ঢাকা ৬ বৈশাখ ১৪৩২, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
English

নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, অতিষ্ঠ জনজীবন

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ এএম
সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, অতিষ্ঠ জনজীবন
নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়কের দুই পাশের জমি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আবর্জনার দুর্গন্ধে এ পথে চলাচলকারী মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

নামে-বেনামে দখল হচ্ছে নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়কের দুই পাশের জমি। দখল করা এসব জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে ময়লার ভাগাড়। আবর্জনার দুর্গন্ধে এ পথে চলাচলকারী মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ময়লার কারণে নষ্ট হচ্ছে পিচঢালা সড়ক ও পরিবেশ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।

জানা যায়, ৯০ দশকে নরসিংদী-মদনগঞ্জে চলাচলরত রেলপথ বিলুপ্ত করে যানবাহন চলাচলের জন্য এ সড়কটি নির্মাণ করা হয়। সড়কের প্রায় ৪০ কিলোমিটার অংশের দুই পাশের রেলওয়ের পতিত জমি দখলে নিচ্ছে স্থানীয়রা। নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে নরসিংদী ও মাধবদী পৌরসভার এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে রেলওয়ের জমিতে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা পদক্ষেপ না নেওয়ায় সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে ময়লার স্তূপ। এতে সড়কে চলাচলে দুর্ভোগ দেখা দেওয়ার পাশাপাশি বিপর্যয় হচ্ছে পরিবেশের। নারায়ণগঞ্জ, আড়াইহাজার, গোপালদী এবং মাধবদী থেকে নরসিংদী শহরে প্রবেশ পথে দুর্গন্ধে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সেখানে চলাচলকারী হাজারও মানুষকে।

জেলার পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে মাধবদী-আড়াইহাজার যাতায়াত করেন অসংখ্য যাত্রী। তাদের অভিযোগ, এই পথে ময়লার ভাগাড়ের পাশে এলে দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে যায়। নাক-মুখ চেপে ধরেও সেটা থেকে রেহাই পাওয়া যায় না।

শান্তিবাজার থেকে এই সড়ক দিয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে যাচ্ছেন রহিমা আক্তার ও তার বোন তামান্না আক্তার। এ সময় তারা বলেন, ‘দিনে চার থেকে পাঁচবার এ সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। ময়লার গন্ধে প্রায় অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা জরুরি।’

এ সড়কে অটোরিকশা চালান জমির ইসলাম, মনোয়ার, ইয়ার উদ্দিন, রফিকসহ শতাধিক চালক। তারা জানান, মাধবদীর খনমর্দ্দী থেকে বিলপার, শান্তিবাজার, মোল্লারচর এবং বিবিরকান্দী গ্রামে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে ময়লার গন্ধে অসুস্থা হয়ে পড়তে হয়। একই অবস্থা নরসিংদী শহরের প্রবেশপথেও।

এদিকে রেলওয়ের নরসিংদী জেলা পর্যায়ের ভূমিসংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা নেই। এ কারণে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরেও আসছে না।

জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, ‘পৌরসভার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ময়লার বিষয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া কীভাবে স্থায়ী সমাধান করা যায়, এর পরিকল্পনা চলছে। সব কাজ করার জন্য সময় দরকার।’

পাওনা পরিশোধের দাবিতে এনইপিসি শ্রমিকদের মানববন্ধন

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম
পাওনা পরিশোধের দাবিতে এনইপিসি শ্রমিকদের মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে অভিযোগ তুলে ধরেন এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেডের শ্রমিক কর্মচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেড (NEPC Consortium Power Ltd.) তাদের একমাত্র স্থায়ী সম্পদ ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বার্জ মাউন্টেড পাওয়ার প্ল্যান্ট বিক্রি করে দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) প্রতিষ্ঠানটির একদল শ্রমিক-কর্মচারি নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি যাতে শ্রমিকদের পাওয়া না মিটিয়ে নিজেদের সম্পদ বিক্রি করে দেশ ত্যাগ করতে না পারে, সেই দাবি জানান।

