ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে এবার রাজস্থানের জয়পুর টেক্সটাইলের একটি বিছানার চাদর পুড়িয়ে দেশটির পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রাজশাহীতে ‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি বিছানার চাদরটি ছুড়ে ফেলে দিলে নেতা-কর্মীরা তাতে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। অনুষ্ঠানে দেশীয় কিছু কাপড় স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর ভুবন মোহন পার্কে ভারতীয় পণ্য বর্জন ও দেশি পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করতে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রিজভী।
ভারতের মুখাপেক্ষী থাকব না জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘ওরা মনে করেছে, আমরা তাদের ওপর নির্ভরশীল। তাদের ছাড়া আমাদের চলবে না। এখন দেখছে কলকাতা নিউমার্কেট বন্ধ, দোকানগুলো চলে না। আমরা আর কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাই না। এ বিষয়টা আমরা ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের টাঙ্গাইলের শাড়ি, কুমারখালির লুঙ্গি-গামছা সারা পৃথিবীতে রপ্তানি হয়। আমাদের জামদানি শাড়ি, তাঁতের শাড়ি, রাজশাহীর সিল্ক পৃথিবী বিখ্যাত। এখনও বিয়ে-শাদি হলে রাজশাহী সিল্ক পরিধান করে। তাহলে কেন বাংলাদেশের নারীরা ভারতীয় শাড়ি কিনবেন? কিনতে আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যখন আমাদের উপহাস করে, তখন আমরা কেন কিনব? কেন আমরা মুখাপেক্ষী থাকবো?’
রিজভী বলেন, বাংলাদেশে বার্ষিক ২৭ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা। উৎপাদন করি ৩৭ লাখ টন। নানা কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয় এবং ভারত থেকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। আমাদের ব্যবস্থাপনা যদি ঠিক করা যায় তাহলে কেউ ভারতীয় পেঁয়াজ নেবে না।
তাবেদারির কারণেই শেখ হাসিনা ভারতের প্রিয় ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভারতের পণ্য বর্জন করছি কারণ তারা এই দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে না। তাদের বন্ধুত্ব শুধু শেখ হাসিনার সঙ্গে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাকি গোস্যা হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা দখল করতে এলে আমরা কি ললিপপ খাব? আমি বলে রাখি আপনারা চট্টগ্রামের দিকে তাকাবেন, তাহলে কি আমরা আমলকি চুষব?
রাজশাহী নগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহ খালিদ হাসান চৌধুরী পাইন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় নগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ মামুনের সঞ্চালনায় বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এনায়েত করিম/মাহফুজ/এমএ/