ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

পথচারীর ক্ষোভ বছর ঘুরতেই রাস্তা কেন ভাঙিল?

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
বছর ঘুরতেই রাস্তা কেন ভাঙিল?
এক বছর আগে নির্মিত রাস্তাটি এরই মধ্যে ভেঙে গেছে। ইনসেটে ব্রিজের করুণ অবস্থা। ঠাকুরগাঁও সদরের রাজাগাঁও থেকে তোলা। খবরের কাগজ

‘হামার কপালের দোষ দিমো না নেতালাক দোষ দিমো, বুঝা পাই না। এইলা নাকি দেশের উন্নয়ন হইছে? বছরটা না ঘুরিতে ব্রিজখানের রাস্তাটা ভাঙে যাছে। হামরা এই রাস্তাটা ধরে যাছি আর আল্লাহকে ডাকেছি। একটা কাজ করিলে যদি জনগণের দুর্ভোগ, সমস্যা রহে যায়- তাহিলে ওইখান কাজের দোষ তুমরা কাকে দিবেন কহেন তো। হামার রাস্তাখান বছর ঘুরিতে না ঘুরিতে কেনে ভাঙিল, কোনো ঠিকাদার দায়সারা কাজ করিল আর সরকারের ইঞ্জিনিয়াররা কি চোখত কালা চশমা পরে ছিল? এইলার জবাব দিবা হবে।’ 

কথাগুলো বলছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইকেল আরোহী সমশের আলী। ওই ইউনিয়নের পাশাপাশি আসাননগর এলাকার হাজারও মানুষের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে ছয় কোটি টাকার বেশি অর্থে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে একটি ব্রিজ ও প্রায় এক কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ওই দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের পুরোনো দুর্ভোগ আবারও ফিরে এসেছে। কারণ যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে ব্রিজটির যে সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়েছে তা বছর না ঘুরতেই ভেঙে গেছে। ব্রিজটির অবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ। এতে ওই এলাকার মানুষদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় ব্রিজটির ওপর দিয়ে এখন কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করছে না। গত তিন মাস ব্রিজটি এক রকম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে সাড়ে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি মানুষের কোনো উপকারে আসছে না। বরং সংযোগ সড়কটি এখন পথচারীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে রাজাগাঁও ইউনিয়নের আসাননগর ও খড়িবাড়ি এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য শহরের পাইকারি বাজারে নিতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। অভিযোগ আছে, সংযোগ সড়কের বেহাল অবস্থা নিয়ে স্থানীয়রা এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানালেও তারা আমলে নেয়নি। 

জানা গেছে, ২০১৯ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। এর সঙ্গে প্রায় এক কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। ব্যয় হয় সাড়ে ছয় কোটি টাকা। কাজটি বাস্তবায়ন করেছেন জামাল হোসেন নামে এক ঠিকাদার। ২০২২ সালের মাঝামাঝি কাজ শেষ হয়। ২০২৩ সালের শেষদিকে ব্রিজটির উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন।

ব্রিজটি উদ্বোধনের পর কয়েক দফায় সড়কের দেয়াল ব্লকসহ নদীতে ধসে যায়। স্থানীয়রা তখন বালুর বস্তা দিয়ে সাময়িক সংস্কার করে ধস ঠেকায়। কিন্তু এবারের সামান্য বৃষ্টিতে আবারও ব্রিজটির পশ্চিম তীরের সড়কের একটি অংশের ব্লক ভেঙে যায়। এ ছাড়া সংযোগ সড়ক ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এভাবে কয়দিন থাকার পর স্থানীয়রা বালুর বস্তা ও বাঁশ দিয়ে সংস্কার করে চলাচলের ব্যবস্থা করেন। তবে হেঁটে চলাচল ছাড়া ব্রিজটির ওপর দিয়ে সব ধরনের ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আসাননগরের বাসিন্দা বনী হাওলাদারের অভিযোগ, ‘ছোট্ট একটি ব্রিজ আর সাড়ে ৭শ মিটারের রাস্তার কাজে এত টাকা বরাদ্দ হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি, ঠিকাদার এবং এলজিইডি কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় এই কাজ থেকে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছে। তা না হলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না।’

