ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

পড়ে আছে আড়াই শ কোটির রেলপথ

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ এএম
পড়ে আছে আড়াই শ কোটির রেলপথ
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। ছবি: খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফ

আন্তদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা ব্যয়ে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বহুল কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথ উদ্বোধনের এক বছর পেড়িয়ে গেলেও এখনো ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি!

এ ছাড়া রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে কবে নাগাদ এ পথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হবে তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। যদিও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, এই রেলপথ চালু হলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হবেন। এ ছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্যে ভাটা পড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আন্তদেশীয় এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ অংশের নির্মাণকাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে দেড় বছরের এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ছয় বছরেরও বেশি।

জানা গেছে, রেলপথ পুরোপুরি প্রস্তুত থাকায় কয়েক দফা ট্রায়াল রান শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই রেলপথের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তখনো ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবন, প্ল্যাটফরম এবং সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এরই মধ্যে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এই রুটে ভারত থেকে অর্ধশতাধিক পণ্য আমদানি এবং সব ধরনের পণ্য রপ্তানির সুযোগ ছিল বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।

অবশেষে চলতি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকশি জানান, বিভিন্ন সংকটে প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়েছে। এখন কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। ফলে প্রকল্পটি সরকারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে রেলপথটি নির্মিত হলেও কার্যত এটি ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হবে। উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে কলকাতা বা অন্য রাজ্যগুলোর দূরত্ব অনেক বেশি। ফলে পণ্য পরিবহনে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি খরচও বেশি হয়। মূলত ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এই রেলপথ দিয়ে নিজেদের পণ্য পরিবহন করবেন। এতে করে তাদের ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হবেন। এ ছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তখন ভারতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণও কমে যাবে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী রাজীব ভূঁইয়া মনে করেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের পণ্য রপ্তানি কমেছে। বর্তমানে যে কয়েকটি পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হয় তার মধ্যে রড ও সিমেন্ট অন্যতম।

‘মূলত ত্রিপুরার ব্যবসায়ীদের এ দুই পণ্য ভারতের অন্য রাজ্য থেকে আনতে খরচ বেশি পড়ে। তাই তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেন। তবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালু হলে তারা কম খরচে রড ও সিমেন্টের মতো চাহিদাসম্পন্ন পণ্যগুলো পরিবহন করতে পারবেন। এতে স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে’, বলেন রাজীব ভূঁইয়া।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসিবুল হাসান বলেন, ‘রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য খুব বেশি বাড়বে না। তবে পণ্য আমদানির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব হবে। যদি সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়- তা হলে যখন যে পণ্যের চাহিদা, সেই পণ্য রেলে কম খরচে আমদানি করে ব্যবসায়ীরা মুনাফা করতে পারবেন। এতে সরকারেরও রাজস্ব বাড়বে।’

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, ‘কখন রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলবে সেটি সরকারি সিদ্ধান্ত। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য শুরুর বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি হস্তান্তর করলে তখন বাণিজ্য শুরুর বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হবে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রাকচাপায় নিহত ১

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পিএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রাকচাপায় নিহত ১
ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ট্রাকচাপায় এক নারী নিহত হয়েছেন।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট মিলিক মোড়ে ঘটনা ঘটে। 

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহতের নাম জাহান্নারা বেগম (৬০)। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার সেলিমাবাদ বেকিমোর এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলীর মেয়ে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, কানসাট মিলিক মোড়ে রাস্তার বাম পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন জাহান্নারা বেগম। এ সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক একটি ভ্যানকে জায়গা দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই নারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ট্রাকটি পালিয়ে যায়।

ওসি জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। ট্রাকটি আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

জহির/সাদিয়া নাহার/

সিলেটে ট্রেইল রান অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পিএম
সিলেটে ট্রেইল রান অনুষ্ঠিত
ছবি : খবরের কাগজ

সিলেটে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা নারী-পুরুষসহ প্রায় ৫০০ দৌড়বিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১০ কিলোমিটার ট্রেইল রান।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে রানার্স কমিউনিটির আয়োজনে এটিই প্রথম ট্রেইল রান।

নগরীর উপকণ্ঠের সবুজের চাদরে ঢাকা মালনীছড়া চা বাগানের আঁকাবাঁকা পথ আর টিলায় রান করেন দৌড়বিদরা। মালনীছড়া থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় হিলুয়া চা বাগান স্কুলমাঠে।  

