চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, একটি মাইক্রোবাসসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক, একটি শিশু নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
যদিও প্রথমে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা গিয়েছিল।
ট্রেনটিতে প্রায় হাজার খানেক যাত্রী রয়েছেন। খবর পেয়ে রেলওয়ে ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে কালুরঘাট ব্রিজে মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টা ১৫ মিনিটে পর্যটক এক্সপ্রেস কালুরঘাট ব্রিজ অতিক্রমের সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, একটি মাইক্রোবাসসহ কয়েকটি যানবাহনকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি ট্রেনটির সামনে লেগে দুমড়ে মুচড়ে যায়। একইসঙ্গে একটি মাইক্রোবাস, একাধিক মোটরসাইকেলসহ আরও কয়েকটি যানবাহন দুমড়ে মুচড়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি প্রথমে সিগন্যাল অমান্য করে রেলক্রসিংয়ে চলে আসে। এরপর আরও কয়েকটি যানবাহন রেলক্রসিংয়ে উঠে পড়ে।
ট্রেনটির এক যাত্রী রাত সাড়ে ১১টায় বলেন, আমরা এই মুহুর্তে ট্রেনে আটকে আছি। ট্রেনটির অর্ধেক রেলক্রসিংয়ে বাকি অর্ধেক কালুরঘাট ব্রিজের উপর। এজন্য কেউ ট্রেন থেকে নামার সুযোগ পাচ্ছেন না। সবাই এক ধরণের আতঙ্কে আছেন। সামনে কি হয়েছে তাও অনেকের অজানা। তবে দুর্ঘটনার আহাজারি, একাধিক মৃত্যু খবরে শিশু ও নারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসে পর্যটক এক্সপ্রেস। এরপর রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে কালুরঘাট ব্রিজ অতিক্রমের সময় কালুরঘাট রেলক্রসিংয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাসসহ কয়েকটি যানবাহনকে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি। তবে কেন কিংবা কার অবহেলায় এ দূর্ঘটনা ঘটেছে তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি থেমে আছে। সামনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ট্রেনের নিচে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। পাশে আরও একটি মোটরসাইকেলও ট্রেনের নিচে। স্থানীয়রা সেখান থেকে আহত-নিহতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। একটি শিশুকে নিয়ে একজন পুরুষ এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছেন। ভিডিওর পোস্টে লেখা হয়েছে, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে কিন্তু তার মা ট্রেনের নিচে চাপা পড়েছেন। তবে তারা কোন যানবাহনের যাত্রী তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার আমিনুল ইসলাম জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে তারা দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়েছেন। তাদের স্টেশন থেকে অ্যাম্বুলেন্সসহ দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। হতাহতদের উদ্ধার কাজ চলমান রয়েছে। তাৎক্ষণিক হতাহতের সংখ্যা জানা নেই।
চমেক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আহত পাঁচজনকে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মনিরুজ্জামানকে কল করা হলে তিনি এ বিষয়ে জানেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে রেলওয়ে থানার ওসি শহিদুল ইসলামকে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
মেহেদী/অমিয়/