ঢাকা ২৫ কার্তিক ১৪৩১, রোববার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

মমেক হাসপাতাল টাকা ছাড়া মেলে না সেবা

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৫ এএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ এএম
টাকা ছাড়া মেলে না সেবা
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সেবাপ্রত্যাশীরা। ইনসেটে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে এক নারী কর্মচারী (অ্যাপ্রোন পরা) টাকা নিচ্ছেন। ছবি: খবরের কাগজ

এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে প্রতিদিন তিনগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকে। এর বাইরে আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন আরও তিন থেকে চার হাজার রোগী। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালটিতে রোগী ও তাদের স্বজনদের সেবা পেতে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়েও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। অন্যথায় সেবা পাওয়া যায় না।

ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালে রোগী আনার পর ট্রলিতে উঠানো থেকেই শুরু হয় হয়রানি ও অনিয়ম। টাকা না দিলে ট্রলি পাওয়া যায় না। বেড পাওয়াসহ সব ক্ষেত্রে আয়া, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনারসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া আউটডোরে লম্বা লাইন থাকলেও বাড়তি টাকা গুনলেই তাৎক্ষণিক টিকিট পাওয়া যায়। ১০ টাকার এই টিকিটের জন্য দিতে হয় কমপক্ষে ১০০ টাকা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৭টি ওয়ার্ডের বিপরীতে প্রতিদিন তিন শিফটে ৪১০ জন চিকিৎসক এবং এক হাজার ৭২ জন নার্স দায়িত্ব পালন করেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ছাড়াও সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নরসিংদী এবং গাজীপুরের রোগীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।

রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের সামনে অনিয়ম হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। টাকা না দিলে কর্মচারীদের কাছ থেকে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্টরা আমলে নেন না। অসাধু কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলেও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় না। ফলে সব ধরনের অনিয়ম এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওয়ার্ডগুলোর মেঝে এবং বারান্দাতে বহু রোগীকে ঠাসাঠাসি করে থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন বৃদ্ধ নারী-পুরুষসহ শিশুরা।
 
হাসপাতালের আউটডোরেও একই অবস্থা। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হচ্ছে। তবে অনেকে লাইন ছাড়াই টিকিট নিতে অসাধু কর্মচারীদের কাছে যান। তাদেরকে নির্ধারিত মূল্যের অন্তত দশগুণ বেশি অর্থ দিয়ে টিকিট নিয়ে চিকিৎসকের কক্ষে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময়ও রোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। দালাল ধরে গেলে সিরিয়াল ছাড়াই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ দ্রুত রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।

মো. মনির নামে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার এক তরুণ খবরের কাগজকে বলেন, ‘সম্প্রতি হঠাৎ ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও ভালো না হওয়ায় বড় ভাইকে নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে যাই। লম্বা লাইন দেখতে পেয়ে এক কর্মচারীকে সরকার নির্ধারিত ১০ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা দিয়ে লাইন ছাড়াই টিকিট কেটে ডাক্তার দেখাই।’ 

বাড়তি টাকা দেওয়া ঠিক হলো কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেকে অসাধু কর্মচারী কিংবা দালালদের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলে বাড়তি টাকা দিয়ে সুবিধা নেন। তাই আমিও দিয়েছি।’

আকাশ নামে আরেকজন বলেন, ‘কিছুদিন আমার মাকে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করেছিলাম। ওই ওয়ার্ডে রনি ও এমদাদ নামে দুই কর্মচারীকে টাকা দিয়ে খুশি রাখতে হয়। টাকা না দিলে ভেতরে গিয়ে মাকে দেখতে দেওয়া হয় না। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়েছে। মায়ের ছুটি হওয়ার পর হাসপাতালের উপপরিচালকসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে জানানো হলে তদন্তে প্রমাণ মিললে চাকরিচ্যুত করা হবে জানানো হয়। কিন্তু পরে আর তদন্তও করা হয়নি, চাকরিচ্যুতও করা হয়নি। ফলে তাদের মতো অসাধু কর্মচারীরা রোগীদের যথাযথ সেবা না দিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত থাকে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগরের সভাপতি আলী ইউসুফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘ট্রলিতে রোগী আনা-নেওয়া, সিট পাওয়া, লাইনে না দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ এবং বিভিন্ন টেস্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার ক্ষেত্রে রোগীদের অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। হাসপাতালের অসাধু কর্মচারীরা এই অনৈতিক কাজে জড়িত। বাড়তি সুবিধা আদায়ের আশায় রোগী ও তাদের স্বজনদের ইচ্ছাও দুর্নীতিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত, রোগীদের ভোগান্তি কমানোর দিকে মনোযোগী হওয়া।’

রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসকদের চেষ্টার কমতি নেই উল্লেখ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। রোগী ও তাদের স্বজনদেরও সচেতন হওয়া দরকার।

নির্বাচিত সরকার দেখতে চায় জাতি: আমীর খসরু

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
নির্বাচিত সরকার দেখতে চায় জাতি: আমীর খসরু
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জাতি নির্বাচিত সরকার দেখতে চায়। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। জবাবদিহি ছাড়া কোনো সরকার বাংলাদেশের কল্যাণ সাধন করতে পারবে না। সেই জন্য তারা চায় গণতান্ত্রিক সরকার। 

শনিবার (৯ নভেম্বর) চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মোড়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক বিশাল র‌্যালি পূর্ববর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

ভোটের মাধ্যমে দেশবাসী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘তাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে, দায়বদ্ধতা থাকবে। জবাবদিহিহীন কোনো সরকার বাংলাদেশের কল্যাণ করতে পারে না। গণমুখী সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচনের ঘোষণা দিন। কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের নেতা-কর্মীদের প্রাণের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাত হয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা ঘরে থাকতে পারেননি। তাদের জেলে যেতে হয়েছে। হত্যার শিকার হয়েছেন। গুমের শিকার হয়েছেন। আপনারা কেউ জেলে যাননি। আমাকেও জেলে যেতে হয়েছে বারবার। সুতরাং সংস্কারের নামে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করা যাবে না।’ 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের মানুষ শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ৭ নভেম্বর ছিল স্বাধীনতার মাস। সিপাহি-জনতার বিপ্লব আন্দোলনের মাধ্যমে শহিদ জিয়াকে মুক্ত করার পর এক নতুন বাংলাদেশের সৃষ্টি হলো। সেই দেশটির নাম হলো বহুদলীয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বাংলাদেশ, মুক্তবাজার অর্থনীতির বাংলাদেশ, আইনের শাসনের বাংলাদেশ, নিরাপত্তার বাংলাদেশ, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। সেই ধারায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। 

ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছেন উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কিছু লোক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা দণ্ড দিয়ে জেলে রেখেছেন। বিএনপির ৬০ লাখের অধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নিপীড়ন, নির্যাতন, গুম, খুন, হত্যার মাধ্যমে নিরাপত্তাহীন ও পরাধীন জাতি সৃষ্টি করেছিলেন। সে দিনও আবার খালেদা জিয়া রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। এ কারণে তাকে জেলে যেতে হয়েছে। এরপর তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ জাতি আন্দোলনে নামে। ছাত্র-জনতা আবার তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন করে শেখ হাসিনাকে পরাস্ত করেছেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সব দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে শেখ হাসিনাকে পালাতে হয়েছে। 

১৫ বছর আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘১৫ বছর যখন আমরা রাস্তায় আন্দোলন করেছি তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? এখন অনেক গল্প শুনছি, গল্পের কোনো শেষ নেই। ওরা নাকি এটা করেছে, ওটা করেছে। প্রত্যেক দিন নতুন নতুন গল্প শুনছি।’ 

অনির্বাচিত সরকার সম্পর্কে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিত্বহীন কোনো সরকার জনগণের কষ্ট বুঝবে না। এটা বুঝতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে, জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বুঝতে হবে। জনগণ দুই বেলা খেতে পারছে না, বুঝতে হবে।

নতুন নতুন ‘বয়ান’ শুনছেন উল্লেখ করে প্রবীণ এ নেতা বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান একটা বয়ান দিয়ে স্বৈর সরকার চালিয়েছিলেন। সেই বয়ানের নাম ছিল বাকশাল। সেখানে গণতন্ত্র থাকতে পারবে না, সংবাদপত্র থাকতে পারবে না, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলে আবার মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে তিনি কিছু দিন চালিয়েছিলেন। পরে এরশাদ এসে আরেকটি বয়ান দিয়েছেন। তাকে আমরা পরাজিত করেছি। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এরশাদও টিকতে পারেননি। 

