সুন্দরবনের দুবলার চরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে ৪০১ জন তীর্থযাত্রী রওনা হয়েছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল থেকে বুড়িগোয়ালীনি ও কোবাদক ফরেস্ট স্টেশন থেকে অনুমতি নিয়ে ১২টি ট্রলারে করে ৪০১ জন তীর্থযাত্রী রওনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সুন্দরবনের দুবলার চরে রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানে যাওয়া তীর্থযাত্রী বহনকারী ট্রলারসহ অন্যান্য নৌযানে কোনো অবৈধ মালামাল বহন না করার অভিযান পরিচালনাসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীগণদের আইডিকার্ড যাচাই করে পাস পারমিট দেওয়া হয়।
এসময় ওই অভিযানে তিনজন মুসলিম ধর্মাবলম্বীকে সনাক্ত করে তাদেরকে নৌযান হতে নামিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।
এবিষয়ে জিয়াউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বনবিভাগ পাস পারমিট দিয়েছে। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়া মুসলিম ধর্মবলম্বীদের কোনোভাবেই রাসপূজায় যাওয়ার সুযোগ নাই। তাই তাদের নৌযান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের বনবিভাগের সদস্যগণ তল্লাশি চালিয়ে যাদেরকে শনাক্ত করেছেন তারা হলেন, সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার মো. জিল্লুর রহমান (৪৪), সাতক্ষীরা সদরের কাজী ইসমাইল হোসেন (২৬) ও সাতক্ষীরা কুকরালী গ্রামের শেখ আতিকুর রহমান (২৭)।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ জে এড হাছানুর রহমান জানান, ১৪ অক্টোবর সকাল থেকে রাস উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্টেশন অফিস থেকে পূণ্যার্থীদের অনুমতিপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় বন বিভাগের সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। রাস উৎসবে যাওয়ার ছলে কেউ যাতে অবৈধভাবে সুন্দরবনে অনুপ্রবেশ বা হরিণ ও বন্যপ্রাণী শিকার করতে না পারে, সে জন্য কঠোর নজরদারি রয়েছে। এজন্য বনরক্ষীরা নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, তিথি অনুযায়ী ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিন আলোরকোলে রাস পূর্ণিমার পূজা ও পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। বনবিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল দল এসব এলাকায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে জানিয়েছে বন বিভাগ।
মাহফুজ/এমএ/