রাব্বিল কবির নামে ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা চাই এই ব্রিজ ও রাস্তা নির্মাণ কাজের তদন্ত হোক। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভাগীয় দায়িত্বরতরা কাজের মান পরীক্ষা করলেই অর্থ লুটের বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।’

এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে সদর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদের জানান, এ প্রকল্পের ব্যয় শুরুতে ধরা হয়েছিল পাঁচ কোটি ২৫ লাখ টাকা। পরবর্তী সময়ে তা বাড়িয়ে সাড়ে ছয় কোটি টাকা করা হয়। গেল টানা বর্ষণে ব্রিজের কোনো ক্ষতি না হলেও সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। বিষয়টি আমরা জানি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সংস্কার করা হবে।

এলজিইডি ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘ব্রিজটির পাশাপাশি সংযোগ সড়কেরও সংস্কার জরুরি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করতে আমরা চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে সংস্কারের জন্য ঢাকায় এস্টিমেট (কাজের সম্ভাব্য পরিমাণ ও ব্যয় নির্ণয়) পাঠানো হয়েছে। এখন আমরা বরাদ্দের অপেক্ষায় আছি।’ তবে এ কাজে কোনো অনিয়ম বা অর্থ লুট হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁয়

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২ পিএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২২ পিএম
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁয়
শীতে আগুন পোহাচ্ছেন মানুষ। ছবি: খবরের কাগজ

নওগাঁয় জেঁকে বসেছে শীত। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলার বদলগাছী আবহাওয়া অফিসে স্থানীয় তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। 

যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

উত্তরের হিমেল বাতাশ শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে সূর্য উঠার পর শীতের তীব্রতা ও কুয়াশা কিছুটা কমে।

বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলায় তাপমাত্রা কমেছে ২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতল বাতাসের কারনে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভুত হচ্ছে।

এই তীব্র শীতে গরম কাপড় ব্যবহার করা, শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়া, বাসি খাবার না খাওয়া ও উষ্ণ গরম পানি ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ছেন নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম।

শফিক ছোটন/অমিয়/

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রাকচাপায় নিহত ১

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পিএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রাকচাপায় নিহত ১
ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ট্রাকচাপায় এক নারী নিহত হয়েছেন।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট মিলিক মোড়ে ঘটনা ঘটে। 

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহতের নাম জাহান্নারা বেগম (৬০)। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার সেলিমাবাদ বেকিমোর এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলীর মেয়ে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, কানসাট মিলিক মোড়ে রাস্তার বাম পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন জাহান্নারা বেগম। এ সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক একটি ভ্যানকে জায়গা দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই নারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ট্রাকটি পালিয়ে যায়।

ওসি জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। ট্রাকটি আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

জহির/সাদিয়া নাহার/

সিলেটে ট্রেইল রান অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পিএম
সিলেটে ট্রেইল রান অনুষ্ঠিত
ছবি : খবরের কাগজ

সিলেটে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা নারী-পুরুষসহ প্রায় ৫০০ দৌড়বিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১০ কিলোমিটার ট্রেইল রান।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে রানার্স কমিউনিটির আয়োজনে এটিই প্রথম ট্রেইল রান।

নগরীর উপকণ্ঠের সবুজের চাদরে ঢাকা মালনীছড়া চা বাগানের আঁকাবাঁকা পথ আর টিলায় রান করেন দৌড়বিদরা। মালনীছড়া থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় হিলুয়া চা বাগান স্কুলমাঠে।  

এই ট্রেইল রান নারী-পুরুষ দুই বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন গোলাম রাহাত তোফায়েল। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন দীপ তালুকদার, তৃতীয় হন মিলন গোয়ালা।

নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন তাবাসসুম ফেরদৌস, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন সালেহা খাতুন মনি এবং তৃতীয় হন সুনেরা ইসলাম।

পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন ১০ কিলোমিটার ট্রেইল রান সম্পূর্ণ করেন ৩৮ মিনিটে এবং নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন ১০ কিলোমিটার রান সম্পূর্ণ করেন ৬৩ মিনিটে।
 
আয়োজক সিলেট রানার্স কমিউনিটির অ্যাডমিন হাসান আহমেদ জানান, রানার্স কমিউনিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা রানিং ইভেন্টসহ বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করি মানুষকে স্বাস্থ্যসচেতন করার জন্য এবং আমাদের তরুণ সমাজের খেলাধুলায় যেন আগ্রহ বাড়ে।

