সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে মতবিনিময় সভা পণ্ড হয়ে গেছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সঙ্গে বিবাদে জড়ান সাতক্ষীরা জেলা গণঅধিকার পরিষদের নেতা ও সমন্বয়ক ইমরান হোসেন। এ ঘটনার সূত্র ধরে মতবিনিময় সভাটি পণ্ড হয় বলে দাবি উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে রবিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫ জন সমন্বয়ক সাতক্ষীরায় পৌঁছান। ওই দিন জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন তারা। মূলত মতবিনিময় সভাটি সফল করতে এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা প্রসঙ্গে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়কসহ উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ১৫ সমন্বয়কসহ সাতক্ষীরার ৫ সমন্বয়ক জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন বলে চূড়ান্ত হয়। কিন্তু সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী ওই আলোচনা সভায় অংশ নিতে উপস্থিত হন। পরে কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা আপত্তি তুললে তাদের সঙ্গে বিবাদে জড়ান সাতক্ষীরা গণঅধিকার পরিষদ নেতা ও জেলা সমন্বয়ক ইমরান হোসেন। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের ঘিরে ক্ষোভ ছিল ইমরান সমর্থকদের।
পরে বিকেলে জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে পৌঁছান। সেখানে কেন্দ্রীয় এক সমন্বয়কের বক্তব্য চলাকালে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ নিয়ে দু’পক্ষ বিবাদে জড়ালে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এতে কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা মতবিনিময় সভা বর্জন করে চলে যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলার অন্যতম সমম্বয়ক নাজমুল হোসেন রনি জানান, শিল্পকলা একাডেমিতে বিকেলে ওয়াহিদুজ্জামান, আকরাম হোসেন রাজসহ কেন্দ্রীয় সমম্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বৈঠক চলছিল। একপর্যায়ে মঞ্চে কেন্দ্রীয় সমম্বয়ক আকরাম হোসেন রাজ বক্তব্য দেওয়ার সময় জনি ও সানি নামের দুই ছাত্রকে অডিটোরিয়ামে বসা নিয়ে উচ্চ-বাচ্য করতে দেখা যায়। এমনকি তারা মঞ্চে তেড়ে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বাইরে চলে যাওয়ার ঘোষণা দেন সানি।
এ ব্যাপারে জেলার আরেক সমম্বয়ক ইমরান হোসেন দাবি করেন, ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সঙ্গে যে সমস্যাটা হযেছিল সেটা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মিটে যায়। সভা পণ্ড হওয়ায় ওই ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবার কাজ করছেন ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকারীরা- এমন অভিযোগে ছাত্রদলের কর্মীরা ভুয়া-ভুয়া স্লোগান দেয়। এ থেকে সভায় গল্ডগোলের শুরু।’
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শেখ শরিফুজ্জামান সজীব বলেন, ‘জনি ও সানি নামে সাতক্ষীরা ছাত্রদলের কোনো নেতা-কর্মী নেই। ছাত্রদলের কর্মী বলে যাদের পরিচয় দেওয়া হচ্ছে, এটা ষড়যন্ত্রমূলক।’ ছাত্রদলের কোনো নেতা-কর্মী আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বিষয়টি জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
নাজমুল শাহাদাৎ/সালমান/