খাগড়াছড়ি সদরে গণপিটুনিতে শিক্ষক সোহেল রানার মৃত্যুর জেরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) এ তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে, জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রোজলিন শহীদ চৌধুরীকে। এ ছাড়াও কমিটিতে পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধি, সিভিল সার্জনের একজন প্রতিনিধি এবং খাগড়াছড়ি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে খাগড়াছড়ি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত শিক্ষকের নাম আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা। তিনি কলেজের সিভিল কন্সট্রাকশন অ্যান্ড সেফটি বিভাগের ইন্সট্রাকটর ছিলেন।
এদিকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে ছাত্রী ধর্ষণ, পুলিশের ওপর হামলা এবং রাষ্ট্রীয় কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, ‘যে ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, সেই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা করেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় পুলিশের ওপর হামলা এবং কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।’
তবে ওই ছাত্রী আসলেই ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না সেটা এখনো জানা যায়নি। শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার পরপরই মঙ্গলবার দুপুরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেই তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। যদিও এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে এখানো কিছু জানায়নি স্বাস্থ্য বিভাগ।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের বলেন, ‘মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে মেডিকেল রিপোর্ট এখনো জমা দেইনি। রিপোর্ট জমা দিলে পুলিশ জানাবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষক সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো খাগড়াছড়ি শহরে। ঘটনার পর থেকেই মুখোমুখি অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধ পাহাড়ি ও বাঙালিরা। সংঘাত এড়াতে বিকেল ৩টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। তবে ১৪৪ ধারা জারি করেও উত্তেজনা থামানো যায়নি কোনো পক্ষের।