সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ছাত্রদল-যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল থেকে তালা প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন ছাত্রদল নেতা রিপন ইসলাম। তিনি তালা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
রবিবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তিন রাস্তার মোড়ে পাল মার্কেটে তিনি এ ঘটনার নেতৃত্ব দেন। এ সময় সঙ্গে আরও সাত থেকে আটজন নেতা-কর্মী ছিলেন।
ঘটনার সময়ে উপস্থিত থাকা স্থানীয় সাংবাদিক ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘একটি বিক্ষোভ মিছিল তালা উপশহর প্রদক্ষিণ করছিল। খবরের জন্য আমি সেটির ছবি ও ভিডিও ধারণ করছিলাম। মিছিলটি তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে ছাত্রদল নেতা রিপন ইসলামের নেতৃত্বে সাত থেকে আটজন নেতা-কর্মী প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তালা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রিপন ইসলাম বলেন, ‘বেশ কয়েকজনের অফিসে তালা লাগানো হয়েছে। এটা যদি প্রেসক্লাব হয়, তা হলে কোনো সমস্যা নেই। ভুল করে লাগিয়ে ফেলেছে। এ বিষয়ে সরাসরি বিস্তারিত কথা বলব। আমাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররাও ছিল।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তালার প্রতিনিধি সাকিব ও কাদের বলেন, ‘রবিবার তালায় আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। এমন কি মিছিলেও আমাদের কেউ ছিল না। আমাদের নাম ব্যবহার করে কেউ অপকর্ম করলে দায়ভার সেই ব্যক্তি বা সংগঠনের।’
তালা উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মন্টু বলেন, ‘আমি পাটকেলঘাটায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছিলাম। তালার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এটি নিয়ে আমি কথা বলব। কোনো অপকর্মের দায় দল নেবে না।’
প্রেসক্লাবে তালা লাগানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘বিষয়টি আমরা দেখছি। এ ঘটনায় যে বা যারা যুক্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলাম সজীব ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। অভিযোগ সত্য হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।’
২০১৭ সালে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক প্রণব ঘোষ ও সে সময়ের উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মশিয়ার সরদার তালা প্রেসক্লাব দখল করে নেন। এরপর থেকে প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা পাল মার্কেটে অস্থায়ী কার্যালয় নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তালায় অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রিপন ইসলামসহ একটি বাহিনী ব্যাপক তাণ্ডব ও লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন রিপনসহ তার অনুসারীরা।