ঢাকা ৯ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

গাজীপুরে পুনরায় নিয়োগের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পিএম
গাজীপুরে পুনরায় নিয়োগের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা পুনরায় চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ছবি : খবরের কাগজ

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে একটি পোশাক কারখানার ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা পুনরায় চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) কোনাবাড়ী বিসিক শিল্পনগরীর রেজাউল অ্যাপারেলস প্রাইভেট লিমিটেড কারখানার ছাঁটাই করা ৮৭ জন শ্রমিক পুনরায় চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে সকাল থেকে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে কারখানার কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে দেয় কর্তৃপক্ষ। 

জানা যায়, কারখানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার ৮৭ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। আজ সকালে কাজে যোগ দিয়ে শ্রমিকরা বিষয়টি জানতে পারেন। এরপরই তারা পুনরায় চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। 

শ্রমিকরা জানান, কিছুদিন আগে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের ছাঁটাই করায় পরিবার নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছিল। ছাঁটাই প্রক্রিয়া অন্যায় এবং শ্রম আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই শ্রমিকরা তাদের পুনর্নিয়োগের দাবিতে কারখানার সামনে স্লোগান দিতে থাকেন।

কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের সব পাওনাদি পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু পুনরায় তাদের নিয়োগের দাবিতে তারা বিক্ষোভ করছেন। যে কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প-পুলিশ-২-এর কোনাবাড়ী জোনের পুলিশ পরিদর্শক মোর্শেদ জামান জানান, সকাল থেকেই ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্রমিকদের সঙ্গে এবং কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেছে শিল্প-পুলিশ। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কারখানা আগামীকালের (বুধবার) জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

যশোরে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ সহায়তায় সভা

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৮ এএম
যশোরে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ সহায়তায় সভা
ছবি: সংগৃহীত

বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যশোরে ক্ষুদ্রঋণ সহায়তা প্রকল্পের অবহিতকরণবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বুধবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষে এ কর্মসূচি হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও প্রকল্প পরিচালক ড. এ টি এম মাহবুব উল করিম।

জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান, যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ অন্যরা।

যশোর ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সহকারী পরিচালক ফসিউল আলমের সঞ্চালনায় সভায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বিদেশফেরত অভিবাসীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহজ শর্তে ঋণদান কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

অর্থের অভাবে অধরা আরিফার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৫ এএম
অর্থের অভাবে অধরা আরিফার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন
সরাকারি মেডিকেলে চান্স পাওয়া আরিফা আক্তার ও তার বাবা-মা। ছবি: খবরের কাগজ

ছোট থেকেই স্বপ্ন পড়াশোনা করে ডাক্তার হবেন, এলাকার গরিব মানুষের সেবা করবেন। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে ধরা দিয়েছে। কিন্তু অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন অধরা হতে চলেছে।

বাবা ভ্যান চালিয়ে আর মা সেলাই মেশিনের কাজ করে কোনো রকম সংসার চালান। বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ও মায়ের সামান্য গয়না বন্ধক রেখে আরিফার মেডিকেলে ভর্তি কোচিংয়ের খরচ চালানো হয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তাদের মেয়ে আরিফা আক্তার শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এ সাফল্যে বাবা-মাসহ পরিবারের সবার মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। তবে চিন্তার ভাঁজ দরিদ্র বাবা-মায়ের কপালে। মেয়েকে আদৌ মেডিকেলে কলেজে ভর্তি করতে পারবেন কি না, জানা নেই তাদের।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের দরিদ্র ভ্যানচালক শেখ আসাদুজ্জামান ও গৃহিণী হামিমা আক্তারের বড় মেয়ে আরিফা আক্তার। ২০২২ সালে বাগেরহাট সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) পাওয়ার পর বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজে ভর্তি হন আরিফা। পরে ২০২৪ সালে এইচএসসিতে ‘এ’ প্লাস (গোল্ডেন) পেয়ে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান তিনি।

এ বিষয়ে আরিফা বলেন, ‘২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া পর্যন্ত আমার সব খরচ বহন করতে মা-বাবার অনেক কষ্ট হয়েছে। দুই লাখ টাকা ঋণ করতে হয়েছে তাদের। আমি কষ্ট করে একটা ভালো মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু মেডিকেলে পড়ার মতো সামর্থ্য নেই।’

বাবা শেখ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমার মেয়ে সরকারি মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু আমার কাছে তো টাকা নেই। কী দিয়ে মেয়েকে পড়াব?’

