ঢাকা ২৬ কার্তিক ১৪৩১, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

‘যে টাকা রোজগার করি সব বাজারেই খরচ হইয়া যায়’

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০০ পিএম
আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০১ পিএম
‘যে টাকা রোজগার করি সব বাজারেই খরচ হইয়া যায়’
ময়মনসিংহ নগরীর মেছুয়া বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের একাংশ। ছবি : খবরের কাগজ

আগে একশ টাকা দিয়ে ব্যাগভর্তি বাজার করবার পারতাম। এহন এই টাকা দিয়ে বাজার করলে ব্যাগের কোণাও ভরে না। সারা দিনে যে টাকা রোজগার করি সব টাকা বাজারেই খরচ হইয়া যায়। সংসার আর চালাইবার পারতেছি না। দিন যত যাইতাছে, ততই সংসার চালাইতে কষ্ট হইতাছে।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর মেছুয়া বাজারে তরিতরকারি কিনতে এসে কথাগুলো বলছিলেন দিনমজুর আরশেদ মিয়া।

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘যখন যা কাজ পাই, সেই কাজ করে চার সদস্যের সংসার চালাই। কী দিন আইল! যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়তাছে, মনে হয় আমাদের মতো গরিব মানুষের একসময় না খেয়ে মরার মতো অবস্থা হইব।’

বাজার করে চলে যাচ্ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী রুবেল আহমেদ। এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়ছে। তবে আমাদের বেতন তো বাড়ছে না। বাজার করেই যদি সব টাকা খরচ হয়, তাহলে সংসারের আনুষঙ্গিক খরচ জোগাব কীভাবে? সন্তানদের পড়াশোনা করিয়ে মানুষের মতো মানুষইবা করব কীভাবে?’

বাজারগুলোতে প্রতিদিন অভিযান চালানোসহ মনিটরিং বাড়াতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি। একইসঙ্গে বাজার সিন্ডিকেট চক্রগুলোকে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের তরিতরকারির দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকায়। এ ছাড়া পটোল ৯০, শসা ৭০, বরবটি ১২০, করলা ১১০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দুল ৮০, টমেটো ২৫০, পুঁইশাক ৪০, গাজর ১৬০, ঝিঙে ৯০, লম্বা বেগুন ১০০, গোল বেগুন ১৬০, ফুলকপি ১২০, বাঁধাকপি ৫০, লাউ ৮০- ৯০ ও পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘তরিতরকারির দাম প্রতিদিনই উঠানামা করে। তবে সম্প্রতি টানা বৃষ্টিপাতের কারণে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। এতে ক্রেতারা প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনে নিচ্ছেন। আমাদের কিছুই করার নেই।’

জাহিদ মিয়া নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘আমি সীমিত লাভ করেই বিক্রি করি। সিন্ডিকেট করে বেশি দাম রাখা হয় না। বেশি দামে কিনি বলেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

এদিকে গত ৭ অক্টোবর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা পর্যায়ে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে সদস্যসচিব করে ১০ সদস্যের এই ফোর্স গঠন করা হয়েছে। গঠন করা এই টাস্কফোর্স নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহ চেইন তদারক ও পর্যালোচনা করবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।  

তবে সোমবার পর্যন্ত ময়মনসিংহের টাস্কফোর্সকে জেলার কোথাও অভিযান চালাতে দেখা যায়নি। এর কারণ জানতে চাইলে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন নাহার খবরের কাগজকে বলেন, ‘কয়েকদিন সরকারি ছুটি ছিল। তবে আগামীকাল থেকে অভিযান চালানো হবে।’

এ বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সালাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘রবিবার নগরীর শম্ভুগঞ্জ বাজারে অভিযান চালিয়ে চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তরিতরকারি, ডিমসহ অন্যান্য পণ্য খুচরা বিক্রেতা যে দামে কিনেছে, তার চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই অভিযানটি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পুলিশের সহায়তায় নিজস্বভাবে করেছে। মঙ্গলবার থেকে গঠন করা টাস্কফোর্সের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে নিয়মিত অভিযান চালাবে।’

সালমান/

আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, জড়িতদের পাসপোর্ট বাতিলের দাবি

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ এএম
আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, জড়িতদের পাসপোর্ট বাতিলের দাবি
ছবি : খবরের কাগজ

উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে জেনেভায় হেনস্তায় জড়িত থাকার প্রতিবাদে মুন্সীগঞ্জে মানববন্ধন করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা। এ সময় হেনস্তায় জড়িত মুন্সীগঞ্জের দুই বাসিন্দাসহ সবার পাসপোর্ট বাতিল ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানায়।

