ঢাকা ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

দিনাজপুর সীমান্তে মাদক-গুলির শব্দে আতঙ্কে বসবাস

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ এএম
আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ এএম
দিনাজপুর সীমান্তে মাদক-গুলির শব্দে আতঙ্কে বসবাস
দিনাজপুর সীমান্ত

দিনাজপুরের সাতটি উপজেলা বোচাগঞ্জ, বিরল, দিনাজপুর সদর, চিরিরবন্দর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর এবং হাকিমপুরের সঙ্গে প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার এলাকাঘেঁষা ভারতীয় সীমান্ত। কিন্তু সীমান্তের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদক ও থেকে থেকে গুলির শব্দ। ফলে আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে সীমান্তবর্তী মানুষকে। পাশাপাশি মাদকের ছোবলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশের অংশে ঢুকে পড়েন। কারণ ভারতীয় অংশে কাঁটাতারের বাইরেও ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ আন্তর্জাতিক রেখা অনুযায়ী ১৫০ ফুট এলাকা রয়েছে। সেই অংশে মাঝেমধ্যেই অনেক বাংলাদেশি এবং গ্রামের গরু, ছাগল ঢুকে পড়ে। বাংলাদেশের অংশে কাঁটাতারের বেড়া না থাকার কারণে অনেকটা অনিরাপদ বলে মনে করছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। 

কামদেবপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোরসালিন ইসলাম বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই ভারতীয় সীমান্তে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এতে করে আমরা অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ২০২৪ সালের এপ্রিলের দিকে বিএসএফের গুলিতে নিহত অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া গিয়েছিল এখানে।’

একই এলাকার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘সীমান্তে গুলির শব্দে অনেক সময় রাতে ঘুম ভেঙে যায়। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যান।’ 

দিনাজপুরের বিরলের ধর্মপুর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত আর পুনর্ভবা নদীঘেঁষা কামদেবপুর এলাকার দুই কিলোমিটারজুড়েই মাদকের ভয়াল থাবা পড়েছে। এই গ্রামে গত দুই বছরে মাদকাসক্ত হয়ে বেশ কয়েকজন অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী। আবার কেউ কেউ বাপ-দাদার জমিজমা বিক্রি করে এখন সর্বস্বান্ত। মাদক সেবনের আগে যিনি ১০-১৫ বিঘা জমির মালিক ছিলেন, আজকে তারা অনেকেই একেবারে পথের ফকির। মাদকের ছোবলে পড়ে নিজের ভিটাবাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করেছেন কেউ কেউ। 

কামদেবপুর গ্রামে চিহ্নিত চার থেকে পাঁচজন মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। যারা একসময়ে দিনমজুরের কাজ করতেন। আজকে তারা শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে গ্রামবাসী জানান। এই মাদক ব্যবসায়ীদের নাম প্রশাসনসহ অনেকেই জানেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তবে নিরাপত্তাহীনতার কারণে সংবাদকর্মীদের কাছে এসব মাদক ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করতে চাননি গ্রামবাসী।

দিনাজপুর শহর থেকে কামদেবপুর গ্রামে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উঠতি বয়সী যুবকদের আনাগোনা দেখা যায়। জানা যায়, কামদেবপুর গ্রামের পাশেই গৌরীপুরের পুনর্ভবা নদীর ওপর স্লুইসগেটটিকে অনেকেই মাদক সেবনের নিরাপদ আশ্রয় মনে করছে। প্রতিদিন দিনাজপুর শহর থেকে মোটরসাইকেলযোগে বেশ কিছু উঠতি বয়সী যুবককে কানদেবপুর গ্রামে যেতে দেখা যায়। 
কামদেবপুর গ্রামের স্কুলছাত্র থেকে শুরু করে শিক্ষক পর্যন্ত অনেকেই মাদক সেবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি কামদেবপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সেলিমের অফিসে বসেই ফেনসিডিল সেবনের দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ে, যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় প্রশাসন কামদেবপুর উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সেলিমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। 

কামদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা মানিক হোসেন বলেন, ‘রাত হলেই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল নিয়ে আসছে। ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক আমাদের এই এলাকার যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।’ 