আরিফার মা হামিমা আক্তার বলেন, ‘স্বামীর আয় ও নিজে সেলাই মেশিনের কাজ করে অনেক সময় না খেয়ে থাকলেও কখনো তার পড়ালেখা বন্ধ করিনি। আরিফা ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যায়। এখন ভর্তির চান্স পেয়েছে। কিন্তু খুশির মাঝেও ভর্তি ও পড়ালেখা নিয়ে চিন্তিত। ভর্তির টাকা জোগান দেওয়া আমাদের পক্ষে কোনোমতেই সম্ভব হচ্ছে না। তাই মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সমাজের বিত্তবান ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

শেরপুরে খামারিরা পান না সরকারি সেবা

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৬ এএম
শেরপুরে খামারিরা পান না সরকারি সেবা
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের আসামপাড়ার খামারি ওমর ফারুক তার গরুর পরিচর্যা করছেন। ছবি: খবরের কাগজ

শেরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের খামারিরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিনামূল্যের চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। সরকারি সেবা পেতে হলে তাদের বাড়তি টাকা গুনতে হয়। বাধ্য হয়ে তারা স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সেবা না পাওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

শুধু তা-ই নয়, সঠিক পরামর্শ ও সহযোগিতার অভাবে অনেক নতুন খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কেউ কেউ আবার খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। রয়েছে ভ্যাকসিনেরও সংকট। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলার আকলিমা খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর সাত ছেলে-মেয়ের সংসারের হাল ধরতে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। সিদ্ধান্ত নেন গবাদিপশু পালন করবেন। পরে গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি লালন-পালন শুরু করেন। ছোট পরিসরে শুরু করলেও আজ তার শতাধিক হাঁস ও কিছু গরু-ছাগল আছে। কিন্তু এই দীর্ঘসময়ে অনেক পশু ও হাঁস-মুরগি অসুস্থ হলে চিকিৎসা করাতে তাকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে। কিন্তু কেন হিমশিম খেয়েছেন আকলিমা, এ বিষয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। 

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার একশর বেশি হাঁস আছে। এগুলোর পাশাপাশি ১০টি ছাগল আর পাঁচটি গরু পালন করি। কিন্তু এগুলো অসুস্থ হলে কখনো সরকারি চিকিৎসা পাইনি। সরকারি ডাক্তার কোনোদিন চোখেও দেখিনি। কোনো পশুর অসুখ হলে অন্তত দুই মাইল রাস্তা হেঁটে বাচ্চারা ওষুধ নিয়ে আসে। বিপদ যেহেতু আমাদের, আমাদেরকেই কিছু করতে হবে।’

শুধু আকলিমা খাতুন তা নয়, জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের প্রান্তিক খামারিদের প্রায় সবারই একই অভিযোগ। খামারিরা জানান, সরকারি সেবা নিতে গেলে তাদের নানা ধরনের হয়রানি পোহাতে হয়। পশু হাসপাতালে ভ্যাকসিনের জন্য গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কোনো সময় ডাক্তারকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি কিংবা খামারে আনতে গেলে বাড়তি টাকা গুনতে হয়। 

ঝিনাইগাতী উপজেলার খামারি জাকির মিয়া বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনগুলো সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না। কিছুদিন আগে পশু চিকিৎসকদের বলছিলাম, আমাদের এলাকায় গরুর বাতনা রোগ বাড়ছে। ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন। পরে ডাক্তাররা বললেন, ১৫ দিন পর ভ্যাকসিন আসবে। এর পর দুই মাসের বেশি সময় হয়েছে, ভ্যাকসিন আর আসেনি। আমাদের গরুগুলো ভ্যাকসিন ছাড়াই থাকল।’