এই ট্রেইল রান নারী-পুরুষ দুই বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন গোলাম রাহাত তোফায়েল। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন দীপ তালুকদার, তৃতীয় হন মিলন গোয়ালা।

নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন তাবাসসুম ফেরদৌস, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন সালেহা খাতুন মনি এবং তৃতীয় হন সুনেরা ইসলাম।

পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন ১০ কিলোমিটার ট্রেইল রান সম্পূর্ণ করেন ৩৮ মিনিটে এবং নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন ১০ কিলোমিটার রান সম্পূর্ণ করেন ৬৩ মিনিটে।
 
আয়োজক সিলেট রানার্স কমিউনিটির অ্যাডমিন হাসান আহমেদ জানান, রানার্স কমিউনিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা রানিং ইভেন্টসহ বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করি মানুষকে স্বাস্থ্যসচেতন করার জন্য এবং আমাদের তরুণ সমাজের খেলাধুলায় যেন আগ্রহ বাড়ে।

ট্রেইল রান শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আয়োজকরা। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রানার্স কমিউনিটির অ্যাডমিন হাসান আহমেদ, সৈয়দ সোহাগ, ফয়েজ আহমেদ, মো. আবু সালেহ, কামরুল ইসলাম, মাহমুদুর রহমান মিতুল, সাইফুল ইসলাম।

উজ্জ্বল মেহেদী/জোবাইদা/অমিয়/

নরসিংদী চেম্বার নির্বাচন: বিনা ভোটে নির্বাচন হওয়া নিয়ে প্রার্থীদের শঙ্কা

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
নরসিংদী চেম্বার নির্বাচন: বিনা ভোটে নির্বাচন হওয়া নিয়ে প্রার্থীদের শঙ্কা
নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন আগামী ২১ ডিসেম্বর। এ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটাররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলছেন, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে থাকা আওয়ামী লীগের দোসরদের নেতৃত্বে যেমন ছিল, তার চেয়েও খারাপ অবস্থায় হাঁটছে এবারের নির্বাচন। ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে একটি মহল মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিনা ভোটে কমিটি ঘোষণার গুঞ্জন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলায় ব্যবসায়ীদের বৃহৎ সংগঠন নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে দুটি শ্রেণিতে ভোটার রয়েছে ২ হাজার ৪৪৯ জন। এর মধ্যে সাধারণ শ্রেণিতে ১ হাজার ৪৭৭ জন ও সহযোগী শ্রেণিতে ৯৭২ জন।

চেম্বার সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী গত ২১ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়। ২৪ নভেম্বর প্রকাশ করা হয় তালিকা। প্রার্থীরা হলেন মো. মোস্তাকিম হোসেন, মো. কাজিম উদ্দিন, মো. মোতালিব হোসেন, মো. নাজমুল হক ভূঁঞা, এনামুল হক মনির, মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল, মো. ফয়সাল আহমেদ, আওলাদ হোসেন মোল্লা, মো. মোশারফ হোসেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. ছানাউল্লাহ (মিলন), মো. পরেশ সূত্রধর, নাসির আহমেদ রিগান, আব্দুল কাইউম মোল্লা, মো. মনির হোসেন, রাশেদুল হাসান রিন্টু, মো. নাসির উদ্দিন, মো. কাউছার হোসেন, মো. ইলিয়াস মিয়া, মো. রাজিবুল আলম ও হাসিব হায়দার।

এ ছাড়া একই দিন যাচাই-বাছাইয়ের পর সহযোগী শ্রেণিতে ১৪ জনের বৈধ মনোনয়নপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হলেন মোছাব্বির আহমেদ নাসির, হাসিব আহম্মেদ মোল্লা, মো. সারোয়ার হোসেন ভূঁঞা (ঝন্টু), আসাদুজ্জামান, মো. সুলতান খান, শোয়াইব আহমেদ, মাসুদ রানা, এনায়েত সারজিদ, মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, মো. মাহমুদুল কবির আমিন, মো. সোহেল সরকার, ইফরান আহম্মেদ মোল্লা (রিপন), ফয়সাল মুন্না, মো. নাসিক আহমেদ।