‘এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেডের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকবৃন্দ’- এই ব্যানারে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটির ২০ জনের মতো শ্রমিক-কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেড একটি বহুজাতিক ভাসমান বিদ্যুত কেন্দ্র। যা ১৯৯৯ সালে কাঁচপুরের হরিপুর এলাকায় স্থাপিত হয়। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় আইপিপি। শুরু থেকেই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এদেশের দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি শেষ হওয়ার পর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের ৫% প্রফিট বোনাস দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোম্পানিটি আজ পর্যন্ত আমাদের সে প্রাপ্য পরিশোধ করেনি।

আন্দোলনকারীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা আজ এখানে উপস্থিত হয়েছি এক ন্যায্য দাবি ও দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ জানাতে। এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেড গত প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করেছে এবং আমাদের ১৮৬জন শ্রমিকের সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ওপর ভর করে তারা এই দেশে মুনাফা অর্জন করেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রাপ্য ৫% প্রফিট বোনাসের টাকা পরিশোধ না করেই কোম্পানিটি তাদের একমাত্র স্থায়ী সম্পদ-১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বার্জ মাউন্টেড পাওয়ার প্ল্যান্ট বিক্রি করে দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

বক্তারা এ সময় বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, লেবার কোর্ট আমাদের পক্ষে চূড়ান্ত রায় দিলেও এনইপিসি কর্তৃপক্ষ সেই রায়কে অগ্রাহ্য করেছে। তারা আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করে দেশের সম্পদ বিক্রি করছে, যা একদিকে আইন লঙ্ঘন। অন্যদিকে শ্রমিকদের প্রতি চরম অন্যায়।’

কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অনেক কর্মী হতাশাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। শ্রমিকদের বঞ্চিত করে কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে চলে যাওয়াকে অত্যন্ত অমানবিক এবং একটি জঘন্য সামাজিক ও আইনগত অপরাধ বলেও দাবি করেন তারা।

প্রাশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘যতক্ষণ না এনইপিসি তাদের শ্রমিকদের প্রাপ্য ৫% প্রফিট বোনাস পরিশোধ করছে, ততক্ষণ তাদেরকে বার্জ বিক্রি করে দেশ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না।’

তোফায়েল/মাহফুজ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান, কৃষকদের মাথায় হাত

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান, কৃষকদের মাথায় হাত
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফেলা বর্জ্যে নষ্ট পাকা ধান। ছবি: খবরের কাগজ

কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফেলা বর্জ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কয়েকশ’একর জমির ধান ও শাকসবজি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা, ঘরে তুলতে পারছেন না পাকা ধান। 

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দূষিত বর্জ্যের নিচে পড়ে নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমির বোরো ধান। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় সাধারণ কৃষকরা।

এ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে খালগুলো সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

স্থানীয় অনেকের অভিযোগ সামান্য বৃষ্টিতে ক্যাম্পের নালা উপচে ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ছে মানববর্জ্য। সে সঙ্গে আছে প্লাস্টিক, পলিথিন ও মেডিকেল বর্জ্য। এ কারণে হুমকিতে জমির ধান আর সবজি ক্ষেত। অনেক জমিতে বর্জ্য জমে পচে যাচ্ছে ধান। এভাবে প্রতি বছর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে চরম লোকসানে পড়তে হচ্ছে এখানকার কৃষকদের।
 
কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক আহমদ উল্লাহ বলেন, প্রতিবছর বর্ষা ও ব্যুরো মৌসুমে ধান চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে একবারও ভালো মতো ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পের বর্জ্য এসে ফসলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আসা বন্ধসহ খাল খননের দাবি করেন তিনি। 

কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ধান চাষ হয়েছে। কিন্তু ধান ঘরে তোলার আগেই রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আসা বর্জ্যে নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে আমার লালিত স্বপ্ন সোনার ধান। বর্জ্য আসা বন্ধ না হলে কৃষকরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দ্রুত এর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তার।

আরেক কৃষক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, এবার জমিতে ধান চাষ করেছি। ফসলও ভালো হয়েছে। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে শেষ করে দিয়েছে জমির পাকা ধান। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যের সমস্যা গত সাত বছরের। এটি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। স্থানীয়দের পাহাড়ি জমি ছেড়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের বসবাসের ব্যবস্থা করেছে কিন্তু সেখানকার বর্জ্যগুলো এসে পড়ছে স্থানীয় কৃষি জমিতে। ফলে কৃষিতে আর্থিকভাবে ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বর্জ্য আসা বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া ড্রেন নির্মাণ ও খালগুলো সংস্কার করতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে।
 