এবার আবার একটি বয়ান শুনছি। এ বয়ানে বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হবে, তার কথা নেই। বাংলাদেশের জনগণ কবে ভোট দিয়ে তাদের সরকার নির্বাচন করবে, সেই বয়ান নেই। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ হবে, সেই বয়ান নেই। বলা হচ্ছে সংস্কারের বয়ান। সংস্কারের কথাও সর্বপ্রথম বলেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এক বছর আগে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা আবারও সংস্কারের কথা বলেছি। আমরা সবাই মিলে একটি স্বচ্ছ সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। এই সংস্কারে সবকিছু আছে। আপনারা যা বলছেন সেসব আছে, তার বাইরেরও আছে। সংস্কার প্রক্রিয়ায় আপনাদের চেয়ে আমরা বেশি আগ্রহী। যেসব সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। যেসব সংস্কারের প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য হবে না, সেসব বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ হবে, তারা সিদ্ধান্ত নেবে। এর বাইরে কারও কোনো অধিকার নেই। গত জুলাইয়ের আন্দোলনে এক দফা ছিল না। জুলাইয়ের ২৩ তারিখে ১ দফা ঘোষণা করেছিলেন তারেক রহমান। আমরা সবাই তখন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছি।’ 

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ এরশাদুল্লাহর সভাপতিত্বে এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা মাহবুবের রহমান শামীম, মীর হেলাল, গোলাম আকবর খন্দকার, মোহাম্মদ হালিম আবুল হাসেম বক্কর প্রমুখ। 

মাধবপুর সীমান্তে ১৪ লাখ টাকাসহ হুন্ডি ব্যবসায়ী আটক

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ এএম
মাধবপুর সীমান্তে ১৪ লাখ টাকাসহ হুন্ডি ব্যবসায়ী আটক
বিজিবির হাতে টাকাসহ আটক হুন্ডি ব্যবসায়ী। ছবি: খবরের কাগজ

হবিগঞ্জের মাধবপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশের সময় ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ একজন হুন্ডি ব্যবসায়ীকে আটক করেছে বিজিবি।

শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির নাম মোখলেছ মিয়া (৪০)। তিনি উপজেলার আলীনগর গ্রামের বাসিন্দা।

বিজিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্তের দেবনগর এলাকায় অবস্থান নেয় বিজিবি সদস্যরা। এ সময় ভারত থেকে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করার সময় মোখলেছ মিয়াকে আটক করা হয়। তাকে তল্লাশি করে নগদ ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও একটি বাটন মোবাইল ফোন পাওয়া যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোখলেছ মিয়া জানান, তার ভাই আবু বক্কর (৪২) হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার নির্দেশে এই অর্থ সংগ্রহ করে ভারত থেকে দেশে ফিরছিলেন।

এই ঘটনায় আটক মোখলেছ মিয়া এবং তার ভাই আবু বক্করের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সরাইল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বলেন, সীমান্তে যাতে কোনো প্রকার অপরাধ সংগঠিত না হয় সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা তৎপর রয়েছে। ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কাজল সরকার/মাহফুজ/এমএ/

‘রক্ত দেয় তরুণরা, ক্ষমতায় গিয়ে বলবেন তোদের চিনি না’

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ এএম
‘রক্ত দেয় তরুণরা, ক্ষমতায় গিয়ে বলবেন তোদের চিনি না’
সভায় বক্তব্য রাখছেন আবদুল হান্নান মাসউদ। ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, একটি পক্ষের ব্যর্থতার কারণে তরুণ প্রজন্ম রাজপথে নেমেছে। আজ তারাই আবার তরুণদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রক্ত দেওয়ার সময় তরুণরা আর ক্ষমতায় গিয়ে বলবেন তোদের চিনি না, এ নীতি আর চলবে না।

শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ডা. মোস্তফা হাজেরা ফাউন্ডেশন আয়োজিত জুলাই বিপ্লবে নিহত ও আহতদের পরিবারকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে আবদুল হান্নান মাসউদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, তরুণদের মনোবাসনা যদি বুঝতে না পারেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের দিকে তাকান। ছাত্রদের চোখের ভাষা যদি বুঝতে না পারেন আওয়ামী লীগের কর্মীদের পরিণতির দিকে তাকান। এটি স্পষ্ট- চব্বিশের তরুণরাই গড়বে আগামীর বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্টদের প্রতি এখন অনেকে মায়া দরদ দেখাচ্ছেন। অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল, তাদের রাজনীতি করার অধিকার দিতে হবে। তারা যদি রাজনৈতিক দলই হয় তবে গত ১৬ বছর এদেশের মানুষকে ভোটের অধিকার দেয়নি কেন? তারা রাজনৈতিক দল হলে দুই হাজারের বেশি ভাই-বোনকে হত্যা করেছে কেন? কেনো গত ১৬ বছর ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্ররা নির্যাতিত কেন? সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক দলের পার্থক্য না বুঝলে ধরে নিবো আপনারাও রাজনৈতিক দলের কাতারে পড়েন না।