ট্রেইল রান শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আয়োজকরা। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রানার্স কমিউনিটির অ্যাডমিন হাসান আহমেদ, সৈয়দ সোহাগ, ফয়েজ আহমেদ, মো. আবু সালেহ, কামরুল ইসলাম, মাহমুদুর রহমান মিতুল, সাইফুল ইসলাম।

উজ্জ্বল মেহেদী/জোবাইদা/অমিয়/

নরসিংদী চেম্বার নির্বাচন: বিনা ভোটে নির্বাচন হওয়া নিয়ে প্রার্থীদের শঙ্কা

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
নরসিংদী চেম্বার নির্বাচন: বিনা ভোটে নির্বাচন হওয়া নিয়ে প্রার্থীদের শঙ্কা
নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন আগামী ২১ ডিসেম্বর। এ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটাররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলছেন, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে থাকা আওয়ামী লীগের দোসরদের নেতৃত্বে যেমন ছিল, তার চেয়েও খারাপ অবস্থায় হাঁটছে এবারের নির্বাচন। ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে একটি মহল মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিনা ভোটে কমিটি ঘোষণার গুঞ্জন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলায় ব্যবসায়ীদের বৃহৎ সংগঠন নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে দুটি শ্রেণিতে ভোটার রয়েছে ২ হাজার ৪৪৯ জন। এর মধ্যে সাধারণ শ্রেণিতে ১ হাজার ৪৭৭ জন ও সহযোগী শ্রেণিতে ৯৭২ জন।

চেম্বার সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী গত ২১ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়। ২৪ নভেম্বর প্রকাশ করা হয় তালিকা। প্রার্থীরা হলেন মো. মোস্তাকিম হোসেন, মো. কাজিম উদ্দিন, মো. মোতালিব হোসেন, মো. নাজমুল হক ভূঁঞা, এনামুল হক মনির, মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল, মো. ফয়সাল আহমেদ, আওলাদ হোসেন মোল্লা, মো. মোশারফ হোসেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. ছানাউল্লাহ (মিলন), মো. পরেশ সূত্রধর, নাসির আহমেদ রিগান, আব্দুল কাইউম মোল্লা, মো. মনির হোসেন, রাশেদুল হাসান রিন্টু, মো. নাসির উদ্দিন, মো. কাউছার হোসেন, মো. ইলিয়াস মিয়া, মো. রাজিবুল আলম ও হাসিব হায়দার।

এ ছাড়া একই দিন যাচাই-বাছাইয়ের পর সহযোগী শ্রেণিতে ১৪ জনের বৈধ মনোনয়নপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হলেন মোছাব্বির আহমেদ নাসির, হাসিব আহম্মেদ মোল্লা, মো. সারোয়ার হোসেন ভূঁঞা (ঝন্টু), আসাদুজ্জামান, মো. সুলতান খান, শোয়াইব আহমেদ, মাসুদ রানা, এনায়েত সারজিদ, মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, মো. মাহমুদুল কবির আমিন, মো. সোহেল সরকার, ইফরান আহম্মেদ মোল্লা (রিপন), ফয়সাল মুন্না, মো. নাসিক আহমেদ।

সুবল দাস নামে এক সদস্য বলেন, ‘নির্বাচনে ভোট দিতে ১০ হাজার টাকা খরচ করে ভোটার হালনাগাদ করলাম। এখন আমাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। নির্বাচনের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’ শফিকুল ইসলাম শেখ তুলু বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলের নির্বাচনগুলোতে আমি অনেক নিপীড়নের শিকার হয়েছি। এবারের নির্বাচনে কারও কোনো সাড়া পেলাম না।’

এদিকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এমন একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নানা অজুহাতে পাশ কেটে যান, কেউ কেউ পরে কথা বলবেন বলে এড়িয়ে যান। তবে কথা হয় চেম্বার নির্বাচনে সাধারণ শ্রেণিতে পরিচালক পদপ্রার্থী মো. মনির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবার নির্বাচনে শঙ্কা অনেক কম। সবাই মিলেমিশে একটি বিনা ভোটের কমিটি করতে চাচ্ছে।’

এদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না বলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন ৬ জন প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে বৈধতা পেয়েছেন। চেম্বারের সদস্যসচিব আবুল হোসেন খান বলেন, ‘আমরা মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছি। ৭ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ।’

যানজটে অতিষ্ঠ ফেনীবাসী

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ এএম
যানজটে অতিষ্ঠ ফেনীবাসী
ফেনী শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্রাংক রোডে প্রতিদিন এমন তীব্র যানজট দেখা যায়। ছবি: খবরের কাগজ

ফেনী শহরের যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। এতে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে দীর্ঘসময় নষ্ট হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের। এদিকে সড়কে শৃঙ্খলা না থাকায় অবৈধ যানচলাচল দিন দিন বাড়ছে। অন্যদিকে সড়কের দুই পাশে অবৈধ ফুটপাত দখল করে বসছে হকাররা। এতে যানজট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তবে প্রশাসনের আশা, এই সমস্যার দ্রুতই সমাধান হবে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর শহরের বিভিন্ন সড়কে চলতে শুরু করে অবৈধ যানবাহন। অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো হঠাৎ দখলে নেয় শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো।

অন্যদিকে ফুটপাত দখলে যায় প্রভাবশালীদের। দিনের শুরুর যানজট শেষ হয় না রাতেও। শহরের রেলগেট, ট্রাংক রোড, শহিদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়ক ও মহিপালে যানজটের দৃশ্য প্রতিদিনের। চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ, যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ যথাযথভাবে কাজ করলে নিয়ন্ত্রণে আসবে সড়কের শৃঙ্খলা। এ ছাড়া আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় বেপরোয়াভাবে চলছে অবৈধ যান।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরে নির্ধারিত বাস ও সিএনজি অটোরিকশা স্টপেজ না থাকায় যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা করছে চালকরা। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, বাড়ছে দুর্ঘটনা। যে যার মতো করে গাড়ি চালাচ্ছেন। কেউ ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা করছেন না।

নুর হোসেন নামে এক চালক জানান, শহরের জেল রোড থেকে শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক ৫ মিনিটের রাস্তা। এটা পার হতে ৪০ মিনিট সময় লেগেছে তার। শহরের আইনশৃঙ্খলা এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে যে, এর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।

মোরশেদ আলম নামে এক পথচারী জানান, ‘গত দুই-তিন মাস ধরে শহরে যানজট আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এর কারণ, গ্রাম থেকে বিভিন্ন ধরনের রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শহরমুখী হয়েছে। এ জন্য শহরের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। পৌর সভায় অবৈধ যান ও ফুটপাতে হকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন যানজট বাড়ছে।’

ছকিনা আক্তার রুনা নামে একজন বলেন, ‘মহিপাল থেকে সদর হাসপাতাল যাব। রাস্তায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা বসেছিলাম। শহরের যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে মানুষ কিভাবে চলবে?’ শহরের রামপুরের বাসিন্দা ওসমান গনি রাসেল বলেন, ‘শহরের প্রাণকেন্দ্র শহিদ মিনার এখন হকারদের দখলে। শুধু শহিদ মিনার নয়, ট্রাংক রোডে বড় মসজিদ, শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে হকারদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বহু গুণ। সন্ধ্যার পর থেকে রাস্তার তিন ভাগের দুইভাগ দখল করে রাখে তারা। এসব বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

স্থানীয় সংগঠক ও লেখক ইমন-উল হক বলেন, ‘ফেনী শহর পুরোটা এখন হকারদের দখলে। ৫ আগস্টের পর পটপরিবর্তনে মানুষ যেভাবে খুশি সেভাবে শহরের রাস্তাঘাট দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দিয়ে বসেছে।’

জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) এস এম শওকত জানান, শহরে যানজট নিরসনে পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এর মধ্যে গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ৪৯৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এ সময় ২১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। অবৈধ যানের বিরুদ্ধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ফেনী পৌর সভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, ‘সড়কে বেপরোয়া কিছু যান চলাচল করছে, এটি সত্য। তবে খুব দ্রুত সময়ে পৌরসভা এসব অবৈধ যানের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে অভিযান চালাবে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা বসেছে। হকারদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ করে শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আধুনিক শহর হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।’

জেলা পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। প্রতিনিয়ত অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া পৌর কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে যানজট নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ চলছে।’