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল করিম তারেক বলেন, কয়েক দিনের সামান্য বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যের কারণে কৃষি জমির ধান নষ্ট হয়েছে। কৃষকদের নিয়ে কৃষি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা সংগ্রহ করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী জানান, কিছুদিন আগে খাল খনন করেও এটির সমাধান হয়নি। এগুলো মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নির্দিষ্ট স্থানে ডাস্টবিন দেওয়া হলেও সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার না করাতে নালা দিয়ে ক্যাম্পের বর্জ্যগুলো পানির সঙ্গে চলে আসে কৃষি জমিতে। ফলে কৃষকের ধান ও জমি দুটিই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের খালগুলো খনন ও সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) একটি ফান্ডিং করেছে। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে।

রিদুয়ানুল হক সোহাগ/মাহফুজ

 

পুঁটিমাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্ব, স্ত্রীকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ স্বামীর

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২১ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম
পুঁটিমাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্ব, স্ত্রীকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ স্বামীর
থানায় আত্মসমর্পন করেন অভিযুক্ত স্বামী বাছির উদ্দিন। ছবি: খবরের কাগজ

বাজার থেকে কিনে আনা পুঁটি মাছ কাটা নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করেছে স্বামী। স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর স্বামী নিজেই আবার থানায় গিয়ে উপস্থিত হয়ে দেন ঘটনার বর্ণনা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে এমনটাই ঘটেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজার এলাকার উত্তর ত্রিশ গ্রামে।

অভিযুক্ত স্বামী বাছির উদ্দিন (৩৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার সাহাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে। নিহত স্ত্রী মৌসুমী আক্তার (২৯) দেবিদ্বার উপজেলার নবীপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বাছির উদ্দিন একটি মেডিসিন কোম্পানির মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ এরিয়ার রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে চাকরি করেন। সেই সুবাদে আড়াই বছর ধরে উত্তর ত্রিশ গ্রামের আলাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া আছেন।

শনিবার দুপুরে কোম্পানিগঞ্জ বাজার থেকে পুঁটি মাছ কিনে নিয়ে যায় বাছির উদ্দিন। সেই মাছ নিয়ে বাসায় যেতেই স্ত্রী মৌসুমী আক্তার মাছ কাটাকুটি করতে পারবে না বলে মাছ ছুঁড়ে মারেন স্বামীর ওপর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী বাছির উদ্দিন তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তারকে গলাচেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে সে নিজেই মুরাদনগর থানায় গিয়ে উপস্থিত হয়ে পুলিশকে তার স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি জানায়।

থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশকে বাছির উদ্দিন জানান, নয় বছর আগে সে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন মৌসুমী আক্তারকে। তাদের এই সংসার জীবনে রয়েছে ৪ বছর বয়সী জমজ ১টি ছেলে ও ১টি মেয়ে। সে আরও জানায়, দীর্ঘদিনের এই সংসার জীবনে তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার তাকে প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে যন্ত্রণা দিত। তবে স্ত্রীকে হত্যার কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না তার। বাজার থেকে আনা পুঁটি মাছ যখন তার উপর ছুঁড়ে মারে সে, তখন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে গলাটিপে হত্যা করে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, শনিবার দুপুরের দিকে যখন বাছির উদ্দিন থানায় উপস্থিত হয়ে আমাকে জানায় সে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে, তখন প্রথমে আমার বিশ্বাস হয়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানি ঘটনা সঠিক। ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বাছির উদ্দিন থানা হেফাজতে আছে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

জহির শান্ত/মাহফুজ

 

জলকেলি দিয়ে শেষ হলো বৈসাবির উচ্ছ্বাস

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৬ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম
জলকেলি দিয়ে শেষ হলো বৈসাবির উচ্ছ্বাস
শনিবার দুপুরে রাঙ্গামাটি মারী স্টেডিয়ামে সাংগ্রাই জল উৎসবে মেতে ওঠেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। ছবি: খবরের কাগজ