মাসউদ বলেন, সন্ত্রাসীরা আজীবনের জন্যই সন্ত্রাসী। তারা ভবিষ্যতে এদেশের কোথাও মন্ত্রী, এমপি, চেয়ারম্যান, মেম্বার কিছুই হতে পারবে না। ফ্যাসিবাদিদের মুজিববাদি সংবিধান এখনই ছুঁড়ে ফলে দিতে হবে। যে সংবিধান কাঁটাছেড়া করে মানুষের ভোট-ভাতের অধিকার কেড়ে নিয়েছে তা বাদ দিয়ে চব্বিশের তরুণদের হাত ধরে বিজ্ঞজনদের পরামর্শে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে।

আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেন এক-দুই যুগ পরও এ দেশের মানুষ বলতে পারে চব্বিশের তরুণরা জীবন দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়েছে। তাদের আত্মত্যাগে আজ দেশে এই এই পরিবর্তন হয়েছে।

ডা. মোস্তফা হাজেরা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাপ্টেন গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও ছাত্র প্রতিনিধি মুহাম্মদ তুহিন ফারাবী, সংগঠনের উপদেষ্টা গোলাম মর্তুজা, জহিরুল ইসলাম, সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম, বনী ইয়ামিন, ফরহাদুল ইসলাম প্রমুখ।

ইকবাল/নাবিল/এমএ/

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ২ কিশোরের আত্মহত্যা

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৮ এএম
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ২ কিশোরের আত্মহত্যা
আবুল ওসমান (ডানে) ও মো. ফাহিম (বামে)। ছবি: খবরের কাগজ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আবুল ওসমান (১৭) ও কীটনাশক পান করে মো. ফাহিম (১৬) নামে দুই কিশোর আত্মহত্যা করেছে।

শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে দুই কিশোরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এর আগে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের শোল্লা গ্রাম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আবুল ওসমান ওই গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে। আর ফাহিম একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।

ওসমান পরিবার সূত্রে স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈকত মোল্লা জানান, আবুল ওসমান স্থানীয় একটি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সম্প্রতি মুঠোফোনে বরিশালের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে পরিবারের লোকজন তাকে বকাঝকা করে। শুক্রবার বিকেলে পরিবারের সবাই এক আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াতে যায়। সেখান থেকে আবুল ওসমান সবার আগে বাড়িতে চলে আসে। রাতে তার বাবা বাড়িতে এসে দেখে সে ঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলে আছে। পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে পুলিশকে খবর দেয়।

ওই ইউপি সদস্য আরও জানান, ফাহিম নামে অপর কিশোর স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়তো। গত কয়েকমাস আগে সে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করে। সেও একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পরিবারের লোকজনকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাকে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কীটনাশক পান করে সে। পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হানিফ সরকার বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে ওই দুই কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। উভয় ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ফয়েজ/নাবিল/এমএ/

৩ মাস বন্ধের পর ফের শুরু আশুগঞ্জ-আখাউড়া মহাসড়কের কাজ

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২১ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ এএম
৩ মাস বন্ধের পর ফের শুরু আশুগঞ্জ-আখাউড়া মহাসড়কের কাজ
আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়কের কাজ চলমান।ছবি: খবরের কাগজ

প্রায় ৩ মাস বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন জাতীয় মহাসড়কের অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফিরতে শুরু করেছে।

ফলে চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মহাসড়কটির বেহাল অংশের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া মহাসড়কের ঘাটুরা এলাকার সেতুর নির্মাণ কাজও চলছে। এর মধ্য দিয়ে অনিশ্চয়তা কেটেছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্প নিয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৫১ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেন উন্নীতকরণে ২০১৭ সালে একনেকে একটি প্রকল্প অনোমদন দেয় সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। তবে করোনা মহামারিসহ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিলম্বিত হয় প্রকল্পের কাজ। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে গত ৫ আগস্টের পর কয়েক ধাপে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ শ কর্মকর্তা-কর্মচারী ভারতে চলে যান। এতে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া দীর্ঘদিন প্রকল্পের অধীনে থাকায় মহাসড়কটিতে নিয়মিত সংস্কার কাজ করতে না পারায় অন্তত চার কিলোমিটার অংশে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন মহাসড়কে যাতায়াতকারীরা। দীর্ঘ আলোচনার পর গত অক্টোরের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভারত থেকে ফিরতে শুরু করায় বেহাল অংশের সংস্কার কাজ শুরু হয়।

চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ জন ভারতীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকল্প এলাকায় ফিরেছেন। আপাপত সংস্কার কাজ চলছে। এটি শেষ করে পাথরসহ অন্যান্য উপকরণ আমদানির পর মহাসড়কের অবশিষ্ট অংশের নির্মাণ কাজ পুরোদমে শুরু হবে। সেক্ষেত্রে প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে।

জুয়েল রহমান/মাহফুজ/এমএ/