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে এই রোগে আমাদের এলাকায় তিনটি গরু মারা গেছে। যদি ভ্যাকসিনগুলো দিত, তা হলে হয়তো গরুগুলো মারা যেত না।’

রুবেল মিয়া নামে ওই এলাকার আরেক খামারি বলেন, ‘আমাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে সরকারিভাবে কোনো তদারকি করা হয় না। পল্লী চিকিৎসক ছাড়া যদি প্রাণিসম্পদ বা ওই অফিসের কোনো লোকজনকে আমরা আনতে যাই, তাদের বাড়তি টাকা দিতে হয়। কমপক্ষে ১৫০০, কখনো তিন হাজার টাকাও দিতে হয়। তারা এসে বলেন, আমরা সরকারি ডাক্তার। তাই এভাবেই দিতে হবে।’

শ্রীবরদী উপজেলার খামারি আবু মিয়া বলেন, ‘আমরা গ্রাম্য মানুষ। সাধারণত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল লালন-পালন করি। কিন্তু এগুলো অসুস্থ হলে আমরা সরকারি কোনো ডাক্তার পাই না। সরকারিভাবে কোনো সহায়তাও পাই না। অসুস্থ হলে স্থানীয় বাজারের পল্লী চিকিৎসকের কাছেই যেতে হয়।’

শ্রীবরদী উপজেলার হারিয়াকোনা এলাকার খামারি রহমান মিয়া বলেন, ‘আমার একটি মুরগির খামার ছিল। সেখানে কয়েক প্রজাতির মুরগি পালন করেছি। কিন্তু ভ্যাকসিন নিতে না পারায় অনেক মুরগি মারা যায়। এর কিছুদিন পর খামারটি বন্ধ করে দিয়েছি।’ 

খামারি আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘আমার খামার থেকে প্রাণিসম্পদ অফিস ১৪ কিলোমিটার দূরে। ভেবে দেখুন, অসুস্থ গরু নিয়ে ওই অফিসে যেতে আমার কত টাকা ভাড়া লাগবে? আমার মতো ছোট খামারির পক্ষে এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয়।’ 

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ বলেন, ‘কোনো ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়েও যদি পশু অসুস্থ হয়, তা হলে আমাদের ভেটেরিনারি টিম যেতে বাধ্য। আমার এমনই নির্দেশনা দেওয়া আছে। বিশেষ করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফিল্ডে যদি নাও যান, ভেটেরিনারি সার্জন অবশ্যই ফিল্ডে যাবেন। জনগণের জন্য ভেটেরিনারি সার্জন সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবেন। সেটা হোক অফিস কিংবা বাইরে। ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যা যেন না হয়, সে জন্য আমি প্রতিটি উপজেলায় দিকনির্দেশনা দিয়েছি।’

বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫০, ১৪৪ ধারা জারি

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫০, ১৪৪ ধারা জারি
ছবি: খবরের কাগজ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য ও পথচারীসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। 

এদিকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনিদিষ্ট সময়ের জন্য সমাবেশ ও আলোচনাস্থলসহ পুরো পৌর এলাকাকে এ নির্দেশনার আওতায় আনা হয়েছে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল থেকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানা গেছে, ২২ জানুয়ারি বিকেলে শ্যামনগর সদরের এম এম প্লাজার পাশে কৃষক দলের কার্যালয়ের সামনে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আনন্দ মিছিলের সঙ্গে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপির একাংশ। অন্যদিকে দলটির আরেক অংশ একই সময়ে ওই স্থানে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়নি। উভয় পক্ষ একই স্থানে ও একই সময়ে সম্মেলন কিংবা আলোচনা সভা আয়োজন করলে ওই স্থান ও আশপাশের সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তাই শ্যামনগর পৌরসভা এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. রনী খাতুন ১৪৪ ধারা জারি করেন।