একই গ্রামের যুবক হাসনাত মুহিত বলেন, ‘মাদক শুধু একটি পরিবার নয়, একটি গ্রামকে নয়, পুরো একটি ইউনিয়নকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি তার বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান কাউকে মানছে না। দিনশেষে মাদকের টাকা জোগাড়ে সে বাবা-মায়ের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করছে।’

বিজিবির দিনাজপুর ২২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আহসান উল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বিজিবি আরও কঠোরভাবে সীমান্ত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত আছে। ৫ আগস্টের পরবর্তী সময় দিনাজপুরের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন। তাদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মাদকের ক্ষেত্রে বিজিবি জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। তবে মাঝেমধ্যে বিএসএফ অস্ত্র ব্যবহার করে। বিশেষ করে তারা নন-নিথার (অস্ত্র) ব্যবহার করেন, তবে সেটি প্রাণঘাতী নয়। এই শব্দে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

চিন্ময়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার জামিন আবেদনের শুনানি মঙ্গলবার

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২১ পিএম
চিন্ময়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার জামিন আবেদনের শুনানি মঙ্গলবার
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর (৩৮) বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি হবে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর)।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আইনজীবীদের আদালত বর্জন ও কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। সপ্তাহ শেষে রবিবার (১ ডিসেম্বর) আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে শুনানির তারিখটি জানা যায়।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। যদিও গত ১ নভেম্বর দলের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলার বাদী ফিরোজ খানকে দল থেকে বহিস্কার করে বিএনপি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গত ২৬ নভেম্বর সকালে আদালতে নেওয়ার সময় পুলিশের প্রিজন ভ্যানের সামনে শুয়ে থাকে কিছু যুবক। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করে তার অনুসারীরা। বিকাল ৩টার দিকে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন। এদিন বিকালে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে হত্যা করা হয়।

মাহফুজ/এমএ/ 

 

পাওনা টাকার জন্য অটোরিকশা চালক হত্যা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১১ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
পাওনা টাকার জন্য অটোরিকশা চালক হত্যা

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকায় দৈনিক ভাড়া বাবদ পাওনা টাকার জন্য শরীফ তালুকদার (১৯) নামে এক অটোরিকশা চালককে হত্যা করে দোকানের কাঠের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘটনার বিষয় নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) রাজিব চক্রবর্তী।

এর আগে শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাত নয়টার দিকে বাগাদী চৌরাস্তা এলাকায় রাসেল গাজীর অটোরিকশার পার্টসের দোকানে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত শরীফ তালুকদার বাগাদী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ সাখুয়া গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় দুপুরে চালক শরীফ তালুকদারের মামা মো. জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযুক্তরা হলেন- চৌরাস্তার অটোরিকশার পার্টসের মালিক নানুপুর গ্রামের মো. রাসেল গাজী (২৮) ও তার দোকানের মিস্ত্রি সুমন পাটওয়ারী (৩৫)সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন।

জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া জানান, আমার ভাগিনা শরীফের কাছে থেকে রাসেল গাজী অটোরিকশার দৈনিক ভাড়া বাবদ ১১ হাজার টাকা পাওনা ছিলো। ওই টাকা আগামী ১২ ডিসেম্বর পরিশোধ করার কথা।  কিন্তু এর মধ্যে শনিবার রাত নয়টার দিকে রাসেল তার দোকানে ডেকে এনে ভাগিনা শরীফকে বেদম মারধর করে। মারধরে তার মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে দোকানের কাঠের সঙ্গে পরনের বেল্ট দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। ভোরে এলাকার মনির হোসেন মেম্বারের মাধ্যমে আমরা এই ঘটনা জানতে পারি এবং ঘটনাস্থলে যাই।

তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে পুলিশ তার মরদেহ ঊদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পালিয়েছে।

নিহত শরীফের স্ত্রী বিউটি বেগম ৬ মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা। বিউটির বাবা মোশরফ সিকদার বলেন, ‘মেয়ে আমাকে জানিয়েছে গত রাতে দোকানদার রাসেল শরীফকে টাকার জন্য দোকানে আটকে রাখে। মেয়েকে ৩ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দেয় রাসেল। বিউটি সকালে টাকা দিবে এবং তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তারা মেয়ের কথায় কর্ণপাত করেনি।’

চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)  রাজিব চক্রবর্তী বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে ওই চালকের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ফয়েজ/নাবিল/এমএ/

