পার্বত্য তিন জেলায় বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে এবার কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সময় নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোমবার (৭ অক্টেবর) দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক।
সভায় পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের উপস্থিত ছিলেন।
ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেলা কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
এর আগে রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রাঙামাটি বনরূপা মৈত্রী বিহারে সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে তিন পার্বত্য জেলায় এবার কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।
পরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত শুভ কঠিন চীবর দান উদযাপনের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা হয়। এতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান সভাপতিত্ব করেন। সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ দেন উপস্থিত সুধীজন।
সভায় রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন- পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিরাপত্তা ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এবারের কঠিন চীবর দান উৎসবে আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সহিংসতার জেরে তৈরি হওয়া নিরাপত্তাহীনতা ও আস্থাহীনতা দূর করতে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সভায় বক্তব্য রাখেন এএসইউ পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার লে. কর্নেল মোহাম্মদ আল মামুন সুমন, পুলিশ সুপার এসএম ফরহাদ হোসেন ও সেনা জোনের প্রতিনিধি।
এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি নিরূপা দেওয়ান, বনরূপা মৈত্রী বিহারের সাধারণ সম্পাদক পূর্ণ চন্দ্র দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দিপু, জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আব্দুল আলীম, জাতীয় পার্টির সভাপতি হারুন মাতবর, নির্মল বড়ুয়া, ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন প্রমূখ।
সভায় পুলিশ সুপার এসএম ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রতিবছর যেভাবে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, এবার আরও শক্তিশালী ও আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাঙামাটিতে নিরাপত্তাহীনতার সমস্যা নেই। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের পাশাপাশি র্যাব মোতায়েন করার ব্যবস্থা করা হবে। তবে খাগড়াছড়ির বিষয়টিকে রাঙামাটিতে টেনে আনার দরকার নেই।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন- নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে পার্বত্য তিন জেলায় এবারের কঠিন চীবর দান উৎসব না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। আমরা ভিক্ষু সংঘের ধর্মীয় গুরুদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক করেছি। তারা সময় নিয়েছেন বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য।
জিয়াউর রহমান/অমিয়/