সুবল দাস নামে এক সদস্য বলেন, ‘নির্বাচনে ভোট দিতে ১০ হাজার টাকা খরচ করে ভোটার হালনাগাদ করলাম। এখন আমাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। নির্বাচনের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’ শফিকুল ইসলাম শেখ তুলু বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলের নির্বাচনগুলোতে আমি অনেক নিপীড়নের শিকার হয়েছি। এবারের নির্বাচনে কারও কোনো সাড়া পেলাম না।’

এদিকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এমন একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নানা অজুহাতে পাশ কেটে যান, কেউ কেউ পরে কথা বলবেন বলে এড়িয়ে যান। তবে কথা হয় চেম্বার নির্বাচনে সাধারণ শ্রেণিতে পরিচালক পদপ্রার্থী মো. মনির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবার নির্বাচনে শঙ্কা অনেক কম। সবাই মিলেমিশে একটি বিনা ভোটের কমিটি করতে চাচ্ছে।’

এদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না বলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন ৬ জন প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে বৈধতা পেয়েছেন। চেম্বারের সদস্যসচিব আবুল হোসেন খান বলেন, ‘আমরা মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছি। ৭ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ।’

যানজটে অতিষ্ঠ ফেনীবাসী

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ এএম
যানজটে অতিষ্ঠ ফেনীবাসী
ফেনী শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্রাংক রোডে প্রতিদিন এমন তীব্র যানজট দেখা যায়। ছবি: খবরের কাগজ

ফেনী শহরের যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। এতে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে দীর্ঘসময় নষ্ট হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের। এদিকে সড়কে শৃঙ্খলা না থাকায় অবৈধ যানচলাচল দিন দিন বাড়ছে। অন্যদিকে সড়কের দুই পাশে অবৈধ ফুটপাত দখল করে বসছে হকাররা। এতে যানজট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তবে প্রশাসনের আশা, এই সমস্যার দ্রুতই সমাধান হবে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর শহরের বিভিন্ন সড়কে চলতে শুরু করে অবৈধ যানবাহন। অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো হঠাৎ দখলে নেয় শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো।

অন্যদিকে ফুটপাত দখলে যায় প্রভাবশালীদের। দিনের শুরুর যানজট শেষ হয় না রাতেও। শহরের রেলগেট, ট্রাংক রোড, শহিদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়ক ও মহিপালে যানজটের দৃশ্য প্রতিদিনের। চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ, যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ যথাযথভাবে কাজ করলে নিয়ন্ত্রণে আসবে সড়কের শৃঙ্খলা। এ ছাড়া আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় বেপরোয়াভাবে চলছে অবৈধ যান।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরে নির্ধারিত বাস ও সিএনজি অটোরিকশা স্টপেজ না থাকায় যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা করছে চালকরা। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, বাড়ছে দুর্ঘটনা। যে যার মতো করে গাড়ি চালাচ্ছেন। কেউ ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা করছেন না।

নুর হোসেন নামে এক চালক জানান, শহরের জেল রোড থেকে শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক ৫ মিনিটের রাস্তা। এটা পার হতে ৪০ মিনিট সময় লেগেছে তার। শহরের আইনশৃঙ্খলা এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে যে, এর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।

মোরশেদ আলম নামে এক পথচারী জানান, ‘গত দুই-তিন মাস ধরে শহরে যানজট আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এর কারণ, গ্রাম থেকে বিভিন্ন ধরনের রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শহরমুখী হয়েছে। এ জন্য শহরের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। পৌর সভায় অবৈধ যান ও ফুটপাতে হকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন যানজট বাড়ছে।’

ছকিনা আক্তার রুনা নামে একজন বলেন, ‘মহিপাল থেকে সদর হাসপাতাল যাব। রাস্তায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা বসেছিলাম। শহরের যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে মানুষ কিভাবে চলবে?’ শহরের রামপুরের বাসিন্দা ওসমান গনি রাসেল বলেন, ‘শহরের প্রাণকেন্দ্র শহিদ মিনার এখন হকারদের দখলে। শুধু শহিদ মিনার নয়, ট্রাংক রোডে বড় মসজিদ, শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে হকারদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বহু গুণ। সন্ধ্যার পর থেকে রাস্তার তিন ভাগের দুইভাগ দখল করে রাখে তারা। এসব বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