ট্রেনে কাটা পড়ে নিরাপত্তাকর্মীর হাত বিচ্ছিন্ন

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ পিএম
ট্রেনে কাটা পড়ে নিরাপত্তাকর্মীর হাত বিচ্ছিন্ন
আবু জাফর মুন্না। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মহানগরের কদমতলী এলাকায় চলন্ত ট্রেনে কাটা পড়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) এক সিপাহির বাম হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার শিকার ওই সিপাহির নাম-আবু জাফর মুন্না (৩৫)। তিনি আরএনবি চট্টগ্রাম রেলওয়ে জংশন শাখার অস্ত্র ইউনিটে কর্মরত।

আরএনবি চট্টগ্রাম রেল জংশন শাখার প্রধান পরিদর্শক (সিআই) আমান উল্লাহ বলেন, 'বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ধীরগতিতে কদমতলী থেকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিল। জাফর গাড়ি থেকে নেমে অফিসে যাওয়ার জন্য চলন্ত ট্রেনটিতে ওঠার চেষ্টা করার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।'

নাবিল/এমএ/

জামিন পেলেও মুক্ত হননি বাবুল আক্তার

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ পিএম
জামিন পেলেও মুক্ত হননি বাবুল আক্তার
পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আলোচিত মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামি পুলিশের সাবেক এসপি (পুলিশ সুপার) বাবুল আক্তার জামিন পেলেও কারাগার থেকে মুক্ত হননি। রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যার পরও তিনি বের হননি। পরে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মুক্তা ও ভাই নূরে আলম চলে যান।

এর আগে গত ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ বাবুল আক্তারকে জামিন দেন। 

গত বছরের ১৩ মার্চ বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের নামে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত। এ মামলায় আসামিরা হলেন, বাবুল আক্তার, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা ও খায়রুল ইসলাম।

গত ২৭ নভেম্বর জামিন আদেশের পর রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারগার থেকে মুক্ত হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু সন্ধ্যা ৭টায়ও তিনি মুক্ত হননি। এদিন বিকাল ৪টায় কারা ফটকে আসেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী মুক্তা ও তার ভাই নূরে আলম। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর তারা ৫টার দিকে কারাগারে ভেতরে ঢুকেন। এর এক ঘন্টা পরে তারা বেরিয়ে আসেন। এসময় তাদেরকে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরে নানা প্রশ্ন করলেও মুক্তা চুপ ছিলেন। তবে বাবুল আক্তারের ভাই নূরে আলম বলেন, তিনি আজ বের হচ্ছেন না। আগামীকাল হতে পারেন। আমরা এর বেশি কিছু জানিনা।

কারাগার থেকে কয়েকজন সুবেদার এসে সাংবাদিকদের জানান বাবুল আক্তার আজ বের হচ্ছেন না। তারা সাংবাদিকদের চলে যেতে অনুরোধ করেন।

ডেপুটি জেলার নওশাদ মিয়া বলেন, আমি বাইরে আছি। আজ মুক্ত হচ্ছেন না বাবুল আক্তার। কবে হবেন তাও আমার জানা নেই।

এদিকে কারা ফটকে কেউ বলছেন বাবুল আক্তারের জামিন ফরম কারাগারে পৌঁছেনি। আবার কেউ বলছেন বেল ফরম পৌঁছলেও কারাগার কর্তৃপক্ষই আজ তাকে বের করছেন না।

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

অপরদিকে জানা গেছে, বাবুল আক্তারের জামিনের বিরুদ্ধে জামিন স্থগিত চেয়ে রবিবার হাইকোর্টের বিচারপতি রেজাউল হকের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন মাহমুদা খানম মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। আদালত আগামী ৩ ডিসেম্বর তা আদেশের জন্য রাখেন আদালত। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুবুর রহমান। বাবুল আক্তারের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও মোহাম্মদ শিশির মনির। সে পর্যন্ত তিনি মুক্ত হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

