যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় যুবদল কর্মী পিয়াল হাসানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এবার ছাত্রদল নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাব-৬ এর সদস্যরা।
গ্রেপ্তাররা হলেন ঝিকরগাছা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোবারকপুর গ্রামের শামীম রেজা ও একই গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী মেহেদী হাসান।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) র্যাব-৬ কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার রাসেল আহমেদ জানান, গত সোমবার রাতে খুলনার চুকনগর ও ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত সোমবার বেনাপোল সীমান্ত ও মোবারকপুর গ্রাম থেকে আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার করে ঝিকরগাছা থানার পুলিশ।
গত শনিবার (৯ নভেম্বর) দেড়টার দিকে নিহত যুবদল কর্মী পিয়াল বাজারে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন। পৌর শহরের মিতালী হল রোড এলাকায় তাকে হত্যার উদ্দেশে আসামিরা বোমা নিক্ষেপ করেন। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে ঝিকরগাছা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকলে সেখানে আসামিরা দা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিয়ালের গলা, হাতে, পায়ে ও পিঠে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা করলে মামলাটি নিয়ে র্যাব-৬ সদস্যরা ছায়া তদন্তে নামেন। পরবর্তী সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান চালানো হয়।
কমান্ডার রাসেল জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি শামীম রেজা ঢাকার উদ্দেশে পালানোর জন্য খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে যান। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মেহেদী হাসান ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও মূলত ছাত্রদল নেতা শামীমের পরিবারের সঙ্গে নিহত পিয়ালের পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
গত ৫ আগস্ট ঝিকরগাছা বাজারে আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে পৌর ছাত্রদলের সভাপতি শামীম রেজার সঙ্গে যুবদলের কর্মী পিয়াল হাসানের বিরোধ হয়। সেই বিরোধের জেরে পিয়ালের নেতৃত্বে কয়েকজন শামীমের বাবা কামরুল ইসলামকে ছুরি মেরে জখম করেন। ওই ঘটনায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় পিয়ালসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। দেড় মাস কারাভোগ করে গত ৮ নভেম্বর জামিনে মুক্ত হন তারা। পরদিন ৯ নভেম্বর পিয়াল রেলস্টেশন এলাকায় শামীমের কাছে গিয়ে ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে আসেন।
নিহত পিয়ালের ভাই সুমন হাসান বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শামীমের বাবা আহত হওয়ার ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে পিয়াল শামীমের কাছে মাপ চাইতে যান। কিন্তু শামীম মাপ না করে তার লোকজন ডেকে আমার ভাইকে হত্যা করেছেন। আমরা খুনিদের ফাঁসি চাই।’
এদিকে হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে উপজেলা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম রেজার সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।