রবিবার (১০ নভেম্বর) বেলা ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাব ফটকে এ মানবন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। 

ঘন্টা ব্যাপি মানববন্ধনে অংশ নেয় শিক্ষার্থী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

এ সময় বক্তরা বলেন, জেনাভায় আসিফ নজরুলকে হেনেস্তায় জড়িত রয়েছে মুন্সীগঞ্জের দুই জন। তারা হলেন সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম জমাদার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুম খান দুলাল। বাংলাদেশে না পেরে তারা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সম্মানিত ব্যাক্তিদের হেনস্তা করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। দ্রুত এই দুই হেনেস্তাকারীসহ সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওয়তায় আনতে হবে। প্রয়োজনে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে আইনী যত সহায়তা প্রয়োজন তা করবে আইনজীবীরা।

এ সময় মানবন্ধরকারী, বিদেশের মাটিতে আবারও কোন হেনস্তার ঘটনা ঘটলে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে থাকা বাসভবন ঘেরাও করা হবে বলে হুশিয়ারী দেন।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরাম সভাপতি মো. তোতা মিয়া, অ্যাডভোকেট রোজিনা ইসলাম, অ্যাডভোকেট মো. হালিম হোসেন, ছাত্র জাহিদ হাসান, ফারদিন হাসান আবির, আজিম আহমেদ, বুলবুল আহমেদ রাজসহ অনেকে।

মঈনউদ্দিন সুমন/জোবাইদা/ 

দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে নিলেন বিএনপি নেতা

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ এএম
দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে নিলেন বিএনপি নেতা

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় স্থানীয় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এক হতদরিদ্র কৃষক ও তার স্ত্রীকে মেরে দাঁত ভেঙে ফেলাসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর করে জমির ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মামলা করার জেরে উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের বড়চাপা নামাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ৬ বছর আগে কৃষক রহিজ উদ্দিনের বড় মেয়েকে একই এলাকার নুরুল হক নুরুর ছেলে নাজমুল ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে নরসিংদী আদালতে একটি মামলা করেন। মামলার পর থেকে বিবাদী পক্ষ মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন।
 
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘তারা আমার দাঁত ভেঙে দিয়েছে। বাড়িতে এসে ছোট মেয়েকে তুলে নিয়ে যেতে চায়। এখন তাদের জোর বেশি। আমাদের ফসলি জমির ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে।’ ভুক্তভোগী নার‌ীর ছোট মেয়ে বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর আগে তার বড় বোনকে নাজমুল হোসেন ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করে আমরা অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এরপর গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি নেতা রিপন, তার ভাই শাজাহান ও নাজমুল দলবল নিয়ে আমাদের বাড়িতে আবার হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এরপর  শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রিপন দলবল নিয়ে আমাদের জমির পাকা ধান কেটে নেওয়া শুরু করে।’

বর্তমানে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় জীবনযাপন করছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করে ভুক্তভোগী কৃষক রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি ধান কাটার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ও মনোহরদী থানার পুলিশের সহযোগিতায় বাধা দিই। পরে পুলিশ চলে গেলে একই এলাকার আবদুল মজিদ লাল মিয়ার ছেলে কাননের সহযোগিতায় বিএনপি নেতা রিপন আবার আমাদের মারধর করে জমির ধান কেটে নিয়ে যায়।’
 
এ বিষয়ে অভিযুক্তের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ধান কাটার শ্রমিকরা জানান, তাদের মজুরির বিনিময়ে আনা হয়েছে। কার জমি তারা জানেন না। পুলিশ চলে যাওয়ার পর ধান বাড়িতে পৌঁছে দিতে রিপন তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
 
মনোহরদী থানার উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিএনপি নেতা রিপনের ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করায় সে দরিদ্র কৃষকের জমির ধান জোর করে কেটে নিয়ে যায়। আমরা বাধা দিলেও আবার জমির ধান কেটে নিয়ে যায়।’

পাহাড় না কাটার অঙ্গীকার মালিকদের

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৩ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫ এএম
পাহাড় না কাটার অঙ্গীকার মালিকদের
চট্টগ্রাম মহানগরের জয়ন্তিকা ও উত্তর লেক সিটি এলাকায় এক মতবিনিময় সভা। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড়সমৃদ্ধ এলাকা আকবর শাহর অন্তত ৪ শতাধিক পাহাড়-টিলা ও জলাশয়ের মালিকরা পাহাড় কাটা ও জলাশয় ভরাট করবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন।

রবিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে আকবর শাহ থানাধীন উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জয়ন্তিকা ও উত্তর লেক সিটি এলাকায় এক মতবিনিময় সভায় পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে এ অঙ্গীকার করেন। এ সময় স্থানীয় ভূমি মালিকরা নিজেদের অঙ্গীকারপত্র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব মো. সাদি উর রহিম জাদিদের কাছে তুলে দেন।

ব্যতিক্রমী এই মতবিনিময়ের আয়োজন করে  বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এবং ‘ভোরের আলো’ নামে একটি সংগঠন। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক সোনিয়া সুলতানা। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আরাফাত সিদ্দিকী, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আকবর শাহ থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার সেলিম, সিএমপির আকবর শাহ থানার ওসি মো. আফতাব হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনিরা পারভীন রুবা। ভোরের আলোর প্রতিষ্ঠাতা, সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী মো. শফিকুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ভূমি মালিকদের পক্ষ থেকে পাহাড়-টিলা কাটা ও জলাশয় ভরাট না করার লিখিত অঙ্গীকারপত্র তুলে ধরেন জয়ন্তিকা আবাসিক প্লট মালিক কল্যাণ কমিটির আহ্বায়ক মো. তৌহিদুল ইসলাম।

এতে ভূমি মালিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ওহীদুল ইসলাম, সদস্যসচিব মো. কামাল উদ্দীন ও ভূমি মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মো. আক্কাস আলী। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধিত-২০১০ অনুযায়ী সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় বা টিলা, ছনখেলা কিংবা দৃশ্যমান পাহাড়, জলাশয় যাই হোক না কেন, তা কাটা বা ভরাট করা এবং যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ। এটিকে কোনোভাবেই নষ্ট কিংবা ক্ষতিসাধন কিংবা মোচন করা যাবে না।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আকবর শাহ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। পরিবেশ আইন সবার জন্য প্রযোজ্য। সুতরাং আপনারা নিজেরা যদি সচেতন হন, তাহলে আপনাদের উচ্ছেদের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে কিছু করেন, তাতে কোনো ছাড় পাবেন না।’

সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক সোনিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত পাহাড়-টিলা কাটা ও জলাশয় ভরাটের তথ্য পাচ্ছি। আকবর শাহতেও এগুলো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও মামলা দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং আমরা চাই না আপনাদের কষ্ট দিতে। আপনারা যদি পাহাড়-টিলা বা জলাশয় মোচন থেকে বিরত থাকেন এবং পরিবেশ আইন মেনে চলেন, তাহলে আমাদের এসব করতে হয় না।’

ডিন নিয়োগে আইন ভাঙার অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধ

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ এএম
ডিন নিয়োগে আইন ভাঙার অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: খবরের কাগজ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ভেঙে ডিন নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে। আইন অনুযায়ী, বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সাদেকুর রহমানের ডিনের দায়িত্ব পাওয়ার কথা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়টি আমলে না নিয়ে অন্য বিভাগের কনিষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব দেন। পরে সেটি স্থগিত করে অন্য আরেকজন কনিষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব দেন উপাচার্য।

