রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া সদস্য প্রণতি রঞ্জন খীসা গতকাল রবিবার সাড়ম্বরে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। নতুন দায়িত্ব পেয়ে শুভাকাঙ্ক্ষীদের উষ্ণ অভিবাদনে অফিসে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অথচ পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক! তার বিরুদ্ধে থানায় রয়েছে হত্যা মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
নানিয়ারচর থানার ওসি নাজির আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে প্রণতি রঞ্জন খীসার দাবি, ‘অসত্য অভিযোগ করায় পরে বাদীর সঙ্গে তার আপস হয়ে গিয়েছিল।’
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া একজন চেয়ারম্যান ও ১৪ সদস্যের তালিকার মধ্যে তিন নম্বরে রয়েছে প্রণতি রঞ্জনের নাম। ১০ নভেম্বর (রবিবার) সকালে নবগঠিত অন্তর্বর্তী পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। প্রণতি রঞ্জন খীসা রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটের মংখোলা গ্রামের মৃত ননি পুতুল খীসার ছেলে। নানিয়ারচর থানায় করা শান্ত ওরফে শান্তি চাকমা হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।
মামলা সূত্র জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর নানিয়ারচর বাজারসংলগ্ন বিহারপাড়া এলাকায় শান্ত ওরফে শান্তি চাকমাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের সদস্য ছিলেন। এ ঘটনায় ২০ অক্টোবর নিহতের স্ত্রী রিপনা চাকমা বাদী হয়ে নানিয়ারচর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার ২৯ আসামির তালিকায় প্রণতি রঞ্জন খীসার নাম রয়েছে ১৮ নম্বরে। পরে ২০২০ সালের ২৫ জুন মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙামাটির জজ আদালতের আইনজীবী রাজীব চাকমা বলেন, ‘পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য প্রণতি রঞ্জন খীসার নাম ওই মামলার আসামির তালিকায় রয়েছে। মামলার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।’
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে প্রণতি রঞ্জন খীসা অবশ্য বলছেন, মামলাটির আসামির তালিকায় তার নাম ছিল। কিন্তু এতে তার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করায় পরে বাদীর সঙ্গে তার আপস হয়েছিল।
নানিয়ারচর থানার ওসি নাজির আলম বলেন, ‘জেলা পরিষদের সদস্য নিয়োগ ও হত্যা মামলার চার্জশিটের থাকা প্রণতি রঞ্জন খীসার নাম, পিতা-মাতা ও গ্রামের ঠিকানা একই। আমরা নিশ্চিত হয়েছি তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় ওয়ারেন্ট আছে। তিনি পলাতক। তবে শুনেছি জেলা পরিষদে তিনি সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। উনার নিয়োগের আগে পরে তার বিষয়ে অফিশিয়ালি কেউ তথ্য চাননি।’