২০১৬ সালের ৫ জুন নগরের জিইসি এলাকায় ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। তখন তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাবুলের মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১২ মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ওই দিনই মাহমুদার বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে বাবুলসহ আটজনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা আরেকটি মামলা করেন। সেদিনই বাবুল আক্তারকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বাবুল ও শ্বশুরের করা দুটি মামলা তদন্ত করে পিবিআই। শ্বশুরের মামলায় ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এই প্রতিবেদন গ্রহণ করে বাবুল আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার আগে বাবুল আক্তারের করা মামলায় ৯ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সেই মামলায় ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্র ওই বছর ১০ অক্টোবর গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। গত বছর ১৩ মার্চ বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। ৯ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

২০২১ সালের শুরুর দিকে বাবুল আক্তার মুক্তাকে বিয়ে করেন। এরপর বাবুল আক্তার মুক্তাকে নিয়ে ঢাকায় থাকতে শুরু করেন। তারপর স্ত্রী হত্যার ঘটনায় নিজের করা মামলায় গ্রেপ্তার হলে তার আগের সংসারের দুই সন্তান ছেলে মাহমুদ মাহির ও মেয়ে তাবাসসুম তাজনীনকে নিয়ে কুমিল্লায় পৈতিক বাড়িতে চলে আসেন মুক্তা। জানা গেছে, বাবুল আক্তারের দুই সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়েও নানা-নানী ও দাদা-দাদীর মধ্যে ঢাকা ও মাগুরায় একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।

মাহফুজ/এমএ/

সিলেটে ৮ শিশু হৃদরোগীর দেহে ডিভাইস

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৯ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম
সিলেটে ৮ শিশু হৃদরোগীর দেহে ডিভাইস
সিলেটে শিশু হৃদরোগীদের দেহে ডিভাইস বসাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো আটজন শিশু হৃদরোগীর দেহে ডিভাইস বসানো হয়েছে।

দুদিনব্যাপী এ কার্যক্রম শনিবার (৩০ নভেম্বর) ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় কার্ডিওলজি বিভাগের ক্যাথল্যাবে শুরু হয়েছে। রবিবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলে।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান ডা. রিজওয়ানা রিমার নেতৃত্বে এই অপারেশনগুলো সম্পন্ন হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হার্টের জন্মগত অস্বাভাবিক ছিদ্র বন্ধ করা, রক্তনালীর স্বাভাবিকীকরণ তথা এএসডি (অ্যাট্রিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট), ভিএসডি (ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট) এবং পিডিএর (প্যাটেন্ট ডাক্টাস আটারিওসাস) চিকিৎসার জন্য এ ডিভাইস লাগানো হয়। ঢাকার বাইরে এই প্রথম কোনো মেডিকেলে এ ডিভাইস লাগানো হলো।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও লন্ডনের ‘মান্তাদা এইড’ এর যৌথ উদ্যোগে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই অপারেশন সম্পন্ন করতে ওসমানী হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের এবং শিশু মেডিসিন বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করেছে।

কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ওসমানী মেডিকেলের ক্যাথল্যাবে বড় হৃদরোগীদের সার্জারি করা হচ্ছে। শিশু হৃদরোগীদের জন্য এ কার্যক্রম চালু হাসপাতালের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।’

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনির বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও লন্ডনের ‘মান্তাদা এইড’ যৌথভাবে এই ডিভাইস বসানো কার্যক্রমে সহযোগিতা করেন। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগের প্রধান ডা. রিজওয়ানা রিমা এই অপারেশনগুলো সম্পন্ন করেন। তার সঙ্গে ১০ জন চিকিৎসকের একটি টিম এসেছে। সবাই ফ্রিতে চিকিৎসা দিয়েছেন। ডিভাইসের খরচ দিয়েছে ‘মান্তাদা এইড’। ওসমানী হাসপাতালের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করেছি আমরা। আটজন শিশুর দেহে ডিভাইস বসানো সম্পন্ন হয়েছে। সবাই ভালো আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার তিনটি হৃদরোগের হাসপাতাল ছাড়া এর আগে দেশের আর কোথাও এই অপারেশন হয়নি। এ ধরনের রোগী আসলে আগে আমরা ঢাকায় রেফার করে দিতাম। যেটা একজন রোগীর পরিবারের জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। ভবিষ্যতে আমরা যদি এই কার্যক্রম চালু রাখতে পারি সেজন্য ‘মান্তাদা এইড’ এর সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি । তারাও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করবেন।’

শাকিলা ববি/নাবিল/এমএ/