সংঘর্ষে আহতরা

বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জানুয়ারি রাতে দীর্ঘ ১৪ বছর পর উপজেলা বিএনপির ৪৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া শ্যামনগর পৌরসভা বিএনপির ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। এই কমিটি গঠনের পর থেকে শ্যামনগরে কমিটির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মিছিল সমাবেশ করে আসছে দলটির নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে উপজেলায় বিএনপির উভয়দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর মধ্যেই মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) উপজেলার পূর্ববর্তী ও নতুন ঘোষিত উভয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুল আলীম।

পরে বুধবার শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয় উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক সোলাইমান কবিরের গ্রুপ। অন্যদিকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের ঘোষণা দেয় সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদের গ্রুপ। এই কর্মসূচি ঘিরে পৌর এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 

একপর্যায়ে বংশপুর এবং ঈশ্বরীপুর এলাকা থেকে সোলায়মান কবীর গ্রুপের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে এলাকায় ফেরার পথে ইসমাইলপুর এলাকায় পৌঁছালে আশেক এলাহী মুন্নার বাড়ি থেকে ওই মিছিলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য সাইফুল ইসলাম, পথচারীসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি নিয়ে শ্যামনগরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে সোলাইমান কবির জানান, তার গ্রুপের ১০-২০ জন আহত হয়েছে। বর্তমানে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত। চিকিৎসা পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সবকিছু প্রশাসনের উপস্থিতিতে ঘটেছে। তবে প্রশাসন সে অর্থে সহায়তা করেনি। 

উপজেলা বিএনপির অপর গ্রুপের নেতা আশেক এলাহী মুন্নার স্ত্রী নুরজাহান পারভীন মুন্না বলেন, তাদের গ্রুপের ২০-২৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। রাজনৈতিক দলের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শ্যামনগর পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

জাকির/মাহফুজ/সালমান/ 

 

স্ত্রীর কাছে যৌতুক না পেয়ে শ্যালকের বউ নিয়ে উধাও প্রবাসী!

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০২ পিএম
স্ত্রীর কাছে যৌতুক না পেয়ে শ্যালকের বউ নিয়ে উধাও প্রবাসী!
নাজমুল সরদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া আরলী জোয়াদ্দার (বামে) ,বাবুল হোসেন মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের নগরকান্দায় স্ত্রীর কাছে যৌতুক না পেয়ে শ্যালকের বউ ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবুল হোসেন মোল্লা নামের এক জার্মান প্রবাসীর বিরুদ্ধে।

অভিযোগ উঠেছে জার্মান প্রবাসী বাবুল হোসেন তার প্রথম স্ত্রী তাহেরা ওয়াজেদ তুহিনের কাছে ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করায়, স্ত্রীর চাচাতো ভাই নগরকান্দা উপজেলার বিলগোবিন্দপুর গ্রামের নাজমুল সরদারের স্ত্রী সাদিয়া আরলী জোয়াদ্দারকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন বাবুল হোসেন। 

এ ঘটনায় বাবুলের প্রথম স্ত্রী ভুক্তভোগী তাহেরা ওয়াজেদ তুহিনের বড়ভাই সরদার সাইফুজ্জামান বুলবুল বাদী হয়ে ফরিদপুর আদালতে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের বিলগোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহেদ সরদারের মেয়ে তাহেরা ওয়াজেদ তুহিনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের খালিশপট্টি গ্রামের মৃত আবু হানিফ মোল্লার ছেলে জার্মান প্রবাসী মো. বাবুল হোসেন মোল্লার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবুল হোসেন মোল্লা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়। বেশ কয়েক বছর ধরে আমার প্রথম স্ত্রী তাহেরা ওয়াজেদ তুহিনের সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি হচ্ছিল। আমি আমার প্রথম স্ত্রীকে আইন সম্মতভাবে তালাক দিয়ে সাদিয়াকে বিবাহ করেছি।

সঞ্জিব দাস/মাহফুজ