রাঙ্গামাটিতে মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই জলোৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি (বৈসু-সাংগ্রাই-বিজু-বিষু-বিহু)। তিন পার্বত্য জেলার মারমা জনগোষ্ঠি কেন্দ্রীয়ভাবে রাঙ্গামাটিতে সবচেয়ে বড় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মূলত চৈত্রসংক্রান্তিতে বাংলাবষের্র বিদায় ও বরণ উপলক্ষে এ উৎসব উদযাপন করে পাহাড়ি মানুষেরা। এরমধ্য দিয়ে ১৫ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটল।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাঙ্গামাটি মারী স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী সাংগ্রাই জলোৎসবের আয়োজন করে মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস)। প্রধান অতিথি হিসেবে দুপুরে পানি ছিটিয়ে জল উৎসবের সূচনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। এরপরই মারমা তরুণ-তরুণীরা মেতে ওঠেন সাংগ্রাই জল উৎসবে। পরিবেশিত হয় বাংলাসহ পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির নৃত্যসঙ্গীত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমরা একসঙ্গে আছি। একসঙ্গে রাখতে চাই। একসঙ্গে হাঁটতে চাই। এটাই আমাদের স্বপ্ন। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন। এটাই আমাদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্বপ্ন যে একসঙ্গে হাঁটব, একসঙ্গে কাজ করব, কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। সবার অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করব। এটাই হচ্ছে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন। 

তিনি বলেন, আপনারা সবাই সহযোগিতা করুন। ভবিষ্যতে এই এলাকায় অর্থনীতি, শিক্ষা, পরিবেশসহ সব ক্ষেত্রে আমরা হারমোনিয়াস ডেভেলপমেন্ট দেখতে চাই। এখানে আমরা সবাই একসঙ্গে হাতে হাত ধরে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে দেখি। আপনারা কখনো ভাববেন না যে, পাহাড়ের ওপরে আছেন বলেই সমতল থেকে আপনারা বিচ্ছিন্ন কেউ। 

মারমা তরুণ-তরুণীরা দলবেঁধে উৎসব করে একে অপরের গায়ে জল ছিটিয়ে ভিজিয়ে দেয়। তাদের বিশ্বাস, এ জল ছিটিয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে পুরনো বছরের দুঃখ, গ্লানি, হতাশা, অমঙ্গল মুছে গিয়ে নতুন বছরে সুখ শান্তি কল্যাণ বয়ে আনে। নববর্ষকে বরণ ও পুরনো বছরকে বিদায় জানাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত মারমা সম্প্রায় চৈত্রসংক্রান্তিতে সাংগ্রাই জলউৎসব উদযাপন করে থাকে।

পাহাড়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বৈ-সা-বি নানান আয়োজনে পালন করে পাহাড়ের মানুষ। তাই অনুষ্ঠানে মানুষের আগ্রহ ছিল বেশি। অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারসহ বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জলউৎসবে যোগ দিতে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে।

ফলে এ উৎসব পরিণত হয়েছে সম্প্রীতির মিলন মেলায়। উৎসবে মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীদের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি ছাড়াও পরিবেশিত হয় আবহমান বাংলার নৃত্যসঙ্গীতসহ বৈচিত্র্যপূর্ণ পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর নান্দনিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মাতে পাহাড়ি বাঙালি জনগোষ্ঠীর মানুষ।

ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি এ উৎসব পরিণত হয়েছে সম্প্রীতির মিলন মেলায়। উৎসবে মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীদের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি ছাড়াও পরিবেশিত হয় আবহমান বাংলার নৃত্যসঙ্গীতসহ বৈচিত্র্যপূর্ণ পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর নান্দনিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মাতে পাহাড়ি বাঙালি জনগোষ্ঠীর মানুষেরাও।

উৎসব কমিটির সদস্য সচিব ও মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) এর সাধারণ সম্পাদক উশিনু মারমা নয়ন বলেন, পানি খেলার মাধ্যমে আমরা বার্তা দিতে চাই -আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সম্প্রীতি আছে, সেখানে পাহাড়ি বাঙালিসহ ১৩টি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্প্রীতি অটুট থাকুক। এর মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি এবং সম্প্রীতির ধারা সূচিত হবে।

অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম, যুগ্ম-সচিব কঙ্কন চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দিপু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