জানা যায়, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে প্রথমে অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জ্যোতির্ময় বিশ্বাসকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন পদে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে ওই নোটিশ বাতিল বলে প্রকাশ করে একই দিনে লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইসরাত জাহানকে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৪ নভেম্বর ডিনদের সঙ্গে মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী রেজিস্টারের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও উপাচার্য তাকে মিটিংয়ে রাখেননি। ডিনদের মিটিংয়ে সাবেক ডিনদের উপস্থিতির প্রয়োজন না থাকলেও উপাচার্য শুচিতা শরমিন সাবেক কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন  ড. মো. মহসিন উদ্দীনকে উপস্থিত রাখেন। সেখানে অধিকাংশ ডিন সাদেকুর রহমানের কথা জানালেও মহসিন উদ্দীন জ্যোতির্ময় বিশ্বাসকে সেই পদে সমর্থন দেন। উপাচার্য সেই অনুযায়ী জ্যোতির্ময়কে প্রথমে অনুমোদন দেন। পরে বিভাগ অনুযায়ী তালিকা করলে জ্যোতির্ময় বিশ্বাস সেই দায়িত্ব পাননি। সেক্ষেত্রে ইসরাত জাহান দায়িত্ব পান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ২২ (৫) ধারা অনুসারে কোনো অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালনে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে দুই বছর মেয়াদি ডিন নিযুক্ত হবেন। আরও শর্ত থাকে যে, কোনো বিভাগের একজন অধ্যাপক ডিনের দায়িত্ব পালন করে থাকলে ওই বিভাগের পরবর্তী অধ্যাপকরা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ডিন পদে নিযুক্তের সুযোগ পাবেন। সেই অনুসারে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের পরবর্তী জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সাদেকুর রহমানকে ডিনের দায়িত্ব পাওয়ার কথা। তবে আইন ভেঙে পরবর্তী লোকপ্রশাসন বিভাগের ইসরাত জাহানকে ডিন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ডিন নিয়োগে প্রথমে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তাকে ডেকে যোগদান করানোর দেড় ঘণ্টা পর সেটা বাতিল করা হয়। এটা ঠিক না। শিক্ষক সমাজে তার সম্মান আছে। নিয়ম-কানুন সঠিকভাবে না দেখে তাকে এভাবে অপমান করা প্রশাসনের উচিত হয়নি। গণ-অভ্যুত্থানের আগে হলের প্রভোস্টের দায়িত্বে থাকায় পদত্যাগ করা ব্যক্তিকে কীভাবে ডিন নিয়োগ দেওয়া হয়?’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ডিন খবরের কাগজের প্রতিবেদকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা মানা হয়নি। এ বিষয়ে উপাচার্য ভালো বলতে পারবেন, তিনি কীভাবে নিয়োগ দিলেন।’

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম আদেশটি ভুল হওয়ায় বাতিল করেছি। উপাচার্যের নির্দেশে সিনিয়রিটি হিসেবে যিনি পান, তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। তবে রেজিস্ট্রার স্বীকার করেন, বিগত সময়ে উপাচার্যরা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করেছেন। বর্তমান উপাচার্য তা করেননি। আসলে উপাচার্য স্যাররা তো সবকিছু চাইলে পারেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা মানবিক অনুষদের সাবেক ডিন মহসিন উদ্দীন বলেন, ‘উপাচার্য আমাকে ডিনদের একটি মিটিংয়ে ডাকেন। আমাকে ডেকেছিলেন। আমি আমার মতামত দিয়েছি। আমার সম্পর্কে অনেকে অনেক কিছু বলেছে। সেটা তো মুখ চেপে ধরতে পারব না।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, ‘আমি নিয়মে থাকার মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন আমি পড়েছি। যে নিয়মটা লেখা আছে সেই অনুযায়ী কাজ করেছি। ভবিষ্যতেও আমি আইন অনুযায়ী কাজ করে যাব।’

চট্টগ্রামে গণজমায়েত ‘স্বৈরাচারের উত্থান ঠেকাতে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ আছে’

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১০ পিএম
‘স্বৈরাচারের উত্থান ঠেকাতে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ আছে’
ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের উত্থান ঠেকাতে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ আছে।

রবিবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার এলাকায় প্যারেড ময়দানে আয়োজিত গণজমায়েত কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। 

রাসেল আহমেদ বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের উত্থান ঠেকাতে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ আছে। তাদের যেকোনো ধরনের অপতৎপরতা, নাশকতা, ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে রুখে দেওয়া হবে। আমরা শহিদ আবু সাঈদ, মুগ্ধের রক্ত কখনোই বৃথা যেতে দেব না। আমাদের বিপ্লব চলছে, চলবে।’ 

এর আগে কর্মসূচি সফল করতে বেলা ২টা থেকে প্যারেড ময়দানে জমায়েত হতে শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনতা। বেলা ৩টায় শুরু হয় কর্মসূচি। এ সময় ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকে। 

এরপর প্যারেড ময়দান থেকে ছাত্র-জনতা একটি বিশাল মিছিল নিয়ে গণি বেকারি, জামালখান, চেরাগী, আন্দরকিল্লা হয়ে নগরের নিউ মার্কেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, রাসেল আহমেদসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নগরের লালখানবাজার, জামালখান, নিউ মার্কেট, টাইগারপাস ও চেরাগী পাহাড় মোড় এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে থাকে। 

এদিকে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য, অপপ্রচার ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। 

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের গত ১৫ বছরে ক্যাম্পাসে মারধর ও চাঁদাবাজিতে জড়িত সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবিতে গতকাল সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রদল। 

এ সময় চবি ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দীন মহসিন বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালায়। এরা শিক্ষার পরিবেশকে ধ্বংস করেছে। এসব কাজে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি করছি।’ 

অবস্থান কর্মসূচি শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহিদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মামুন উর রশিদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় প্রমুখ।