গত বর্ষা মৌসুমে কয়েক দফায় ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি বেশকিছু এলাকায় ভূমি ও পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে ভূমি ধসের কারণে খাগড়াছড়ির সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৪ কিলোমিটারের এই নান্দনিক সড়কের মোট ৩০টি পয়েন্টে মাটি ধসে গেছে।
সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে দৃষ্টিনন্দন হিসেবে পরিচিত এই সড়কটি ঝুঁকিতে পড়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙনকবলিত অংশগুলো সংস্কার করা না হলে আরও ঝুঁকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আগামী বর্ষার আগে ভেঙে যাওয়া অংশে স্থায়ী প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরি করা না গেলে সড়কটি পুরোপুরি ধসে যেতে পারে বলে ধারণা করছে ওই সড়কে চলাচলকারীরা।
জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ি সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী বর্ষণ চাকমা বলেন, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও কৃষিজীবীসহ স্থানীয়দের জন্য সড়কটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া ছাড়াও সিন্দুকছড়ি সড়ক হয়ে মহালছড়ি উপজেলার বাসিন্দারা সহজে কম সময়ে চট্টগ্রাম, ফেনী ও ঢাকা যেতে সড়কটি ব্যবহার করেন।
তবে বর্ষায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা না হলে এই সড়কে চলাচলকারীদের ভোগান্তি বাড়বে। এখনই উদ্যোগ না নিলে সড়কটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যান চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। অথচ এই সড়কটি সংস্কারে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেই। সওজ কেবল রাস্তা থেকে ধসে পড়া মাটি সরানোর কাজ করছে। কিন্তু ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেই তাদের।
এদিকে সড়কের বিভিন্ন অংশে পাহাড় থেকে মাটি ধসে পড়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। চালক ও যাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। অপরদিকে সড়ক থেকে মাটি সরাতে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সওজ বিভাগ। সড়কটি সংস্কারে এখন পর্যন্ত কার্যকরী কোনো উদ্যোগ না নিলেও সড়কটি রক্ষায় ইতোমধ্যে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সওজের কর্মকর্তারা।
সওজের খাগড়াছড়ি বিভাগের কার্যসহকারী মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এখানে ভারী বর্ষণে ৩০টি পয়েন্টে মাটি ধস হয়েছে। আমরা মাটি সরানোর কাজ করছি। এটি শেষ করতে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।’
সওজের রাঙামাটি সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোফাজ্জল হায়দার বলেন, ‘যেহেতু এখানে বড় ধরনের ধস হয়েছে, সেহেতু ভাঙনগুলো দেখে করণীয় ঠিক করা হবে। আমরা চেষ্টা করব সড়কটি যেন শুষ্ক মৌসুমের মধ্যেই সংস্কার করা যায়। ইতোমধ্যে পরামর্শকও নিয়োগ করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে।’