জিয়াউর রহমান জুয়েল/মাহফুজ

 

এসএমইউ ভিসিকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
এসএমইউ ভিসিকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম
ছবি: খবরের কাগজ

চাকরি নিয়মিতকরণ ও ভাতা প্রদানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আহবান করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (এসএমইউ) ভিসিকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অন্যথায় দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের পক্ষ থেকে এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

পরিষদের পক্ষে প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মাসুদ লিখিত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তাদের পরিশ্রমের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সেশন জট তৈরি হয়নি। একদিনের জন্যও তারা কাজ বন্ধ রাখেননি। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন মুকুল আমাদের একাধিকবার চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দিয়েছেন। এ জন্য ২০২৩ সালের ২৬ জুন শূন্য পদের বিপরীতে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ২০২৩ সালের ১৭ জুন আরেকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। কিন্তু আজ অবদি দু‘টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলে স্বৈরশাসক হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক সাবেক ভিসি এনায়েত ও রেজিস্টার ফজলুর রহমান গা ঢাকা দেন। দু‘জনই ছিলেন ফ্যাসিস্টের দোসর। এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যানারে আন্দোলনরতরা ভিসি এনায়েত ও ফজলুর রহমানের পদত্যাগের দাবি তোলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর রেজিস্টার ফজলুর রহমান পদত্যাগ করেন। প্রায় ৪ মাস পর ভিসি ডা. এনায়েত হোসেন ক্যাম্পাসে ফেরেন। খবর পেয়ে বৈষম্য বিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে এসে তাদের চাকরি স্থায়ী ও বেতন ভাতার বিষয়ে ভিসির কাছে জানতে চান। এক পর্যায়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন বেতন বঞ্চিতরা। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ১৫ দিনের মধ্যে চাকরি স্থায়ীকরণসহ সব দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন ভিসি. এনায়েত। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার মেজর মেহেদী অবরুদ্ধ অবস্থা তুলে নিতে অনুরোধ করলে তারা অবরোধ তুলে নেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ভিসির আশ্বাসের ১৫ দিনের ডেডলাইনের ১৪ দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সিন্ডিকেটে ডিন অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলামকে সভাপতি করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ইতোপূর্বে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃতদের চাকরি নিয়মিতকরণ ও বেতন-ভাতাদি প্রদান প্রসঙ্গে একটি সুস্পষ্ট প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এছাড়াও সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত সকল সদস্যের আলোচনার প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গতিশীলতা, আদালতের নির্দেশনা, আর্থিক ও প্রশাসনিক বিধি-বিধান, মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি এর নির্দেশনা পর্যালোচনা করে মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় নিয়োগের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে প্রতিবেদন প্রদানে কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়। উদ্ভট পরিস্থিতে অনিয়মিত নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকুরি  নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য্যের অনুমোদনক্রমে দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আবেদন জমা প্রদানের শেষ সময় ছিলো ১৯ ডিসেম্বর। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে তারা আবেদনপত্র জমা দেন। এরপর গত ২০ ডিসেম্বর ভিসি এনায়েত হোসেন পদত্যাগ করলে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি তারা ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ভাইভা পরীক্ষার বোর্ড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম ছাড়াও বিএমএন্ডডিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম, ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম উপস্থিত ছিলেন।

কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক ডা. ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারি। তিনি যোগদানের পর গত ১৬ মার্চ উপাচার্যের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনি ২৫ মার্চ পর্যন্ত উমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করবেন বলে লিখিত পত্রের মাধ্যমে ভিসিকে জানানোর পরও তার অনুপস্থিতিতে গত ২৩ মার্চ বর্তমান ভিসি ১২তম সিন্ডিকেট সভা আহবান করেন। কমিটির সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম উপস্থিত না থাকায় নিয়োগ রিপোর্টটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। ওই সিন্ডিকেটের পর থেকে উপাচার্য চৌহাট্টাস্থ কার্যালয়ে অফিস করেন নি। তিনি পূর্বের ভিসির রেখে যাওয়া স্বৈরাচার দোসরের মতালম্বী মানুষ দিয়ে দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাই আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আহবান করে উক্ত রিপোর্টের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।

শাকিলা/সিফাত/