটভাটার কোনো অনুমোদন নেই। শুধু পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক আশ্রয়ের জোরে সাত-আট বছর ধরে টিকেছিল ইটভাটাগুলো। এমনকি ভাটাগুলো গড়তে এর আশপাশের সাধারণ গ্রামবাসীর প্রায় ৫০ বিঘা কৃষিজমি দখল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ভাটাগুলোর কারণে সিন্দুরিয়াসহ আশপাশের চার-পাঁচটি গ্রামের ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। আম, কলা, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছিল এবং এগুলোর ফল কচি অবস্থাতেই কালো হয়ে শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছিল। এলাকাবাসী শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকগুলোতে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে বার বার অভিযোগ দিলেও এতদিন বন্ধ হয়নি এসব অবৈধ ভাটা।

ছবি: খবরের কাগজ

অবশেষে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সিন্দুরিয়া গ্রামে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধসহ সেগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। এতে উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ভাটার চুলায় পানি দিয়ে প্রথমে আগুন নিভিয়ে দেয়। পরে বুলডোজার ও বেকু দিয়ে অবৈধ ছয়টি ইটভাটার চিমনিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। 

অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ান-উল ইসলাম, পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর, পরিদর্শক আব্দুল মোমিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পার্থ হাসান/মাহফুজ