স্থানীয় সংগঠক ও লেখক ইমন-উল হক বলেন, ‘ফেনী শহর পুরোটা এখন হকারদের দখলে। ৫ আগস্টের পর পটপরিবর্তনে মানুষ যেভাবে খুশি সেভাবে শহরের রাস্তাঘাট দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দিয়ে বসেছে।’

জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) এস এম শওকত জানান, শহরে যানজট নিরসনে পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এর মধ্যে গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ৪৯৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এ সময় ২১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। অবৈধ যানের বিরুদ্ধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ফেনী পৌর সভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, ‘সড়কে বেপরোয়া কিছু যান চলাচল করছে, এটি সত্য। তবে খুব দ্রুত সময়ে পৌরসভা এসব অবৈধ যানের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে অভিযান চালাবে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা বসেছে। হকারদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ করে শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আধুনিক শহর হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।’

জেলা পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। প্রতিনিয়ত অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া পৌর কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে যানজট নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ চলছে।’

দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা হাসপাতাল চলে ১ জন চিকিৎসকে

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ এএম
দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা হাসপাতাল চলে ১ জন চিকিৎসকে
দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। ছবি: খবরের কাগজ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ২০ শয্যা হাসপাতালে মিলছে না চিকিৎসাসেবা। এতে এ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো থাকলেও এগুলোর কার্যক্রম সচল নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালটি

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে হাসপাতালটি নির্মিত হয়। ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে এটি পরিচালিত হয়। ২০০১ সালে হাসপাতালটি রাজস্ব খাতে আনা হলে নেমে আসে জনদুর্ভোগ। ২০১১ সালের অক্টোবরে হাসপাতালটিতে ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসাসেবা চালু হয়। প্রথম কয়েক মাস ভালোভাবেই এর কার্যক্রম চললেও পরবর্তী সময়ে অচল হয়ে পড়ে সেটি।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ। বর্তমানে ইনডোর চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। আউটডোর ও জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু থাকলেও সেটা নামেমাত্র। ইউনিয়নের কেউ অসুস্থ হলে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।

হাসপাতালটির মূল ফটকে প্রায় সময়ই তালা ঝুলানো থাকে। হঠাৎ কখনো খোলা থাকলেও ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, এর মাঠে গরু-ছাগল চড়ানো হচ্ছে। হাসপাতালের ভেতরের অধিকাংশ দরজায় তালা ঝুলানোর কারণে ভূতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে ইনডোর চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকার কারণে আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে চলেছে।

হাসপাতালের কার্যক্রম সচল রাখতে ৪ জন মেডিকেল অফিসার প্রয়োজন হলেও সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র একজন। চারজন সহকারী নার্স কর্মরত থাকার কথা থাকলেও নেই একজনও। ফার্মাসিস্ট পদে একজন থাকার কথা থাকলেও পদটি জনবলশূন্য

অপরদিকে আয়া পদটি শূন্য। সেখানে প্রয়োজন ২ জন নারী। অফিস সহায়ক পদে দুজন থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কেউ কর্মরত নেই। সুইপার পদে দুজন প্রয়োজন হলেও কর্মরত আছেন ১ জন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালটি। পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও স্টাফ না থাকায় চিকিৎসাসেবা হতে বঞ্চিত এ ইউনিয়নের মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয় না। এখানে ডাক্তার এসে দুই ঘণ্টা থেকে চলে যান।’ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘হাসপাতালে যে যন্ত্রপাতি আছে। সেগুলো যদি চালু থাকে তা হলে আমাদের পাটগ্রাম যাওয়া লাগত না। এখানেই চিকিৎসা পাইতাম।’

হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নূর আরেফিন প্রধান জানান, হাসপাতালটি প্রত্যন্ত এলাকায়। কিন্তু এর কার্যক্রমের মধ্যে শুধু আউটডোর চালু আছে। এখানে জনবলের অভাবে ইনডোর চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতালটি জেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। এখানে দ্রুত জনবল নিয়োগ দেওয়া উচিত।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রায়হান আলী বলেন, ‘দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা হাসপাতালে একজন চিকিৎসক আছেন। একজনের পক্ষে তো ইনডোর চালু রাখা সম্ভব না। আরও চিকিৎসক ও নার্স দরকার। অ্যাম্বুলেন্স আছে একটি। তবে চালক নেই। দীর্ঘদিন পরে থাকার কারণে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাটারি ও টায়ার নষ্ট হয়ে গেছে।’