নীলফামারীর সৈয়দপুরের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর কার্যক্রমে অনিয়ম এবং সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও, সেখানে বাস্তবে অনেক ক্লিনিক দেরিতে খুলে এবং সময়ের অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যায়। রোগীদের অভিযোগ, ক্লিনিকগুলো ২ ঘণ্টাও খোলা থাকে না।
সৈয়দপুরের ৫টি ইউনিয়নে ১৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এতে ১৪ জন সিএইচসিপির সদস্য প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে সপ্তাহে ৬ দিন দায়িত্ব পালন করার কথা। একই সঙ্গে ইউনিয়নভিত্তিক স্বাস্থ্য সহকারীদের ৩ দিন এবং পরিবার পরিকল্পনা সহকারীদের ৩ দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে বসে সেবা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সেই হিসেবে প্রতিদিন কমিউনিটি ক্লিনিকে দুজনের সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও পাওয়া যায় শুধু সিএইচসিপিদের।
রোগীদের অভিযোগ, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায় না। চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সিএইচসিপির থাকার কথা থাকলেও দুপুর ১টার মধ্যে ক্লিনিক বন্ধ করে চলে যান। ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে প্রতিদিন অনেক রোগীকে ফিরে যেতে হয়।
বাঙালিপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা আরজিনা বেগম বলেন, ‘আমি ২ ঘণ্টা ধরে বসে আছি। ডাক্তার এলে ভেতরে ঢুকব। ওষুধ নিয়ে চলে যাব। কিন্তু এখনো তিনি আসেননি।’
কামারপুকুর বাগডোকরা কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে এসেও চিকিৎসা পাননি আবদুর রহিম। তিনি বলেন, ‘আমার বাচ্চার জন্য আমি দুই দিন ক্লিনিকে আসছি। কিন্তু এক দিনও খোলা পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাইয়েছি। চাইলেও ওষুধ পাওয়া যায় না।’
কামারপুকুর বাগডোকরা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি শাপলা আকতার বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে সাধারণত সর্দি, কাশি, জ্বর, আমাশয়, ডায়েরিয়া এবং প্রসূতিদের চেকআপ ও আয়রন ওষুধ দিই। রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকি। ক্লিনিকে ২৭ প্রকার ওষুধ দেওয়া হয়। আমি সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ক্লিনিকে থাকি।’
সরেজমিনে নিজবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা গেছে, ক্লিনিক বন্ধ থাকায় ক্লিনিকের সামনে মুদি দোকানে সেবা নিতে আসা রোগীরা বসে আছেন। তাদের অভিযোগ, সকাল ৯টায় ডাক্তার আসার কথা থাকলেও আসেন প্রতিদিন ১১টায়।
নিজবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা সিএইচসিপি জলির নাহার জলি বলেন, ‘আমাদের সকাল ৯টায় আসার কথা। আমি দূর থেকে আসি। অনেক সময় রাস্তায় জ্যাম থাকে। তাই আসতে দেরি হয়েছে। বেলা ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত থাকি।’
দেরিতে আসার বিষয়ে নীলফামারী জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাসিবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘এ ব্যাপারটা আমার জানা ছিল না। সেবা গ্রহীতাদের যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো আমরা তদারকি করব।’